যেভাবে দূর করবেন বুকে জমে থাকা কফ
কলকাতা টাইমস :
সর্দি-কাশি একটি সাধারণ রোগ। তাপমাত্রার তারতম্য হলে অনেকেই সর্দি-কাশিতে ভোগেন। এছাড়া আরও বিভিন্ন কারণে সর্দি-কাশি হতে পারে। তবে সর্দি-কাশি যে কারণেই হোক না কেন, এই রোগে আক্রান্ত হলে অনেকের ক্ষেত্রে বুকে কিছু কফ বা শ্লেষ্মা জমে, যা স্বাভাবিক একটি বিষয়। কিন্তু এই শ্লেষ্মা বা কফের পরিমাণ বেশি হলে বুকে অস্বাভাবিক শব্দ হয়, ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে ও গলা ব্যথা করে। এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
ভাইরাস সংক্রমণ, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, অ্যালার্জি, অ্যাজমা, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, ব্রনকাইটিস, সিওপিডি, সিস্টিক ফাইব্রোসিস ও অন্যান্য ফুসফুসীয় সমস্যায় বুকে শ্লেষ্মা জমতে পারে।
আসুন বুকের শ্লেষ্মা কমাতে কিছু কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক:-
মধু: ঘরোয়া চিকিৎসার একটি জনপ্রিয় অনুষঙ্গ হল মধু। গবেষণায় পাওয়া গেছে, মধুতে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার মতো ক্ষমতা রয়েছে। বুকে শ্লেষ্মা জমলে মধু খেলে কমে যায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উপসর্গ দূর না হওয়া পর্যন্ত প্রতি ৩-৪ ঘণ্টায় এক টেবিল চামচ মধু সেবন করতে পারেন। ১২ মাসের কম বয়সি শিশুদের জন্য মধু উপযুক্ত নয়।
লবণ জল : লবণ মিশ্রিত জল দিয়ে গড়গড়া করলেও বুকের শ্লেষ্মা দূর হবে ও উপসর্গ উপশম হবে। এক মগ জলে আধ চা-চামচ লবণ ঢেলে নাড়তে থাকুন। লবণ মিশে গেলে গড়গড়া করতে থাকুন। লবণ জল মুখের ভেতর কমপক্ষে ৩০ সেকেন্ড রাখতে হবে। ঠাণ্ডা নয়, কুসুম গরম জল ব্যবহার করুন। গবেষণায় দেখা গেছে, ঠাণ্ডা জলের গড়গড়া তেমন কার্যকর নয়।
গরম জল : পর্যাপ্ত গরম জল পান করলে শ্লেষ্মা পাতলা হবে ও কাশির মাধ্যমে সহজে বের হয়ে যাবে। গবেষণায় দেখা গেছে, গরম পানীয় বুকের শ্লেষ্মা দূর করে ব্যথা ও অন্যান্য অস্বস্তিকর অনুভূতি প্রশমিত করতে পারে। গরম স্যূপ, ব্ল্যাক টি বা গ্রিন টি, হার্বাল টি অথবা সাধারণ পানি পানে এই উপকার পেতে পারেন। এখানে গরম জল বলতে কুসুম গরম জলকে বোঝানো হচ্ছে।
আর্দ্র বাতাস: কক্ষের বাতাসকে আর্দ্র করলে শ্লেষ্মা পাতলা হবে ও কাশি বা গলার অস্বস্তি কমে যাবে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হার্ট, লাং অ্যান্ড ব্লাড ইনস্টিটিউট কক্ষের বাতাসকে আর্দ্র করতে হিউমিডিফাইয়ার বা স্টিম ভেপোরাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে। রাতে ঘুম যেতে সমস্যা হলে হিউমিডিফাইয়ার সহায়ক হতে পারে- প্রতিক্রিয়া বাড়াতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন। এছাড়া গরম পানির ভাপ টানলে অথবা উষ্ণ গোসলেও শ্লেষ্মা পাতলা হবে।
কিছু খাবার: কিছু খাবার ও মসলা বুকের শ্লেষ্মা কমাতে পারে, যেমন- রসুন, আদা, লেবু ও শুকনো মরিচের গুঁড়া বা ঝাল মরিচ। এছাড়া কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ভাইরাস সংক্রমণে গলায় শ্লেষ্মা জমলে বেরি, জিনসেং, পেয়ারা, যষ্টিমধু, ডালিম ও জিংক সমৃদ্ধ খাবার খেলে উপকার পাওয়া যায়।