বাঁচতে চাইলে ভুলেও উত্তর দিকে মাথা নয়
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, কী ধরনের এনার্জি আমাদের শরীরে প্রবেশ করবে এবং তার প্রভাবে দেহের অন্দরে কেমন পরিবর্তন হবে, তা অনেকাংশে নির্ভর করে কোন দিকে মাথা করে শোয়া হচ্ছে তার উপর। প্রসঙ্গত, আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে পূর্ব এবং দক্ষিণ দিকে মাথা করে শুলে শরীরের উপকার হয়, সেই সঙ্গে একাধিক রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়। শোয়ার পজিশনের সঙ্গে শরীরের ভাল-মন্দের যে সরাসরি যোগ রয়েছে সে বিষয়ে মান্যতা দিয়েছে আধুনিক বিজ্ঞানও। আসলে উত্তর দিকে মাথা করে না শুলে ম্যাগনেটিক পোলের প্রভাবে আমাদের মস্তিষ্কের উপর কুপ্রভাব পরে। ফলে একাধিক রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়। প্রসঙ্গত, বেশ কিছু গবেষণাতেও এমনটা লক্ষ করা গেছে যে আমাদের রক্তে উপস্থিত আয়রনের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পরে যদি না আমরা উত্তর দিকে মাথা করে ঘুমাই। সেই সঙ্গে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটার মতো সমস্যাও মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।
উত্তর দিকে মাথা করে শুলে কী কী সমস্যা দেখা দেয়? একথা নিশ্চয় সবাই জানেন যে পৃথিবীর অন্দরে সুবিশাল একটা চুম্বক রয়েছে। যাকে ম্যাগনেটিক পোল বলা হয়। উত্তর দিকে রয়েছে “পজিটিভ পোল” এবং দক্ষিণ দিকে রয়েছে “নেগেটিভ পোল”। একইভাবে মানুষের মস্তিষ্কের দিকে রয়েছে পজেটিভ পোল এবং পায়ে রেয়েছে নেগেটিভ পোল। সেই সঙ্গে রক্তে রয়েছে আয়রন বা সহজ কথায় লোহা। আর চুম্বকের শক্তি যেখানে বেশি থাকবে সেদিকেই লোহা সেদিকেই ধাবিত হবে। সেই কারণেই তো উত্তর দিকে শোয়ার সঙ্গে আমাদের শরীরের ভাল থাকা বা মন্দ থাকার এতটা গভীর সম্পর্ক।
বিজ্ঞানিরা লক্ষ করে দেখেছেন শোয়ার সময় আমাদের ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিক নিয়মেই কমে যায়। কারণ এমনটা না হলে শুয়ে থাকাকালীন মস্তিষ্কে বেশি মাত্রায় রক্ত প্রবাহ হতে থাকবে। ফলে এক সময় গিয়ে ব্রেন টিস্যুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে। এই একই কারণে উত্তর দিকে মাথা করে শুতে মানা করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ উত্তর দিকে ম্যাগনেটিক পোলের প্রভাব বেশি থাকে। ফলে ওই দিকে মাথা করে শুলে রক্তে উপস্থিত লোহা বেশি বেশি করে উত্তর দিকে ধাবিত হয়। ফলে মস্তিষ্কে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে রক্তে পৌঁছে যেতে শুরু করে। আর এমনটা হলে কী হতে পারে তা নিশ্চয় এখন আর করাও অজানা নেই। সেই কারমেই তো বয়স্ক এবং বাচ্চাদের তো ভুলেও উত্তর দিকে মাথা করে শায়ানো উচিত নয়। কারণ তাদের ব্রেন টিস্যু খুব দুর্বল হয়।
ফলে টিস্যু ফোটে গিয়ে ব্রেম হেমারেজ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এখানেই শেষ নয়, দিনের পর দিন উত্তর দিকে মাথা করে শুলে ব্রেন পাওয়ারও মারাত্মকভাবে কমে যায়। সেই সঙ্গে বেশ কিছু হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো না হওয়ার কারণে মেজাজও খিটখিটে হতে শুরু করে। মাত্র কয়েকটি উপকরণ দিয়ে বানিয়ে ফেলুন সুস্বাদু কাঁঠালের পায়েস, রইল রেসিপি শরীরের কর্মক্ষমতা কমে যায়: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে উত্তর দিকে মাথা করে শুলে আমাদের দেহের পজিটিভ পোল এবং পৃথিবীর পজিটিভ পোলের ধাক্কা লাগার কারণে শরীরের কর্মক্ষমতা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায়। সেই সঙ্গে মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতাতেও প্রভাব পরে। কম বয়সেই ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে গিয়েছে?
জেনে নিন বলিরেখা দূর করার ৫ উপায় “রুল অব ম্যাগনেটিজম”:
বিজ্ঞান বলে দক্ষিণ মেরু হল পজেটিভ এনার্জির সোর্স, আর উত্তর মেরু হল নেগেটিভ এনার্জির। তাই তো উত্তর দিকে মাথা করে শুলে দেহে নেগেটিভ এনার্জির প্রভাব বাড়তে শুরু করে। ফলে শরীর এবং মস্তিষ্ক, উভয়ের উপরই খারাপ প্রভাব পরে।
তাহলে কোন দিকে মাথা করে শোয়া স্বাস্থ্যসম্মত:
পূর্বদিকে মাথা করে শোয়া শরীরের পক্ষে সবথেকে উপকারি। কিন্তু এমনটা করা যদি একান্তই সম্ভব না হয়, তাহলে উত্তর-পূর্ব অথবা পশ্ছিম দিকেও মাথা করে গুমতে পারেন। কিন্তু ভুলেও উত্তর দিকে মাথা করে শোয়া চলবে না। তবে এ প্রসঙ্গে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে। যতদিন উত্তর গোলার্ধে রয়েছেন, ততদিন এই নিয়ম মানতে হবে। কিন্তু যখনই দক্ষিণ গোলার্ধে বসবাস শুরু করবেন , তখন কিন্তু শোয়ার নিয়ম পাল্টে যাবে। সে সময় দক্ষিণ দিকে মাথা করে শোয়া চলবে না। আসলে পৃথিবীর ম্যাগনেটিক ফিল্ডের কোনও দিকে আপনি রয়েছেন তার উপর শোয়ার দিক নির্ভর করে থাকে।
ঘুম থেকে ওঠার পরের নিয়ম: শোয়ার সময় যেমন কিছু নিয়ম মেন চলা উচিত, তেমনি সুস্থ থাকতে ঘুম থেকে ওঠার পরেও বেশি কিছু নিয়ম মানতে হবে। যেমন ধরুন, চোখ খোলর পর হঠাৎ করেই উঠে পরবেন না। পরিবর্তে ডান দিকে ফিরে ধীরে ধীরে উঠে বসবেন। উঠে বসার পর হাতের তালু দুটো ঘষে নিয়ে চোখের উপর রাখবেন। এমনটা করলে সঙ্গে সঙ্গে নার্ভেরা অ্যাকটিভ হয়ে যায়। ফলে প্রতিটি অঙ্গ চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
সবশেষে একটু হাসতে ভুলবেন না যেন। মানে ঘুম থেকে উঠে হাসতে হবে কেন? কারণ এমন অনেকে আছেন যারা শেষ রাত্রিরে শুতে গিয়ে আর ঘুম থেকে ওঠেননি। আপনি আরও একটা সুন্দর দিন উপভোগ করার সুযোগ পেলেন। তাই সেই খুশিতে একটু না হয় হেসেই নিলেন। এমনটা করলে দেখবেন সকাল সকাল মন মেজাজ খুব ভাল হয়ে যাবে।
ডান দিকে ফিরে উঠলে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের শরীর সচলতা ফিরে পায় না। সে সময় বাকি অঙ্গ-প্রত্য়ঙ্গরাও বেশ ইন-অ্যাকটিভ অবস্থায় থাকে। ফলে হঠাৎ করে উঠে বসলে প্রায় প্রতিটি অঙ্গের উপরই মারাত্মক চাপ পরে। বিশেষত হার্টের উপর। এক্ষেত্রে হার্টকে হঠাৎই দ্রুত গতিতে কাজ করা শুরু করে দিতে হয়। ফলে ধীরে ধীরে হৃদপিণ্ডের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে। ডান দিকে ফিরে উঠলে কিন্তু একেবারে অন্য ঘটনা ঘটে। সেক্ষেত্রে হার্টের উপর অতটা চাপ পরে না। ফলে মারাত্মক কিছু ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে।