আপনার বন্ধু ক’জন? সেই সংখ্যাই আপনাকে করবে রোগ মুক্ত!
একেবারে ঠিক শুনেছেন। আসলে বন্ধুত্বের সম্পর্ক নানাভাবে আমাদের শরীর এবং মনের ওপর প্রভাব ফেলে থাকে। যেমন ধরুন…
১. আয়ু বৃদ্ধি পায়
এক গবেষণাপত্র অনুসারে যে মানুষের বন্ধুর সংখ্যা যত বেশি, সে তত বেশি দিন বাঁচে। আর যাদের সোশাল লাইফ বলতে কিছুই নেই, তাদের সময়ের আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আসলে বন্ধু মানে তো শুধু একটা মানুষ নয়, বৃহৎ সমাজের একটা শক্তিশালী অংশ। তাই তো বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর সময় আমাদের সঙ্গে সমাজের সম্পর্কের উন্নতি ঘটে। ফলে স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের মতো রোগের প্রকোপ কমতে শুরু করে। আর একবার এমনটা হলে স্বাভাবিক ভাবেই আয়ু বৃদ্ধি পায়। কারণ গত এক দশকে যে যে রোগ বেশিসংখ্যক অল্প বয়সীদের প্রাণ কেড়েছে, তার প্রায় সবক’টির সঙ্গেই স্ট্রেসের সরাসরি যোগ রয়েছে।
২. শরীর আরও বেশি কর্মক্ষম হয়ে ওঠে
গত দুই দশকে সারা বিশ্বজুড়ে হওয়া চারটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা বন্ধুদের সঙ্গে প্রায়শই আড্ডা দিয়ে থাকে তাদের ব্লাড প্রেসার, অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা এবং হার্ট ডিজিজের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা চোখে পড়ার মতো কমে যায়। অন্যদিকে, বন্ধুহীন মানুষদের অবস্থা কী হয়, তা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে একদল গবেষক ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সে বলেছিলেন, বন্ধুত্বের পরশ যাদের গায়ে লাগে না, সাধারণ মানুষদের তুলনায় তাদের ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস এবং হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এবার বুঝেছেন তো জীবনে বন্ধুর গুরুত্ব কতটা!
৩. মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
জার্নাল অব নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি অ্যান্ড সাইকিয়াট্রি-তে প্রকাশিত বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে একাকিত্বের সঙ্গে ডিমেনশিয়ার মতো রোগের সরাসরি যোগ রয়েছে। দেখা গেছে যেসব মানুষদের সঙ্গে বন্ধুদের সেভাবে যোগাযোগ হয় না, তারা এতটাই একা অনুভব করতে থাকেন যে ব্রেন সেলগুলি শুকাতে শুরু করে। ফলে প্রথমে মনোযোগ হ্রাস দিয়ে শুরু হয়ে শেষে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে থাকে। আর যারা প্রতিনিয়ত বন্ধুদের মাঝে থাকে, তাদের কী হয়? তাদের ক্ষেত্রে একেবারে উল্টো ঘটনা ঘটে। এ ক্ষেত্রে ব্রেন সেলেগুলির কর্মক্ষমতা বাড়ার কারণে শুধু স্মৃতিশক্তির উন্নতি হয়, তা নয়। বরং সেই সঙ্গে বুদ্ধি এবং মনোযোগেরও উন্নতি ঘটে।
৪. ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা কম থাকে
২০০৭ সালে হওয়া একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল বন্ধুদের দলে কোনো একজন যদি মোটা হয়ে পড়ে, তাহলে কোনো এক অজানা কারণে বাকিদের ওপরও তার প্রভাব পড়ে। একই ঘটনা ঘটে যখন কোনো বন্ধু জিমে জয়েন করে, তখন তার দেখাদেখি বাকি বন্ধুরাও তার লেজুড় হয়। এমনটা কেন হয় জানেন? একে বলে ‘পিয়ার প্রেসার’। সহজ কথায় বন্ধুত্বের সম্পর্ক যেমন আমাদের ভালো কাজ করতে প্রভাবিত করে, তেমনি খারাপ কাজেও ইন্ধন যোগায়। তাই তো চিকিৎসকরা এমন মানুষদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে বলেন যারা স্বাস্থ্য সচেতন। এবার নিশ্চয় বুঝেছেন বন্ধুত্বের সঙ্গে ওজন কমার কী সম্পর্ক আছে।
৫. খারাপ সময় সহজেই কেটে যায়
ব্রেকআপ হোক কি অন্য কোনো কারণে মন খারাপ। বন্ধু পাশে থাকলে নো চিন্তা! কারণ বন্ধুদের বোঝানোর মধ্যে অজব এক শক্তি থাকে, যা মন খারাপের মেঘকে নিমেষে সরিয়ে দিয়ে আশার আলো নিয়ে আসে। কি তাই না!