September 24, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

আইস ক্রিম নাকি বিষ, কি খাচ্ছেন ?

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমস :

বিষ হল সেই তরল যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করা মাত্র মৃত্যুকে নিশ্চিত করে। কিন্তু সেই সব খাবারকেও তো বিষ হিসেবে গণ্য করা উচিত, যা খাওয়া মাত্র সঙ্গে সঙ্গে না হলেও আয়ু কমে চোখে পরার মতো। একেবারেই! সঙ্গে সঙ্গে হোক কী পরে। যে খাবার খেয়ে মৃত্যু ঘটে তাই হল বিষ। তাই দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের প্রিয় আইসক্রিমকেও হয়তো সেই তালিকায় রাখতে হবে। কারণ তুল্য মূল্য বিচারে জিভে জল আনা এই ডেজার্টটির যতটা না উপকারিতা, অপকারিতা তার থেকে অনেক বেশি।

৮-৮০ যেহেতু এই খাবারটি খেতে ভালবাসে তাই আইসক্রিম সম্পর্কে সচেতন হওয়াটা একান্ত প্রয়োজন। না হলে কিন্তু বেজায় বিপদ! তবে আইসক্রিমের খারাপ দিকটা তুলে ধরার আগে তার অল্পবিস্তর ভাল দিকটাও জানা উচিত। কি তাই না! আইসক্রিমের উপকারি দিক:

১. শরীরে এনার্জির ঘাটতি মেটায়: দেহকে সচল রাখতে মূলত যে উপদানটির প্রয়োজন পরে তা হল কার্বোহাইড্রেট। আর আইসত্রিমে এটি রয়েছে প্রচুর পরিমাণ। তাই এটি খাওয়া মাত্র আমাদের শরীরের অনন্দের এনার্জির ঘাটতি দূর হয়। ফলে দেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, মাত্র হাফ কাপ আইসক্রিমে প্রায় ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে, যা শরীরকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত অ্যাকটিভ রাখতে পারে। তাই এবার থেকে কাজ করতে করতে যখনই ক্লান্ত বোধ করবেন, তখন ইচ্ছা হলে অল্প করে আইসক্রিম খেতেই পারেন। দেখবেন উপকার পাবেন। তবে বেশি মাত্রায় খেলে কিন্তু বিপদ!

২. ভিটামিন সমৃদ্ধ: নিশ্চয় অবাক হচ্ছেন শুনে? কিন্তু এই তথ্যের মধ্যে কোনও ভুল নেই যে প্রচন্ড তাপ প্রবাহের সময় শরীর এবং মনকে শান্ত করার পাশাপাশি পুষ্টির ঘাটতি মেটাতেও এই ডেজার্টটির কোনও বিকল্প হয় না। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, বি৬, ই, এ, ডি, বি১২ এবং কে। এখানেই শেষ নয়। আইসক্রিমে আরও বেশ কিছু পুষ্টিকর উপাদান থাকে। যেমন- থিয়েমিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, রাইবোফ্লেবিন এবং নিয়াসিন প্রভৃতি। এই সবকটি উপাদানই নানাভাবে শরীরের গঠনে বিশেষ ভূমিকা পলান করে থাকে।

৩. খনিজের ঘাটতি মেটে: শুধু ভিটামিন নয়, আইসক্রিমে একাধিক খনিজেরও সন্ধান পাওয়া যায়। একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে বেশিরভাগ প্রথম সারির আইসক্রিমেই ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম থাকে। আর ক্যালসিয়াম হাড়কে শক্তিপক্তো করতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। সেই সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে এবং কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা নেয়। এছাড়াও আইসক্রিমে উপস্থিত ক্যালসিয়াম কোলন এবং কোলরেকটাল ক্যান্সারের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। অন্যদিকে, মানব শরীরে যাতে ক্যালসিয়াম সম্পূর্ণ রূপে শোষিত হতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখে ফসফরাস। সহজ ভাবে বললে, ফসফরাস ছাড়া ক্যালসিয়াম শরীরের কোনও কাজে আসতেই পারে না।

প্রসঙ্গত, একটা বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজন যে ভ্যানিলা আইসক্রিম খেলে যে পরিমাণ উপকার পাওয়া যায়, তা কিন্তু বাকি ফ্লেবারের আইসক্রিম খেলে পাওয়া যায় না। তাই এবার থেকে ফ্লেবার চুজ করার সময় এই বিষয়টি মাথায় রাখতে ভুলবেন না যেন!

৪. নিমেষে মন ভাল করে দেয়: মাত্র এক চামচ আইসক্রিম নিমেষে আপনার নুইয়ে পরা মনকে চাঙ্গা করে তুলতে পারে। কেন এমনটা হয় জানেন? আসলে আইসক্রিম খাওয়া মাত্র আমাদের মস্তিষ্কের অরবিটোফ্রন্টাল কর্টেক্সকে উজ্জীবিত করে তোলে, ফলে মন খুশিতে ভরে ওঠে। এত উপকারিতার পরেও আইসক্রিমের অপকারিতাই কিন্তু বেশি। তাই সেদিকটাও খেয়াল রাখা প্রয়োজন।

এক্ষেত্রে বেশি মাত্রায় আইসক্রিম খেলে শরীরের যে যে ক্ষতিগুলি হয়ে থাকে, সেগুলি হল…

১. শরীরে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়: যে যে উপকারণ দিয়ে সাধারণত আইসক্রিম বানানো হয়ে থাকে তাতে প্রচুর মাত্রায় স্টাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা শরীরে এনার্জির ঘাটতি দূর করার পাশাপাশি বিশেষ কিছু উপকারি এনজাইমের উৎপাদনে এবং স্ট্রেসের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। কিন্তু সেই সঙ্গে শরীরের ওজন বৃদ্ধিও ঘটায়। আর একথা তো সকলেরই জানা আছে যে অতিরিক্ত ওজন মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ ওজন বাড়ছে মানে শরীরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এই রোগগুলি যে সবকটাই হটাৎ মৃত্যু ঢেকে আনে, সে সম্পর্কে নিশ্চয় সবাই জানেন। তাই ক্ষণিকের অনন্দের জন্য জীবনকে বিপদে ফেলে দেওয়া মনে হয় না বুদ্ধি মানের কাজ।

২. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়: হাফ কাপ ভ্যানিলা আইসক্রিমে কমবেশি ২৫ এম জি কোলেস্টেরল থাকে। তাহলে এবার ভাবুন, একটা পুরো কাপ অথবা একটা মোটা আইস ক্রিম বার খেলে কী পরিমাণে খারাপ কোলেস্টেরল শরীরে প্রবেশ করে। প্রসঙ্গত, দেহে কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে রক্তসরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে হটাৎ করে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

৩. ডায়াবেটিস রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে পারে: আইসক্রিমে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে, যা শরীরে ক্যালরির মাত্রার বৃদ্ধি ঘাটায়। আর ক্যালরি যত বৃদ্ধি পাবে, তত ওজন বাড়বে। আর ওজন বাড়লে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। প্রসঙ্গত, আমাদের দেশ বর্তমানে ডায়াবেটিস ক্যাপিটালে পরিণত হয়েছে। এমন অবস্থায় যদি প্রয়োজনীয় সাবধানতা না নেওয়া যায়, তাহলে কিন্তু বেজায় বিপদ!

Related Posts

Leave a Reply