এই গ্রামে কোরবানি এবং হোলি দহন দুই’ই নিষিদ্ধ!
কলকাতা টাইমস :
এমনিতে ভারত জুড়ে অধিকাংশ রাজ্যে প্রকাশ্যে গো-হত্যা করা যায় না। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশের সিংহভাগ অঞ্চলে মুসলমানরা কোরবানির ঈদে বকরি,দুম্বা, ভেড়া, উট কোরবানি দিয়ে থাকে। গরু জবাইয়ের চিন্তাও করে না। অনেক অঞ্চলে গরুর বদলে মহিষও কোরবানি দেওয়া হয়।
তবে উত্তর উদেশের একটি গ্রামের মুসলমানরা ঈদে ছাগলও কোরবানি দিতে পারে না। গত ১০ বছর ধরে চলে আসছে এই নিয়ম। জানা গেছে, ২০০৭ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের সন্তকবির নগরের মুসহারা গ্রামে কবরস্থানের পাশে হোলি উৎসবের আগেরদিন দহন আয়োজন চলছিল। হোলিকা দহন অত্যন্ত ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয়। গাছের শুকনো ডাল বা কাঠসহ অন্যান্য দাহ্যবস্তু সংগ্রহ করে সু-উচ্চ একটি থাম বানিয়ে তাতে অগ্নিসংযোগ করে ‘হোলিকা দহন’ পালিত হয়। এর পরের দিন হয় রঙ খেলা তথা হোলি উৎসবের মূল পর্ব। কিন্তু মুসলমানদের কবরস্থানের পাশে এমন আয়োজনে গ্রামের মুসলিম বাসিন্দারা আপত্তি জানায়। তো এমন উৎসবে বাধা পড়ার প্রতিক্রিয়ায় হিন্দুরা হন অসন্তুষ্ট।
পরিস্থিতি খারাপ দিকে মোড় নেয়।এই নিয়ে শুরু হওয়া যুক্তিতর্কের লড়াই শারীরিক লড়াইয়ে রূপ নিতে যাচ্ছিল। উত্তপ্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় প্রশাসন এক ফয়সালা নিয়ে আসে সামনে। উভয় পক্ষের নেতাদের ডেকে এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করায়। সেই চুক্তি মোতাবেক স্থির হয়- কোরবানির ঈদে মুসলমানরা পশু জবাই করতে পারবে না আর হোলির সময়ে হিন্দুরা ‘হোলিকা দহন’ বা হোলির দহন (চাঁচর) উৎসব করবে না। উভয় পক্ষের নেতারা চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর থেকে এখন পর্যন্ত এটাই নিয়ম হিসেবে চলে আসছে মুসহারা গ্রামে। জানান স্থানীয় ধরম সিংহবা পুলিশ স্টেশনের ইনচার্জ শিব বরন যাদব।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কোরবানির ঈদের সময়ে এই গ্রামের মুসলমানদের ছাগলগুলো জড়ো করে জেলা ভেটেরিনারি ডিপার্টমেন্টে জমা করা হয়। ঈদ-উৎসবের ৩ দিন পার হয়ে যাবার পরে যার যার ছাগল-বকরি ফিরে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, ঈদের ৩ দিন পর মুসলমানরা গ্রামে বকরি বা ছাগল জবাই করে। এরপর উৎসব মানায় তারা যাতে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের লোকজনই জমায়েত হয়।