আসছে শীত, কুয়াশা শরীরের কি হাল করে জানেন?
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
শীতের আগে ভোরের কলকাতা যখন কুয়াশাময়। তখন ভুলেও যেন বাড়ির বাইরে পা রাখবেন না। রেখেছেন তো মরেছেন! একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে কলকাতার মতো বায়ু দূষণের ঘেরাটোপে থাকা শহরে যদি কেউ কুয়াশার মধ্যে অনেকটা সময় কাটান, তাহলে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি হয়। বিশেষত ফুসফুসের। শুধু তাই নয়, ধীরে ধীরে একাধিক মারণ রোগও ঘারে চেপে বসে। প্রসঙ্গত, বড়দের থেকেও বাচ্চাদের শরীরের উপর কুয়াশের প্রভাব বেজায় ভয়ঙ্কর হয়। তাই তো এমন সময় বাচ্চাদের অতিরিক্ত সাবধানে রাখতে হবে।
কুয়াশা কী?
বায়ু দূষণের সঙ্গে ডাস্ট পার্টিকাল এবং আরও নানাসব ক্ষতিকারক উপাদান মিশে তৈরি হওয়া ঝাপসা গ্যাসিও পর্দার মতো আবরণকেই আমরা সহজ ভাষায় কুয়াশা বলে থাকি। এমন পরিবেশে শ্বাস নিলে শরীরের অন্দরে ক্ষতিকর উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেহের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এক্ষেত্রে যে যে শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেগুলি হল…
১. অ্যাস্থেমা: কয়েক মাস আগে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এমনটা দাবি করা হয়েছিল যে বায়ু দূষণের দিক থেকে আমাদের শহর কলকাতা দেশের বাকি সব মেট্রোপলিটন শহরকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। এমন পরিস্থিতি কুয়াশার মাত্রা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এমন দূষিত কুয়াশার মধ্যে সময় কাটালে স্বাভাবিকভাবেই ফুসফুসের অন্দরে দূষিত বায়ু ভরে যায়। ফলে অ্যাস্থেমার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়া আশঙ্কা বাড়ে।
২. ক্রণিক ব্রঙ্কাইটিস: কুয়াশার প্রভাবে সাধারণত যে যে রোগগুলি বেশি মাত্রায় মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল ব্রঙ্কাইটিস। এক্ষেত্রেও ডাস্ট পার্টিকাল এবং দূষিত বায়ু ফুসফসুকে কমজোরি করে দিয়ে এমনসব রোগের পথকে প্রশস্থ করে। সেই কারণেই তো বাচ্চা এবং বয়স্কদের কুয়াশার মধ্যে বেরতে মানা করেন চিকিৎসকেরা।
৩. লাং প্রবলেম: একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে কুয়াশার কারণে সারা দেহের মধ্যে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় ফুসফুসই। ফলে শ্বাস কষ্টের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে। সেই কারণেই তো শীতকালে খুব সকালে কুয়াশার মধ্যে মনিং ওয়াক করতে মানা করা হয়ে থাকে।
৪. হার্ট এবং ব্রেনের মারাত্মক ক্ষতি হয়: কুয়াশা তৈরির পিছনে যে যে ক্ষতিকর গ্যাসের ভূমিকা থাকে, তার মধ্যে অন্যতম হল কার্বন মনোক্সাইড। এই গ্যাসটি শ্বাস নেওয়ার সময় একবার যদি শরীরে প্রবেশ করে যায় তাহলেই বিপদ! কারণ কার্বন মনোক্সাইড মস্তিষ্কে এবং হার্টে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছাতে দেয় না। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ দুটি অঙ্গ ধীরে ধীরে বিকল হয়ে যেতে শুরু করে।
৫. ওজন গ্যাসের মার থেকে বাঁচাও সম্ভব হয় না: কুয়াশার মধ্যে সবথেকে বেশি পরিমাণে থাকে এই গ্যাসটি, যা শরীরে প্রবেশ করার পর ফুসফুসের টিস্যুদের দুর্বল করে দিতে থাকে। সেই সঙ্গে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা মারাত্মক কমিয়ে দেয়। ফলে নানাবিধ ক্রমিক রেসপিরেটরি প্রবলেমে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
৬. হাঁচি-কাশি বেড়ে যায়: যে যে উপাদান দিয়ে কুয়াশা তৈরি হয়, সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল মাইক্রোস্কোপিক পার্টিকল বা ধুলো। এই ধুলো শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে থাকলে স্বাভাবিকভাবেই হাঁচি-কাশির প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশানের ভয়ও থাকে।