এ দেশে মহিলা-পুরুষ একসঙ্গে বসে কফিও খাওয়ারও নেই অধিকার, রয়েছে ড্রেস কোডও
কলকাতা টাইমস
জানেন কি সৌদি আরব এমন একটি দেশ যেখানে মহিলাদের যেকোন কতগুলি অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখা হয় যা তাদের মৌলিক অধিকার। যদিও সম্প্রতি মেয়েদের কিছু নতুন স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তা এতটাই সামান্য যে মহিলারা এখনো এখনই অদেখা শিকলে বাধা।
এই প্রথম সৌদি মহিলারা স্টেডিয়ামে গিয়ে ফুটবল খেলা দেখার সুযোগ পাচ্ছেন। মেয়েদের এখন সামরিক বাহিনীতে নেয়া হচ্ছে। তবে তাদের সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিক হিসেবে পাঠানো হবে না। মেয়েরা এই প্রথম একটা সাইকেল রেসেও অংশ নিয়েছেন। আর আজ থেকে অর্থাৎ ২৪ জুন থেকে সেদেশে মেয়েদের ড্রাইভিংয়ের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে।
কিন্তু তা সত্ত্বেও সৌদি সমাজ মেয়েদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে রক্ষণশীল দেশগুলোর একটি।বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সূচকে ১৪৪টি দেশের মধ্যে তাদের অবস্থান হচ্ছে ১৩৮।এই দেশে এখনো মেয়েরা অনেক কিছুই করতে পারে না। সে রকম পাঁচটি নিষিদ্ধ জিনিস:
১. ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা : পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া সৌদি মহিলারা কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন না। সৌদি আরবে যে ‘গার্ডিয়ানশিপ প্রথা’ চালু রয়েছে, তার কারণেই এই বিধিনিষেধ। সৌদি আরব প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এটি ওয়াহাবিদের দ্বারা পরিচালিত। ইসলামের সবচেয়ে রক্ষণশীল মতাদর্শ হিসেবে পরিচিত ওয়াহাবিবাদ।
২. পাসপোর্ট পাওয়া : গার্ডিয়ানশিপ প্রথার আরেকটি উদাহারণ। বিদেশ ভ্রমণের পাসপোর্ট পেতে হলে একজন সৌদি মহিলাকে অবশ্যই একজন পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি লাগবে। শুধু পাসপোর্ট নয়। চাকুরি, পড়াশোনা এমনকি বিশেষ ধরনের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও তাদের দরকার হয় এ রকম অনুমতির।
এই পুরুষ অভিভাবক হতে পারেন বাবা, ভাই বা অন্য কোনো পুরুষ আত্মীয়। বিধবাদের ক্ষেত্রে পুত্রসন্তানও হতে পারেন অভিভাবক।
৩. বিয়ে কিংবা বিয়েবিচ্ছেদ: বিয়ে কিংবা বিয়েবিচ্ছেদের ক্ষেত্রেও পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি দরকার হয়।কোনো নারীর বিয়েবিচ্ছেদের পর সন্তানকে নিজের কাছে রাখা খুব কঠিন। বিশেষ করে ছেলেসন্তানের বয়স যদি সাত বছরের বেশি এবং মেয়েসন্তানের বয়স নয় বছরের বেশি হয়। মেয়েদের নির্ভর করতে হয় তাদের পুরুষ আত্মীয়দের সদিচ্ছার ওপর। পুরুষ অভিভাবকরা চাইলে বিয়ে বা বিয়ে বিচ্ছেদের অনুমতি নাও দিতে পারেন।
৪. পুরুষ সঙ্গীকে সঙ্গে নিয়ে কফি খেতে যাওয়া : সৌদি আরবে সব রেস্টুরেন্টেই পুরুষ আর মহিলাদের বসার জায়গা আলাদা। যারা পরিবার-পরিজন নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাচ্ছেন তাদের বসতে হয় পরিবার এবং মহিলাদের জন্য নির্ধারিত স্থানে। আর একা পুরুষদের বসতে হয় পুরুষদের জন্য নির্ধারিত আলাদা জায়গায়। কাজেই অনাত্মীয় মহিলা-পুরুষ একসঙ্গে এক জায়গায় বসে কফি খাবেন, সেটি হবে না।
৫. ইচ্ছেমতো পোশাক পরার স্বাধীনতা : সৌদি মহিলাদের প্রকাশ্যে চলাফেরার সময় মুখ ঢাকতেই হবে এমন বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু মাথা থেকে পা পর্যন্ত কাপড়ে আবৃত থাকতে হবে। এ রকম পোশাককে বলে আবায়া। পুরো শরীর ঢেকে রাখা, ঢিলেঢালা একটি পোশাক। যেসব মহিলা এই আবায়া না পরে বাইরে যান, তাদেরকে রীতিমত ভর্ৎসনা করে সৌদি আরবের ধর্মীয় পুলিশ। কিছু কিছু জায়গায় বা শপিং মলে কেবলমাত্র মহিলাদের জন্য নির্ধারিত কিছু জায়গা থাকে। সেখানে তারা চাইলে আবায়া খুলে চলাফেরা করতে পারেন।