গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে চাইলে নিতে হবে গরম পানীয়!
সকালে ঘুম থেকে উঠেই কি এক কাপ গরম কফি না হলে আমাদের অনেকেরই চলেনা। অফিসেও দিনের মধ্যে বেশ কয়েক বার গরম চা বা কফি কিছু না হলে কেমন যেন ঘুম ঘুম পায়। অথচ এই গরমে চা, কফি খাওয়ার জন্য প্রতিদিন কখনো বাড়িতে বকাবকি, বন্ধুদের নানা রকম পরামর্শ হজম করতে হয় নিশ্চয়ই। সেই সঙ্গে এই গরমে চা বা কফি না খেয়ে ঠাণ্ডা কিছু তো খাওয়ার উপদেশও বেশি শুনতে হয়।
কিন্তু ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সেন্টার ফর হার্ট, লাং অ্যান্ড ভাসকুলার হেলথ বিভাগের গবেষক অ্যান্থনি বেন অবশ্য জানাচ্ছেন, ‘গরমে গরম পানীয় খেলেই আমাদের শরীর ঠাণ্ডা হয়। যখন আমাদের গরম লাগে, আমাদের শরীর প্রাথমিক ভাবে ঘামের মাধ্যমে শরীর ঠাণ্ডা করে। ঘাম ত্বকের উপরিভাগে এসে শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়।’
বেন আরও জানান, ‘গরম লাগলে শরীরের টিস্যুর তাপমাত্রার পরিবর্তন ত্বক ও শরীরের বিভিন্ন অংশে থাকা থার্মোসেন্সর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে পৌঁছনোয় আমরা গরম অনুভব করি। শরীর তখন ঘামের মাধ্যমে তাপমাত্রা কমানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। যখন আমরা গরম কিছু পান করি তখন পাকস্থলীর থার্মোসেন্সর অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে। যা হাইপোথ্যালামাসে সিগন্যাল পাঠায় যে শরীর গরম হয়েছে। মস্তিষ্ক তখন শরীর ঠান্ডা করতে ঘামানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। ত্বকের মাধ্যমে ঘাম শরীরের উপরিভাগে চলে এলে হিট এনার্জি শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। ফলে শরীর ঠাণ্ডা হয়।’
বেন বলেন, ‘যদি শরীরে উৎপন্ন হিট এনার্জি পুরোটাই ঘামের মাধ্যমে ত্বকের উপরিভাগে উঠে আসতে পারে তবেই শরীর ঠাণ্ডা হবে। যদি আগে থেকেই আমরা ঘেমে থাকি তা হলে গরম কিছু পান করার পর হিট এনার্জি পুরোপুরি উপরিভাগে উঠে আসতে পারবে না। ফলে ভেতরে থেকে যাবে। শরীর ঠাণ্ডা হবে না। যদি আমরা ঘেমে থাকি তা হলে ঠাণ্ডা কিছু পান করা উচিত। কিন্তু যদি গরম লাগলেও ঘাম বিশেষ না হয়, ঢিলেঢালা পোশাক পরে থাকি, এবং আবহাওয়া গুমোট না হয় তা হলে গরম পানীয় শরীর ঠাণ্ডা করবে।’