এই পিজ্জা, সাবাড় করলেই পুরস্কার ৭০ হাজার
মাচু পিচ্চুর ম্যারাথন থেকে শুরু করে বরফাচ্ছাদিত পাহাড় বেয়ে নামার মতো সব কাজই করেছেন ক্লেমি মোডি। কিন্তু তার সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জটি অসম্ভব বলেই মনে হয়েছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সাইজের পিজ্জা খাওয়ার কাজটি সত্যিই প্রায় অসম্ভব।
ক্যালিফোর্নিয়ার একটি রেস্টুরেন্ট সরবরাহ করে গ্রহের সবচেয়ে বড় আকারের পিজ্জা। দানবের ক্ষুধা নিয়ে যে কেউ সেখানে যেতে পারেন। এ পিজ্জা পুরোটা যারা খেতে পারবেন, তাদের উল্টে ১০০০ ডলার অর্থাৎ ভারতীয় টাকায় প্রায় ৭০ হাজার পুরস্কার দেওয়া হবে।
আটজন মানুষের খাওয়ার জন্যে তৈরি করা হয়েছে পিজ্জাটি। হালকা ব্যায়াম আর ঢিলেঢালা পোশাক পরে ক্লেমি চলে গেলেন ‘বিগ মামাস অ্যান্ড পাপাস পিজ্জারিয়া’তে। লস অ্যাঞ্জেলসের বারব্যাঙ্কের আইকনিক রেস্টুরেন্ট এটি। টানা দুই দিন ধরে বানানো হয় ৫৪x৫৪ বর্গ ইঞ্চির বিশাল পিজ্জাটি।
এই একটি পিজ্জার ময়দা মাখিয়ে বিশাল এক মণ্ড প্রস্তুত করা হয়। শেফ গুস্তাভো এটাকে নিয়ে নানা কসরত করেন। একে ওপরের দিকে বাতাসে ছুড়ে মারা আবার ধরা ইত্যাদি কারসাজিতে পিজ্জার আকার দিয়ে দিলেন।
রেস্টুরেন্টের সবাই ভাবছিলেন, ক্লেমি তার বন্ধুদের নিয়ে এসেছেন এটি খেতে। কিন্তু না। তিনি একাই খাবেন। রেস্টুরেন্টে চারটি টেবিল এক করে বসানো হলো পিজ্জা ও ক্লেমিকে।
৪ ফুট ৬ ইঞ্চি লম্বা পিজ্জাটি দেখে ক্লেমির মনে হলো, আর আকার যেন তার চেয়েও বড়। ওজন ৫৫ পাউন্ড। এতে আছে ৮ পাউন্ড মোজারেলা, দেড় পাউন্ড সসেজ এবং এতে আছে ৩২ হাজার ৪০০ ক্যালোরি।
এ পিজ্জা হলিউড তারকাদের মধ্যেও জনপ্রিয়। মাইলি সাইরাস থেকে শুরু করে আর্নল্ড শোয়ার্জনিগার পর্যন্ত এটি খেতে এসেছেন। তবে তাদের সঙ্গে বন্ধুরা ছিলেন।
আরেক শেফ এডি হোভসেপিয়ান জানান, এটার আকারটা বেইমানি করতে পারে। অনেক বিশালদেহী মানুষ এটি খেতে এসেছিলেন। তাদের কাছে ছোটই মনে হয়েছিল। কিন্তু অবশেষে এর চারভাগের একভাগ খেতেও ঘাম ঝরিয়েছেন। তবে অনেক সরুদেহী নারী পুরুষদের চেয়ে বেশি খেয়েছেন।
যারা খুব দ্রুত বেশি খাবার খাওয়ার প্রতিযোগিতা করেন, তারা বেশ কয়েক দিন আগে থেকে বেশি বেশি খেয়ে পাকস্থলীর আকার বৃদ্ধি করতে থাকেন। ক্লেমি এ প্রস্তুতি নিতে একদিন সময় পেলেন। গোপন রেসিপিতে তৈরি পিজ্জাটির কোমল দেহে প্রথম কামড় বসালেন ক্লেমি। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে প্রথম টুকরাটি উধাও হলো। পুরো পিজ্জার একেক অংশে একেক উপকরণের স্বাদ দেওয়া হয়েছে। বেছে বেছে স্বাদের পরিবর্তন করে টুকরা শেষ করতে থাকলেন তিনি। এভাবে সপ্তম টুকরাটি শেষের পর পিজ্জার স্বাদ আর বুঝতে পারছিলেন না ক্লেমি। নিজেকে বিমানের মতো অটোপাইলটে ছেড়ে দিলেন। যন্ত্রের মতো খেতে থাকলেন তিনি।
আর বেশি এগোতে পারলেন না। হাল ছেড়ে দিলেন। বাকি যতটুকু থাকলো তা প্যাকেটে ভরে বাড়িতে নিয়ে গেলেন। ৬টি ফুল পিজ্জা ডেলিভারি বাক্সে স্থান পেল বাকিটুকু। আগামী ৩ দিনের তিনবেলা খাবার তার এখানেই রয়েছে।
অভিজ্ঞতা বয়ান করতে গিয়ে ক্লেমি বলেন, খাওয়া শুরুর প্রথম ৫ মিনিট দারুণ মজার ছিল। পরের সময়গুলো মনে হলো, যেন কোনো হরর সিনেমা চলছে।