মৃত্যুর ১১ দিন পরেও কবর থেকে চিৎকার, আপ্রাণ চেষ্টা কবর ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসার
নিউজ ডেস্কঃ
ব্রাজিলে রোজংলা নামের এক মহিলাকে কবর দেওয়ার ১১ দিন পর তার কবর থেকে চিৎকার ভেসে আসে। আপাতত এই খবরেই তোলপাড় ব্রাজিল। জানা গেছে, ৩৭ বছর বয়সী রোজংলা আলমেদিয়া দোস সান্তোসকে মৃত ভেবে কবর দিয়ে দিয়েছিল তাঁর পরিবার। টানা ১১ দিন ধরে কংক্রিটের সেই কবর খুঁড়ে বেরোবার চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু হয়নি শেষরক্ষা। কবর খুলে দেখা যায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তখনো দেহের তাপমাত্রা উষ্ণ ছিল রোজংলার।
জানা গেছে, গত মাসে তীব্র ক্লান্তির কারণে রোজংলাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। প্রায় ৭ দিন হাসপাতলে ভর্তি থাকার পর ২৮ জানুয়ারি চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করে। রোজাংলার ডেথ সার্টিফিকেট অনুযায়ী, প্রথমে কার্ডিয়াক আরেস্ট এবং তারপর ‘সেপটিক শক’-এ গিয়ে তার মৃত্যু হয়। পরের দিন উত্তর ব্রাজিলের রিয়াচও দাস নেভেসের ‘সেনহোরা সানটানা সেমেট্রি’তে কংক্রিটের কফিনে মৃত রোজংলাকে কবর দেয় তার পরিবার।
প্রকাশ্যে আসা একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কবরস্থান থেকে কয়েকজন ব্যক্তি একটি ভারী কফিন তুলছে। তারপর কফিনের ঢাকনা খুলতেই সবাই অ্যাম্বুলেন্সের জন্য চিৎকার করতে শুরু করেন। জানা গিয়েছে, রোজংলার হাতে ও মাথায় আঘাত ছিল। যা দেখে অনুমান করা হচ্ছে, কফিন থেকে বেরিয়ে আসার প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন তিনি। কফিনের পেরেকগুলিও উপর দিকে উঠে ছিল। কফিনের ভেতরে রক্ত ও আচড়ানোর দাগ ছিল।
এবিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা নাতালিনা সিলভা বলেন, ‘আমি যখন কবরটির সামনে যায় তখন কবরের ভিতর থেকে আসা আওয়াজ শুনতে পাই। আমি ভেবেছিলাম কবরে যেসব বাচ্চারা খেলতে আসে তারা আমার সঙ্গে মজা করছে। তারপর আমি তাকে দু বার আওয়াজ করতে শুনি এবং ওই দু বার আওয়াজের পর তিনি আর কোনো শব্দ করেননি।’
রোজংলার মা জারমানা ডে আলমেদিয়া (৬৬) বলেন, ‘সে ঢাকনাটি খোলার প্রাণপন চেষ্টা করেছিল। ওর হাতে আঘাত ছিল। যেন ও বেড়ানোর চেষ্টা করছিল।’ পরিবারের বিশ্বাস রোজংলাকে ভুল করে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল। এবিষয়ে রোজংলার বোন ইসমারা আলমেদিয়া বলেন, ‘আমরা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে চাইনা। আমরা কোন সমস্যা সৃষ্টি করতে চাইনা।’
তবে পরিবার কোনো সমস্যার সৃষ্টি করতে না চাইলেও মৃত্যুর ১১ দিন পর কারোর দেহের তাপমাত্রা উষ্ণ থাকতে পারেনা। এই সত্যটি স্বীকার করে নিয়েছেন তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ আর্নাল্ডো মন্টে। ঠিক কী ঘটেছে তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তদন্তের স্বার্থে পুলিশকে যাবতীয় সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন রোজংলাকে মৃত ঘোষণাকারী হাসপাতালের একজন মুখপাত্র।