আত্মঘাতি নয়, আর্জেন্টিনায় পালিয়ে গিয়েছিলেন হিটলার!
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর কাছে নাত্সীবাহিনীর শোচনীয় পরাজয়ের পর আত্মঘাতী হন অ্যাডল্ফ হিটলার। ১৯৪৫ সালের ৩০ এপ্রিল একটি ভূগর্ভস্থ বাঙ্কারে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি। সায়নায়েড খেয়ে তার সঙ্গেই আত্মঘাতী হন তার স্ত্রী ইভা ব্রাউন। তারপর তাদের দেহ বাঙ্কার থেকে বের করে এনে কবর দেন তার কর্মীরা। এতদিন পর্যন্ত এই ইতিহাসই জেনে এসেছে সারা বিশ্ব।
এবার সেই জ্ঞানে চরম ধাক্কা দিয়ে ইতিহাসবিদ আবেল বাস্তি স্পুটনিক নিউজকে জানিয়েছেন, ‘হিটলার কিছুতেই সোভিয়েত ইউনিয়নের হাতে ধরা দেবেন না, তিনি পালিয়ে যাবেন। এটাই আমেরিকার সঙ্গে তার চুক্তি হয়েছিল। পাশাপাশি অনেক বৈজ্ঞানিক, সেনা জওয়ান ও স্পাই তার সঙ্গে পালাবেন বলে ঠিক হয়।’হিটলারের নির্বাসন নিয়ে বাস্তির লেখা বই El Exilio De Hitler-এর নয়া সংস্করণ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আর্জেন্টিনায়। এই ইতিহাসবিদ মনে করেন, বার্লিনের সেই ঐতিহাসিক বাঙ্কার থেকে সুড়ঙ্গপথে গোপনে টেম্পেলহফ বিমানবন্দরে পৌঁছেন হিটলার। সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছিল একটি নৌকা। তাতে চড়ে তিনি চলে যান আর্জেন্টিনা।
সেখানে প্রায় এক দশক থাকার পর প্যারাগুয়েতে যান স্বৈরতন্ত্রী এই শাসক। সেখানকার প্রেসিডেন্ট অ্যালফ্রেডো স্ট্রোসনার ছিলেন জার্মান বংশোদ্ভূত। তিনিই নিরাপদ আশ্রয় দেন হিটলারকে। সেখানেই ১৯৭১ সালে তার মৃত্যু হয় বলে মত বাস্তির।
বাস্তির মতকে সত্যি বলে দাবি করেছেন প্রবীণ CIA এজেন্ট বব বেয়ার। হিটলার যে পালিয়ে গিয়েছিলেন ও আত্মহত্যার নাটক করেছিলেন তার প্রমাণও তার কাছে আছে বলে দাবি করেছেন তিনি। জানুয়ারি মাসে একটি হিস্ট্রি চ্যানেলে তিনি ও তার দল হিটলারকে নিয়ে প্রকাশ হওয়া ৭০০ পাতার তথ্যসমৃদ্ধ ফাইল পর্যালোচনা করেছিলেন। প্রকাশিত তথ্যেরই একটি অংশে লেখা ছিল, ‘জার্মানিতে আমেরিকার আধিকারিকরা হিটলারের দেহ খুঁজে পাননি। এমনকী কোনও বিশ্বস্ত সূত্রও দাবি করতে পারেনি যে হিটলারের মৃত্যু হয়েছে।’
হিটলারের মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ পায় ২০০৯ সালেই। আমেরিকান গবেষকরা সেই সময় দাবি করেছিলেন, যে করোটির অংশটি হিটলারের বলে মনে করা হয়, তার ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে, সেটি কোনও অজ্ঞাতপরিচয় মহিলার করোটি। মনে করা হয়, বুলেটে ছিন্নভিন্ন করোটির সেই অংশটি হিটলারের বাঙ্কার থেকে উদ্ধার করেছিলেন রাশিয়ানরা। ২০০০ সালে মস্কোতে সেটি প্রকাশ্যে আনা হয়। হিটলারের আত্মহত্যার প্রমাণ হিসেবে সেটিকে সর্বসমক্ষে তুলে ধরা হয়। হিটলারের জীবনী লেখক ওয়ার্নার মেসারও ওই অংশটি হিটলারের নয় বলে দাবি করেছিলেন।