বিষাক্ত খাবার খেতেও অভস্থ ছিল মানুষ, জানাল ৫৩০০ বছর আগের মমি

কলকাতা টাইমস :
১৯৯১ সাল নাগাদ আল্পস পর্বতমালার ওটজালে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি মমির সন্ধান পাওয়া যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৩৪০০ থেকে ৩১০০ শতাব্দীর মধ্যেই পৃথিবীতে বাস করেছিল এই প্রাচীন মানব। সেই ‘আইসম্যান’ বা প্রাকৃতিক মমিই বিজ্ঞানীদের উৎসাহের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে বহু বছর ধরে।
সেই মমি থেকেই গবেষকরা জানার চেষ্টা করেছিলেন, মমিটির বয়স কত এবং কীভাবে মৃত্যু হয়েছিল ওই ব্যক্তির। সেই মমির নাম দেওয়া হয় ওৎজি আইসম্যান। তার গায়ে থাকা চামড়ার কোট, ছাগলের চামড়ার পোশাক, দাঁতের অংশ, গোড়ালি সবকিছুই নিয়েই শুরু হয় গবেষণা। জানা যায়, মমির বয়স প্রায় ৫৩০০ বছর।
সম্প্রতি ৫৩০০ বছর আগের এই মানুষটি মৃত্যুর আগে শেষবারের মতো যে খাবার খেয়েছিলেন তার হদিস পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সুষম হলেও খাবারে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট ছিল বলেও জানান তারা।
ওৎজি দ্য আইসম্যান মারা যান হিমবাহের পাশেই। সেখানেই হাজার হাজার বছর ধরে তার মরদেহ সংরক্ষিত ছিল। একদল গবেষক দাবি করেন, ওৎজিকে সম্ভবত পরিচিত কেউ খুন করেছিলেন। ২০০১ সালে ওৎজির বাঁ কাঁধে একটি তিরের সন্ধান মেলে, তা দেখে সন্দেহ হয় যে তাকে খুন করা হয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, মৃত্যুর ক’দিন আগে ওৎজির ডান হাতে আঘাত লাগে। তবে তাতে তার মৃত্যু হয়নি। যেভাবে তিরটি এসে তার গায়ে লেগেছিল সেটা আকস্মিক ও অনেকটা দূর থেকে। তা থেকে সন্দেহ, হত্যাকারী তার পরিচিত ও বিশ্বাসঘাতক।
তার ত্বকের প্রতিটি ভাঁজ পর্যন্ত নথিভুক্ত করা হয়। কিন্তু সমস্যা হয়েছিল অন্য জায়গায়। পাওয়া যাচ্ছিল না পাকস্থলী। পরে সেই পাকস্থলীর অবস্থান নির্ণয় করেন বিজ্ঞানীরা।পাকস্থলীতে পাওয়া পরজীবী থেকে তাদের ডিম নিয়েও প্রাচীন যুগের বাসিন্দাদের খাদ্যাভ্যাস জানার চেষ্টা করা হয়।
বিজ্ঞানীরা জানান, তার পাকস্থলীতে বুনো ছাগলের মাংসের চর্বি ছিল। এ ছাড়া হরিণের মাংস এবং প্রাচীন আমলের এক ধরনের খাদ্যশস্য এবং কিছুটা বিষাক্ত ফার্ন জাতীয় গাছের অংশও মিলেছে।