September 30, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

সিনেমাকে হার মানায় ইন্দিরা ও ‘এনার’ প্রেমপর্ব 

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

কদিকে ভারতের তথাকথিত ‘‌ফার্স্ট ফ্যামিলি’‌র সুন্দরী কন্যা, আর অন্যদিকে জাতীয় রাজনীতিতে সদ্য পা রাখা এক যুবক। কোনও ছবির চিত্রনাট্যকেও হার মানাবে ইন্দিরা ও ফিরোজ জাহাঙ্গীর খানের বিবাহপর্ব।

বাবা জওহরলাল নেহরুর আপত্তি সত্বেও ১৯৪২ সালে ফিরোজকে বিয়ে করেন ইন্দিরা। কিন্তু বিয়ের কয়েক বছর কাটতে না কাটতেই নাকি দু’‌জনের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয়। ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে লেখা ‘‌ইন্দিরা:‌ ইন্ডিয়াজ মোস্ট পাওয়ারফুল’‌ বইয়ে এমনটাই দাবি করেছেন সাংবাদিক সাগরিকা ঘোষ।

তিনি লিখেছেন, স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর দিল্লির তিন মূর্তি ভবনে এসে ওঠেন জওহরলাল নেহরু। মেয়ে–জামাইয়েরও ঠাঁই হয় সেখানে। এমনিতে শ্বশুর মশাইকে বেশ মান্যিগণ্যি করতেন ফিরোজ। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা শ্বশুরের নজরদারির মধ্যে থাকায় ঘোর আপত্তি ছিল তার। ‘‌প্রধানমন্ত্রীর জামাই’‌ হিসাবে নিজের পরিচিতিও বিঁধতে শুরু করে তাকে। স্ত্রীর সঙ্গে দুরত্ব আরও বাড়তে শুরু করে।

সেই সময় তাকে নিয়ে মহিলা ঘটিত কেচ্ছা সামনে আসতে শুরু করে। স্ত্রী ও শ্বশুরের কানে যাতে পৌঁছায় ফিরোজ নিজে থেকেই নাকি সেই ব্যবস্থা করতেন। তারকেশ্বরী সিনহা, মেহমুনা সুলতান এবং সুভদ্রা জোশীর মতো সুন্দরী সাংসদদের সঙ্গে নিজের ঘনিষ্ঠতার কথা সর্বত্র জাহির করে বেড়াতেন। তারকেশ্বরী সিনহা অবশ্য ফিরোজের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বরাবর অস্বীকার করে এসেছেন।

তার প্রশ্ন ছিল, ‘একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ বা নৈশভোজ সারলেই একজন পুরুষ ও মহিলাকে নিয়ে গুজব ছড়ানো কি খুব প্রয়োজন?’ এ ব্যাপারে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গেও নাকি একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছিল তার। কিন্তু স্বামীকে নিয়ে যাবতীয় গুজব উড়িয়ে দিয়েছিলেন ইন্দিরা।

তবে ইন্দিরা না মানলেও, ঘনিষ্ঠ মহলে তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। ইন্দিরাকে সকলেই চিনতেন। বরাবর সোজাসাপটা কথা বলতে পছন্দ করতেন তিনি। কিন্তু স্বামীঅন্ত প্রাণ বলতে যা বোঝায়, তা একেবারেই ছিলেন না। এমন অবস্থায় ফিরোজের সঙ্গে তার বিচ্ছেদ না হয়ে যায়, এই চিন্তাতেই ভুগতেন সকলে।

তবে নেহরু কন্যেও দমে যাওয়ার পাত্রী ছিলেন না। স্বামীর লাগামছাড়া জীবন যাত্রা নিয়ে জল্পনার শেষ ছিল না। তারমধ্যে তাকে নিয়েও নানা ধরনের কথাবার্তা ভেসে আসতে শুরু করে। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৯, দীর্ঘ তেরো বছর জওহরলাল নেহরুর ছায়াসঙ্গী ছিলেন এমও মাথাই। নেহরুর ব্যক্তিগত সচিবও ছিলেন তিনি। সেই সময় তার সঙ্গেই নাকি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ইন্দিরা।

বাবার সচিবটিকে প্রথমে নাকি বিলকুল পছন্দ করতেন না তিনি। এডউইনা মাউন্টব্যাটেন, বিজয়লক্ষ্মীর সঙ্গে বাবার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে যেমন আপত্তি ছিল, তেমনি বাবা কারও ওপর নির্ভারশীল হয়ে পড়ুন তেমনটাও চাননি ইন্দিরা। কিন্তু সাহস, অধ্যাবসায়, কাজের প্রতি নিষ্ঠা, একাধিক ভাষায় দক্ষতা এবং কথাবার্তায় বুদ্ধিমত্তার ছোঁয়া—সব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত মোহ এড়াতে পারেননি তিনি।

নিজের আত্মজীবনী  ‘‌রেমিনেন্সেস অফ দ্য নেহরু এজ’‌-এ ইন্দিরার সঙ্গে ১২ বছরের সম্পর্কের কথা মেনেছেন মাথাইও। ক্লিওপেট্রা, পাওলিন বোনাপার্ট এবং রোমান দেবী ভেনাসের সঙ্গে ইন্দিরার সৌন্দর্য্যের তুলনা করেছেন তিনি। এমনকী নেহরু কন্যার সঙ্গে নিজের শারীরিক ঘনিষ্ঠতারও বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। সেই সময় ইন্দিরা নাকি গর্ভপাতও করিয়েছিলেন।

ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে নিজের সম্পর্কের খুঁটিনাটি তুলে ধরলেও, সেগুলি বইয়ে ছাপতে দেননি মাথাই। শাশুড়ির সঙ্গে ঝামেলার পর, সঞ্জয় গান্ধীর স্ত্রী মানেকা গান্ধীর ব্যক্তিগত উদ্যোগেই নাকি সেগুলি ছেপে বেরোয়। মাথাইয়ের লেখা যে নেহরু পরিবারের প্রভূত ক্ষতি করেছিল তা স্বীকার করেছেন ইন্দিরার সহযোগী ও প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা নটবর সিং। মাথাই আদতে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র হয়ে কাজ করতেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১৩ বছর নেহরুর ছায়ীসঙ্গী থাকাকালীন নেহরুর দপ্তর থেকে পাস হওয়া প্রতিটি ফাইলই নাকি সিআইএ-র কাছে পৌঁছে দিতেন মাথাই। ১৯৫৯ সালে তার বেআইনি লেনদেনের কথা ফাঁস করে দেন ফিরোজের বন্ধু নিখিল চক্রবর্তী। চূড়ান্ত অপমানিত হয়ে চাকরি ছাড়তে হয় তাকে। তাই প্রতিশোধ নিতেই নেহরু কন্যা সম্পর্কে মনগড়া কাহিনী লিখে গিয়েছেন বলে দাবি নটবর সিংয়ের।

Related Posts

Leave a Reply