November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular শারীরিক

প্রতিদিন বিছানায়  এই কাজটি না করলে শুধু সুখনিদ্রাই নয় প্রাণও গেলো…

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
৪ ঘন্টার মধ্যে আমরা কম-বেশি ৮ ঘন্টা ঘুমাই। তার মানে দিনের এক তৃতীয়াংশ সময়ই আমাদের কেটে যায় বিচানায়। তাই তো বিছানার চাদর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকাটা একান্ত প্রয়োজন। না হলে নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বিছানার চাদর পরিষ্কার আছে কিনা তার সঙ্গে শরীর সুস্থ থাকার কী সম্পর্ক?
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নানা ক্ষতিকর উপাদান এবং জীবাণু নিজেদের বাসা বানায় বিছানার চাদরে, যা শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। তাই তো প্রতিদিন বেড শিট পরিষ্কার করা প্রয়োজন। এখন প্রশ্ন হল, এমনটা যদি কেউ না করেন তাহলে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে? চলুন খোঁজ লাগানো যাক এই উত্তরের।
বিছানার চাদরে কী কী ক্ষতিকর উপাদান থাকে? 
১. ডাস্ট মাইটস: আপনি যদি কোনও দিন আপনার বেড শিট মাইক্রোস্কোপের নিচে রাখেন তাহলে মাথা ঘুরে যাবে। কারণ খালি চোখে দেখা না গলেও বিচানার চাদরে কোটি কোটি ডাস্ট মাইটস বা এক ধরনের ছোট ছোট পোকা থাকে, যা আমাদের ত্বকের মৃত কোষ খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা একবার যদি বিছানার চাদরে জন্ম নিয়ে নেয়, তাহলে অল্প সময়ের মধ্যেই এদের সংখ্যা লক্ষাধিকে গিয়ে পৌঁছায়। আর এমন ক্ষতিকর পোকার সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাবে, তত আমাদের শরীর খারাপ হওয়ার আশঙ্কা বাড়বে। তাহলে উপায়? একটাই উপায় আছে। প্রতিদিন পরিষ্কার বেড শিট বিছানায় পাততে হবে। আর ব্যবহৃত চাদরটি ভাল করে ধুয়ে ফলতে হবে। এমনটা করলেই রক্ষা মিলবে এই সব পোকার হাত থেকে। আর যদি এমনটা না করেন, তাহলে এই সব পোকার আক্রমণে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করবে। ফলে অ্যাস্থেমা,কাশি, হাঁচি, রাইনাইটিস, অ্যালার্জি, একজিমা (অ্যাটোপিক ডার্মাটাইটিস) প্রভৃতি রোগের প্রকোপ বাড়বে। তাই সাবধান হওয়াটা জরুরি।
২. মৃত কোষ: ডাস্ট মাইটসরাই একমাত্র নয়, যাদের সঙ্গী করে আমরা প্রতিদিন শুতে যাই। আরও অনেকে আছে যারা ঘুমনোর সময় আমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকে। যেমন মৃত কোষ। প্রতিদিন যদি পরিষ্কার চাদরে না শোন, তাহলে বিছানা কোটি কোটি মৃত কোষে ভরে যায়। আর এমনটা হলে পোকা মাকড়ের পাশপাশি নানা ক্ষতিকর জীবাণুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। কারণ যেমনটা আগেও বলেছি যে আমাদের শরীরের মৃত কোষগুলি এই সব ক্ষতিকর পোকাদের পছন্দের খাদ্য তালিকার একেবারে উপরে থাকে। ফলে সুস্বাদু খাবার খাওয়ার লোভে এই সব পোকা এসে ভির করে বিছানায়। ফলে আমরা হয়ে পরি অসুস্থ।
৩. তেল: ঘুমনোর সময় আমাদের শরীর থেকে তেল নিঃস্কৃত হয়, যা বিছানার চাদরে লাগতে থাকে। অপরিষ্কার চাদরে এই তেল লাগতে লাগতে চাদরটা আরও অপরিষ্কার হয়ে যায়।
৪. ঘাম: গরম কালে ঘুমনোর সময়ও আমরা খুব ঘামি। আর সেই ঘাম বিছানার চাদরে লাগতে থাকে। এতে চাদর থেকে বাজে গন্ধ বেরতে শুরু করে। সেই সঙ্গে সেখানে নানাবিধ ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার জন্মহার বেড়ে যায়।
৫. খাবারের টুকরো: অনেকই আমরা বিছানায় বসে খাওয়া দাওয়া করি। ফলে খাওয়ার সময় বিচানা নোংড়া হয়। আর যদি সেই নোংড়া চাদর পরিষ্কার করা না হয়, তাহলে পোকা মাকড়ের স্বর্গ হয়ে ওঠে সেই বিচানা। আর এই সব পোকা-মাকড় যে আমাদের বন্ধু হয় না, তা নিশ্চয় বলে দিতে হবে না আপনাদের!
কতদিন অন্তর অন্তর বিচানার চাদর পরিষ্কার করা উচিত? 
১. প্রতিদিন বিচানার চাদর ধোয়া সম্ভব নয়। তাই প্রতি দু দিন অন্তর নতুন চাদর পাতুন। আর এই ব্যবহৃত চাদরে শুতে যাওয়ার আগে মনে করে চাদরটা ঝেড়ে নেবেন। এমনটা করলেও রোগ ভোগের আশঙ্কা কমবে। অর্থাৎ সপ্তাহের শেষে আপনাকে মোট ৩ টে চাদর ধুতে হবে। নিজেকে সুস্থ রাখতে এইটুকু পরিশ্রম করতে নিশ্চয় আপনি পিছপা হবেন না।
২. শুধু চাদর নয়, বালিশও পরিষ্কার রাখতে হবে। তবে চাদরের মতো সপ্তাহে সপ্তাহে না কাচলেও চলবে। বছরে দুবার বলিশ ধুয়ে নেবেন। তাহলেই আর কোনও ভয় থাকবে না। প্রসঙ্গত, বালিশে যেসব ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধে তাদের কারণে ডায়ারিয়া, অ্যাস্থেমা এবং ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে।
৩. অসুস্থ ব্য়ক্তি যে বিচানায় সুয়ে আছেন, সেই চাদর প্রতিদিন চেঞ্জ করতে হবে। এমনটা করলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার কারণে রোগীর আরও অসুস্থ হয়ে পরার আশঙ্কা কমবে। কীভাবে পরিষ্কার করবেন বিচানার চাদর? একাধিক কেস স্টাডি করে দেখা গেছে অনেকেই সঠিক পদ্ধতিতে বেড শিট বা বালিশ ধোন না। ফলে ধোয়ার পরেও ডাস্ট মাইটস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে যায়। তাই তো বালিশ -চাদর ধোয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নেওয়াটা একান্ত প্রয়োজন।
বেড শিট ধোয়ার নিয়ম: 
১. গরম জলে সাবান মিশিয়ে সেই জলে বেড শিট ধুতে হবে। আর ধোয়ার পর ভাল করে যেন শুকিয়ে নেওযা হয় চাদর।
২. জামা কাপড়ের সঙ্গে কখনই বিছানার চাদর ধোবেন না।
৩. সাদা বিছানার চাদর ভাল করে পরিষ্কার করতে সাবান জলে হাফ কাপ লেবুর রস মিশিয়ে দেবেন। এমনটা করলে জীবানুরা যেমন দূরে পালাবে, তেমনি সাদা রং আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
গায়ে দেওয়ার চাদর কাচার নিয়ম:
১. উলের চাদর ঠান্ডা জলে ধুতে হবে। আর সুতির চাদর কাচতে হবে গরম জলে।
২. বিছানার চাদরের মতো গায়ে দেওয়ার চাদরও দু দিন অন্তর অন্তর ধুয়ে নেবেন।
বালিশের কভার:
১. এমন জিনিস সব সময় ঠান্ডা জলে ধোবেন।
২. যদি নিয়মিত বালিশের কভার পরিষ্কার করতে না পারেন তাহলে প্রতিদিন ঝেড়ে নেবেন। এমনটা করলেও জীবাণু আর ডাস্ট মাইটসরা বলিশে বাসা বাঁধার সুযোগ পাবে না।

Related Posts

Leave a Reply