সম্পূর্ণ নিরাপদ ‘ভেষজ ওষুধ’ দিয়ে করোনা মারার পথে ভারত
কলকাতা টাইমস :
করোনাভাইরাসজনিত রোগ কভিড-১৯ এ আক্রান্তদের সারিয়ে তুলতে ভেষজ চিকিৎসা নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালাচ্ছে ভারতে। ভারতের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কম্পানি সান ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড জানিয়েছে, করোনা চিকিৎসায় তারা সম্ভাব্য একটি ভেষজ ওষুধের পরীক্ষা শুরু করেছে।
এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, একিউসিএইচ নামের এই ওষুধের পরীক্ষা এখন মাঝমাঝি পর্যায়ে রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী অক্টোবরের মধ্যেই চূড়ান্ত ফলাফল এসে যাবে।
সান ফার্মাসিউটিক্যালস জানিয়েছে, একিউসিএইচ নামের এই ওষুধটি উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলের লতানো গুল্ম কক্কুলাস হিরসাটাস থেকে নিষ্কাশন করা হয়েছে। এই ভেষজ উদ্ভিদটি এশিয়া ও আফ্রিকায় ওষুধ হিসেবে বহুল প্রচলিত। এর হিন্দি নাম‘ফরিদ বুটি’। আর সংস্কৃত ভাষায় এটি‘পাতাল গারুদি’নামে সমধিক পরিচিত।
ওষুধ কম্পানিটি বলছে, তারা ভারতজুড়ে ১২টি চিকিৎসা কেন্দ্রে ২১০ জন রোগীর ওপর এই ওষুধটি প্রয়োগ করবে। তারা এরই মধ্যে পরীক্ষা করে দেখেছে যে, এই ওষুধের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। মানবদেহের জন্য যে এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। অর্থাৎ তাদের দাবি অনুযায়ী এই ওষুধে করোনা নিরাময় না হলেও রোগীদের কোনো ক্ষতি হবে না।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে কম্পানিটি আরো জানায়, একিউসিএইচ ওষুধটি আসলে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হচ্ছিল। সেই সঙ্গে ল্যাবরেটরিতে এটির ভাইরাসবিরোধী বৈশিষ্ট্যও দেখা গেছে। এ কারণেই করোনা চিকিৎসায় তারা এটি ব্যবহারেরে উদ্যোগ নিয়েছে।
বিশ্বজুড়ে করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে যে প্রতিযোগিতা চলছে তাতে সামিল রয়েছে ভারতের দুই ওষুধ কোম্পানি গ্লেনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং স্ট্রাইডস ফার্মা সায়েন্স লিমিটেড। তবে এর আগে সেখানকার কোনো ওষুধ কম্পানি ভেষজ নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালায়নি। এক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করলো সান ফার্মা।
এমনিতেও ভারতে ভেষজ চিকিৎসার কদর রয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ভেষজ চিকিৎসার ভক্ত। সেখানে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর তিনি দেশবাসীকে এই রোগ ঠেকাতে ভেষজ ওষুধ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
তখন মোদি ভারতীয়দের যে ভেষজ ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন সেটি হলো ‘কাধা’। তুলসি পাতা, শুকনো আদা, দারুচিনি, গোল মরিচ, কিশমিশ ইত্যাদি একসাথে মিশিয়ে এটি তৈরি করা হয়।
উল্লেখ্য, ভারতে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৬ হাজার ৬৪৯ জন। আক্রান্তের হিসাবে করোনার মৃত্যুপুরী ইতালিকে টপকে বিশ্বে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে ভারত।