যে যুদ্ধে ‘বিষধর এক পা, দুই পা ’ ছিল প্রধান অস্ত্র
কলকাতা টাইমস :
যুদ্ধক্ষেত্রে সাধারণ গোলা-বারুদকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কিন্তু যুদ্ধে সাপের ব্যবহার! এ কথা কি কখনো কেউ কল্পনা করেছেন? সে আবার সাপই হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রের সামরিক অস্ত্র! ব্যাপারটি অদ্ভুতই বটে।
কিন্তু যুদ্ধের ইতিহাসে ভিয়েতনাম যুদ্ধে সামরিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয় কয়েক শ বিষধর কালকেউটে সাপ।
সেই যুদ্ধ আমেরিকাকে নাকানি-চোবানি খাইয়ে ছেড়েছিল। এখন থেকে প্রায় ৬০ বছর আগে বিশ্বব্যাপী ঠান্ডা লড়াইয়ের উত্তেজনার মধ্যে শুরু হয় ভিয়েতনাম যুদ্ধ। ২০ বছর স্থায়ী ওই যুদ্ধে পরাজিত হয় আমেরিকা । মার্কিনিদের জন্য বেদনার এই যুদ্ধে নানা মাত্রার হিংস্রতা হয়েছিল। যুদ্ধের কৌশলে ছিল নতুনত্ব।
ভিয়েতনামের সামরিক বাহিনীর যুদ্ধের কৌশলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশল ছিল সুড়ঙ্গ। মার্কিন বাহিনীর হামলা এড়াতে ভিয়েতনামি সেনারা সুড়ঙ্গ ব্যবহার করতো। প্রতিরক্ষাবুহ্য হিসেবে বেশ কিছু সুড়ঙ্গ তৈরি করেছিল তারা। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা থেকে বাঁচতে সেই সুড়ঙ্গ ব্যবহার করা হত।
তবে ভিয়েতনামের ওই সুড়ঙ্গের খবর পৌঁছে গিয়েছিল মার্কিন সেনাবাহিনীর কানে। তাদের শায়েস্তা করতে নতুন কৌশলের আশ্রয় নেয় মার্কিনিরা। তারা বড় বড় হিংস্র ইঁদুর ছেড়ে দেয় সুড়ঙ্গে। ইঁদুরের কামড়ে অনেক ভিয়েতনামি সৈন্য আহত হয়। তখন বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে পড়ে যায় ভিয়েতনামের সামরিক বাহিনী।
পরবর্তীতে ভিয়েতনামের বাহিনী ইঁদুরের বিকল্প কিছু চিন্তা করে সাপ ব্যবহারের পরিকল্পনা করেন।
এদিকে ভিয়েতনামি সেনাবাহিনীর মতো মার্কিন বাহিনীও সুড়ঙ্গ পথ ব্যবহার করতো। যেসব সুড়ঙ্গ বেশি ব্যবহার করতো মার্কিনিরা, সেগুলোকে ঘিরে নকশা করা হয়। এরপর বাঁশের মধ্যে বিষধর সাপ ঢুকিয়ে তা সুড়ঙ্গে রেখে দেওয়া হয়েছিলো। যা জানতেই পারেনি মার্কিন সেনারা।
যখন মার্কিন সেনারা সুড়ঙ্গে প্রবেশ করে, তখন সাপগুলো বাঁশ থেকে বেরিয়ে ছোবল দেয়। এ কালকেউটের ছোবলে সেনারা এক পা বা দুই পা’র বেশি এগোতে পারতো না। দুই এক পা এগোতেই তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। যে কারণে এই সাপদের ভিয়েতনামিরা ‘এক পা’ অথবা ‘দুই পা’ বলে ডাকতো।