যেকোন সমস্যায় হাজির ‘আংকেল’, ভাড়ায় নেবেন নাকি!
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
অনেক সময়ই আমাদের জীবনে এমন অনেক সমস্যা থাকে যা আমরা পরিচিত কারও কাছে বলতেও সংকোচ বোধ করি। অথচ না বলতে পারলে অস্বস্তির শেষ নেই। এখন আর এই অস্বস্তিতে ভুগতে হবে না। ভাড়া করে নিয়ে আসুন আঙ্কেল। আর তাকে বলে ফেলুন সব সমস্যা। তিনি সমস্যার সমাধান বাতলে দেবেন। জাপানের স্টার্টআপ কোম্পানি শুরু করেছে ‘ওসসান রেন্টাল সার্ভিসে’ নামে এক অভিনব সার্ভিস। এই ওয়েবসাইট থেকে ঘণ্টা হিসেবে একজন মধ্যবয়সী ‘ওসসান’ বা ‘আংকেল’ ভাড়া নেওয়া যায়। এই ‘আংকেল’ তখন পরামর্শদাতা বা সঙ্গী হিসেবে কাজ করেন।
২০১২ সালে ‘ওসসান রেন্টাল সার্ভিস’ চালু করেন ৫০ বছর বয়সী তাকানোবু নিশিমোতো। তিনি দেখেছিলেন, জাপানের সমাজে মধ্যবয়সী ব্যক্তিদের প্রতি বিরূপ ধারণা তৈরি হয়েছে। অনেকেই তাদেরকে আর মূল্য দিচ্ছে না, তাদের অনাকাঙ্ক্ষিত, অবাঞ্ছিত মনে করছে। মধ্যবয়সী ব্যক্তিদের প্রতি সমাজের ধারণা পরিবর্তনের জন্যই তিনি এই স্টার্টআপ নামিয়েছেন। এই স্টার্টআপ ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বর্তমানে প্রতিদিন অন্তত ৪৫ জন ‘ওসসান’ বা ‘আংকেল’ ভাড়া হয় এখান থেকে।
এসব আংকেলদের কাজ আসলে কী? বিভিন্ন অদ্ভুত কাজ করতে হয় তাদেরকে। কিন্তু কাস্টমার এবং ওসসানের মাঝে কঠোর ‘নো-টাচিং’ পলিসি রয়েছে। অর্থাৎ এটাকে কোনোভাবেই ডেটিং সার্ভিস বা এস্কর্ট সার্ভিস হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
৭০ শতাংশ কাস্টমার এই সার্ভিস ব্যবহার করে কারও সাথে কথা বলা এবং উপদেশ নেবার জন্য। বাকি ৩০ শতাংশ কায়িক পরিশ্রমের জন্য এই সার্ভিস ব্যবহার করে। যেমন কেউ বাসা পাল্টাচ্ছে অথচ পরিবারে কোনো পুরুষ নেই, তখন মালামাল বহনের জন্য একজন ‘আংকেল’ ভাড়া করে তারা।
‘ওসসান রেন্টাল সার্ভিসের’ একজন ‘আংকেল’ হলেন কেন সাসাকি। ঘণ্টায় মাত্র এক হাজার ইয়েন (৯ ডলার) দিয়ে টাকা ভাড়া করা যায়। তিনি উপদেশ দেবার পাশাপাশি কাস্টমারকে বেহালা বাজিয়েও শোনান। সপ্তাহে সাধারণত একবার ওসসান হিসেবে কাজ করেন তিনি। কাস্টমারদের জন্য অনেক অদ্ভুত কাজ করতে হয় তাকে। একবার মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য একটি ছোট মেয়ের জন্মদিনে বেহালা বাজাতে হয় তাকে। আবার এক মহিলা তাকে ভাড়া করে নিয়ে যান একটা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য। ওই মহিলা অনুষ্ঠানটিতে নাচেন। কিন্তু তার পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিল না বলে ‘ওসসান’ ভাড়া করেন তিনি। অনেক মহিলাই পারিবারিক সমস্যায় পড়েন এবং কোনো গুরুজন না থাকায় তার উপদেশ নিতে আসেন।
নিশিমোতো আশা করছেন, তার এই সার্ভিসের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি জাপানে মধ্যবয়সী পুরুষদের প্রতি তাচ্ছিল্যের মনোভাব দূর হবে এবং শ্রদ্ধার জায়গাটা ফিরে আসবে আবারও।