শেষ সময়ে সামনে এনাকে দেখে মানুষ কি ভাবে জানেন ? গবেষণা যা বলছে..
কলকাতা টাইমস :
মৃত্যু যখন সামনে এসে দাঁড়ায়, মানুষের মনে কেমন ভাবনা থাকে? মৃত্যু মানে সব শেষ। এতদিন কার জমানো যা কিছু, সব ফেলে একেবারে নিঃস্ব হয়ে চলে যাওয়া। ফলে আক্ষেপ জন্মাবে, এটা মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
সাহিত্যের পঙক্তিতে অমর হয়ে আছে এই অমোঘ প্রশ্ন, ‘জীবন এত ছোট কেনে?’ কিন্তু সত্যিই যখন মৃত্যুর সামনে এসে দাঁড়ায় মানুষ, এই ভাবনাই কি এসে ভিড় জমায় মনের মধ্যে? নাকি সে অন্য কিছু ভাবে? সম্প্রতি এ বিষয়ে গবেষণার যে ফল সামনে এসেছে, তাতে কিন্তু অন্য ছবি উঠে আসছে।
ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলিনার মনোবিজ্ঞানী কার্ট গ্রে আরও কয়েকজন বিজ্ঞানীর সঙ্গে মিলে এ ব্যাপারে গবেষণা করে যা জানতে পেরেছেন, তা সত্যিই বিস্ময়কর। ‘সাইকোলজিক্যাল সায়েন্স’নামের এক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্র।
নিজেদের গবেষণা নিয়ে বলতে গিয়ে কার্ট বলেছেন, ‘মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের অনুভূতি কেমন হবে, এ নিয়ে ভাবতে গেলেই আমাদের মনের ভিতরে ভিড় করে দুঃখ আর ভয়। কিন্তু ঘটনা হল, মৃত্যু আসন্ন— এমতাবস্থায় মানুষ মোটেই অত ভীত ও দুঃখিত থাকে না। বরং তার মধ্যে ক্রমে এক সুখবোধ জন্ম নিতে থাকে।’
এ নিয়ে খুঁটিয়ে গবেষণা করেছেন কার্ট ও তাঁর সঙ্গীরা। ক্যান্সার বা অন্য মারণ রোগে আক্রান্তদের মৃত্যুর ঠিক আগে লিখে যাওয়া ব্লগ বা মৃত্যুর সামনে থাকা মানুষদের মুখের কথা নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি তাঁরা মৃত্যু আসন্ন কল্পনা করে সুস্থ মানুষদের সেই অনুভূতির কথাও লিখতে বলেন।
দেখা যায়, কাল্পনিক মৃত্যুর কথার ভিতরে যতটা ভয় বা শোক স্থান পেয়েছে সত্যিকারের মৃত্যুমুখী মানুষদের ভিতরে তেমন মনোভাব নেই। আশ্চর্যজনক ভাবে মৃত্যুর সামনে তাঁরা অনেক বেশি পজিটিভ থাকেন। এমনকী মৃত্যুদণ্ডের সামনে থাকা মানুষও নিজের মতো করে সেই মৃত্যুকে মেনে নিয়েছেন, এমন প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে।
কার্ট বলেছেন, ‘আমাদের এই পরীক্ষার ফল থেকে এমনটাই ধারণা করা যায়, মৃত্যুর সামনে মানুষ যতটা ভীত থাকে বলে আমরা ভেবে থাকি, বাস্তবটা আসলে তেমন নয়।’