ফের হাসপাতাল ফেরানোর বলি অসুস্থ যুবক, রাস্তায় ৫ ঘন্টা পড়ে থেকে মৃত্যু
কলকাতা টাইমস :
বিনা চিকিৎসায় রাস্তায় পড়ে থেকে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হল। রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসার পথে অনেকেই দেখলেন, কিন্তু কেউ কোনওরকম ব্যবস্থা নিলেন না। এই নিদারুণ ঘটনার সাক্ষী রইল মেদিনীপুর শহর। অভিযোগ, বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাসপাতালেই যাচ্ছিলেন ওই যুবক। কিন্তু যাত্রাপথে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মাঝরাস্তাতেই তাঁকে নামিয়ে দেন বাসের কন্ডাক্টর ও চালক।
এরপর এক রিকশাচালক ওই অবস্থাতেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেই মুমূর্ষু ব্যক্তির সঙ্গে না ছিল বাড়ির লোক, না ছিল সঠিক পরিচয়পত্র। তাই অসুস্থ দেখেও চিকিৎসা না করে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপর প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে বিনা চিকিৎসাতেই রাস্তায় পড়েছিলেন ওই ব্যক্তি। অবশেষে দুপুরে মহকুমাশাসক ও স্থানীয় পুলিশ কর্মীদের সহায়তায় সেই অসুস্থ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পর মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনার জেরে হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সূত্রের খবর, চিকিৎসা করাতে গড়বেতা থানার পানিকোটর এলাকা থেকে মেদিনীপুর আসছিলেন ধনঞ্জয় দে (৩৭) নামের ওই যুবক। মাঝপথে বাসেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ, এরপরই মেদিনীপুরের এলআইসি মোড়ে ধনঞ্জয়কে বাস থেকে একপ্রকার জোর করেই নামিয়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এরপর সেখানকার এক রিকশাচালককে ২০ টাকা দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন তিনি। এরপর রিকশা করে হাসপাতালেও যান। কিন্তু তাঁর কোনও পরিচয়পত্র সঙ্গে ছিল না, আবার বাড়ির লোকজনও না থাকায় তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর ওই রিকশাচালক ফের ধনঞ্জয়কে এলআইসি মোড়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
এই এলআইসি মোড়ে এসেই রাস্তার ধারে প্রায় পাঁচঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় পড়েছিলেন ধনঞ্জয়। দুপুর একটা নাগাদ মেদিনীপুর শহরের মহকুমাশাসক কৌশিক চট্টোপাধ্যায় ওই এলাকা দিয়েই যাচ্ছিলেন। তিনিই সেই ব্যক্তিকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে গাড়ি থামিয়ে ট্রাফিক পুলিশ ডাকেন। এরপর সেই অসুস্থ যুবককে হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ! মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।