শিকারিদের আকৃষ্ট করলেও মানুষের কিন্তু রক্তের গন্ধ নাপসন্দ …
আগে জানা ছিল তাজা রক্তের তামাটে গন্ধ শিকারী প্রাণিদের আকৃষ্ট করে। আর এবার বিজ্ঞানীরা স্তন্যপায়ীদের দেহে এমন একটি মলিকিউল বা অণুজীব এর অস্তিত্ব শনাক্ত করেছেন যেটি বিশেষ কিছু ধরনের প্রাণিদেরকে লালায়িত করে এবং মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণিদেরকে দূরে সরিয়ে দেয়।
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি স্তন্যপায়ী প্রাণিদের রক্তে এমন একটি উপাদানের সন্ধান পেয়েছেন যেটির প্রতি রক্তচোষাদের আকুতি ততটাই যতটা খোদ রক্তের প্রতি তাদের আকুতি।
আর এই উপাদানটিই আবার কিছু প্রাণিকে রক্তের গন্ধ পেলেই দুরে সরে যেতে শক্তিশালীভাবে উৎসাহিত করে। আরো কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, মানুষেরাও ওই অণুজীবটির উপস্থিতির কারণে রক্তের প্রতি বিতৃষ্ণা প্রকাশ করছে।
মানুষেরা ১ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি ধরনের গন্ধ শুঁকতে পারে। তবে এমন আরো কিছু প্রাণি আছে যারা মানুষেদের চেয়েও বেশি গন্ধ শনাক্ত করতে পারে। হাতীদের দেহে মানুষদের চেয়ে পাঁচগুন জিন আছে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের গন্ধ শনাক্ত করার জন্য। আর কুকুরদের নাক এতটাই সংবেদনশীল যে তারা মানুষের বিশেষ কিছু ক্যান্সারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গন্ধও শনাক্ত করতে পারে। আর সামুদ্রিক পাখিরা ‘ওডর ম্যাপ’ বা ‘গন্ধ মানচিত্র’ অনুসরণ করে আকাশের সুউচ্চে উড়ে, যা ২০১৫ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেন।
তবে রক্তের এমন আরেকটি উপাদান আছে- ট্রান্স-৪,৫-ইপক্সি-(ই)-২-ডিসে
গবষণায় দেখা গেছে, যেসব প্রাণি রক্তের উপাদান E2D এর প্রতি আকৃষ্ট হয় তারা সাধারণভাবে রক্তের প্রতিও আকৃষ্ট হয়।
তবে মানুষেরা E2D এর প্রতি বিতৃষ্ণাই প্রকাশ করে। সুইডেনের ক্যারোলিন্সকা ইনস্টিটিউটের ক্লিনিক্যাল নিউরোসায়েন্স বিভাগের পোস্ট ডক্টোরাল গবেষক আরটিন আরশিমান বলেন, E2D এর গন্ধ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের দেহের পুরো সাধারণ প্রতিরক্ষা সিস্টেম সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা গেছে।
আধুনিক মানুষেরা নিঃসন্দেহে শিকারি প্রজাতি। কিন্তু আমরা হয়তো নিরীহ কোনো প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়েছি। আর সে কারণেই রক্তের গন্ধের প্রতি আমাদের এই বিতৃষ্ণা।