এনার শখ পাল্টে গেল সাড়ে তিন হাজার মোবাইলের নেশায়
কলকাতা টাইমস :
স্মার্টফোন উদ্ভাবনের আগে মানুষ তার প্রয়োজনের তাগিদে একটি বা ক্ষেত্রবিশেষে দুইটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতো। তবে স্মার্টফোন উদ্ভাবনের পর একজন মানুষের কাছে দুটি মোবাইল সেট থাকার প্রয়োজনীয়তা আর নেই বললেই চলে। কারণ একটি স্মার্টফোন দিয়েই এখন নিত্য দিনের সকল প্রয়োজনীয়তা মেটানো সম্ভব।
কিন্তু এই স্মার্টফোনের জামানায় যদি একজন মানুষের কাছে ১২৩১ ভিন্ন ভিন্ন মডেলের সাড়ে তিন হাজার মোবাইল ফোনের সংগ্রহ থাকে, তাহলে সেটা অবাক করার মতো বিষয় বটে। আর এই অবাক করার মতো কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন স্লোভাকিয়ার নাগরিক স্টিফেন পোলগারি।
স্লোভাকিয়ার ছোট্ট শহর দোবসিনায় বাস করেন ২৬ বছর বয়সি পোলগারি। ছোট বেলা থেকেই সে ছিল টেক হেডেড অর্থাৎ যাকে বলে একেবারেই প্রযুক্তি অন্তপ্রাণ এক বালক। তবে বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্যের মধ্যে মোবাইল ফোনের প্রতি দুর্বলতা একটু বেশিই ছিল তার। পনের বছর বয়স থেকে সে নিয়মিত ইন্টারনেটে নতুন নতুন মোবাইল ফোনের ইউজার রিভিউ (ব্যবহারকারীদের মতামত) দেখতো। এই দেখা থেকেই তার মনের মধ্যে পুরাতন মোবাইল ফোন সংগ্রহের শখ জাগতে শুরু করে। কিছু দিনের চেষ্টায় সে সংগ্রহ করে ফেলে নকিয়া, অ্যালকাটেল, সাজেম, এরিকসনের মতো ব্র্যান্ডের বেশ কিছু পুরাতন ফোন।
এর কিছুদিন বাদে তার সামনে আসে এক দারুণ সুযোগ। তারই মতো এক শখের মোবাইল ফোন সংগ্রহকারী তার ১ হাজার ফোনের সংগ্রহশালাটি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। সুযোগটি হাত ছাড়া করেননি পোলগারি। ল্প কয়েক ইউরো খরচ করেই কিনে নেন ১ হাজার মোবাইল ফোন।
কিন্তু এই সংগ্রহেও যেন মন ভরছিল না পোলগারির। কারণ তত দিনে তার শখ যে নেশায় পরিণত হয়েছে। তাছাড়া আরো কিছু ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন তখনো সংগ্রহ করা হয়ে ওঠেনি। দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ শুরু করেন তিনি।
এভাবে গত দশ বছরের প্রচেষ্টায় তিনি গড়ে তুলেছেন সাড়ে তিন হাজার মোবাইল ফোনের এক বিশাল সংগ্রহশালা। সারা বিশ্ব সাড়া জাগানো সকল ফোনই আছে পোলগিরির এই সংগ্রহশালায়। বর্তমানে তার সংগ্রহে রয়েছে ১৪টি ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন।
নিজের এই ভিন্নধর্মী শখ সম্পর্কে পোলগারি বলেন, ‘গত দুই দশকে মোবাইল প্রযুক্তি কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে সে বিষয়ে আমার ব্যাপক আগ্রহ ছিল। এ আগ্রহ থেকেই আমার শখের এই সংগ্রহশালাটি গড়ে তুলেছি।’
তবে নিজের এই বিশাল সংগ্রহশালাটি পোলগারি শুধুমাত্র আর নিজের জন্য সীমাবদ্ধ রাখতে চাননা। তিনি তা উন্মুক্ত করে দিতে চান সকলের জন্য। এ লক্ষ্যে তিনি একটি মোবাইল ফোন জাদুঘর গড়ে তুলতে চান। ইতিমধ্যে জাদুঘর তৈরির জন্য সনদপত্র পেয়ে গেছেন। পোলগারি তার এই জাদুঘর সম্পর্কে বলেন, ‘আমার এই জাদুঘর ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিবে কীভাবে গত কয়েক দশকে মোবাইল অ্যানালগ থেকে বহুমুখী ব্যবহার সুবিধা সম্পন্ন স্মার্টফোনে রূপান্তরিত হয়েছে।’