শুনে অবাক হবেন, যে গ্রামে বাস করেন শুধু এই মানুষটাই!
কলকাতা টাইমস :
বাড়িতে একা একা তো কত মানুষই না থাকেন। কাজের ক্ষেত্রে অনেককেই বাড়িতে একা থাকতে হয়। অনেক কারণেই অনেক মানুষ বাড়িতে দিনের পর দিন একা থাকেন।
কিন্তু তাই বলে একটা গোটা গ্রামে একা থাকা! এমনটা কি সম্ভব? এ অসাধ্যই সম্ভব করে দেখিয়েছেন এক ব্যক্তি। টানা ১০টা বছর ধরে একটা গ্রামে একা কাটিয়ে ফেলেছেন সেই ব্যক্তি!
চীনের জুয়েনসানসে গ্রামের জনসংখ্যা ১জন। গত ১০ বছর ধরে লিউ সেনজিয়া নামের এই ব্যক্তি একাই থাকছেন সেই গ্রামে। ১০ বছর আগে এ গ্রামের ছবিটা কিন্তু এমন ছিল না।
তখন ওই গ্রামে অনের মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক সম্পদের ঘাটতি হওয়ার জন্য ক্রমশ গ্রাম ছেড়ে সবাই চলে যেতে থাকে। বয়স্ক যারা যেতে পারেননি, তারা মারা যান।
২০০৬ সাল থেকে শয্যাশায়ী মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে একা গ্রামে থাকতে শুরু করেন লিউ। এক বছরের মধ্যে তার মা এবং ভাইও মারা যান। তখন থেকে গ্রামে একেবারে একা বসবাস করছেন তিনি।
এত বছর ধরে একা থাকতে থাকতে একাকিত্বই লিউয়ের সঙ্গী হয়ে গিয়েছে। তিনি শিখেছেন কীভাবে একা বেঁচে থাকতে হয়। তিনি ভেড়া প্রতিপালন করা শুরু করেন।
কীভাবে এই পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন, আর কীভাবেই বা বেঁচে রয়েছেন, সেই বিষয়ে লিউ জানিয়েছেন, প্রথম প্রথম গোটা গ্রামে একা থাকতে তার খুবই কষ্ট হত। অনেকদিন তিনি ঘুমাতে পারেননি।
তিনি জানিয়েছেন, রাতে যখন হিংস্র কুকুরের ডাক শুনতেন, ভয়ে তিনি দুচোখের পাতা এক করতে পারতেন না। সঙ্গী হিসেবে ভেড়া প্রতিপালন শুরু করেন। ওই ভেড়াগুলো ছাড়া তার আর কোনো সঙ্গী নেই। এভাবেই দিনের পর দিন একা থাকতে থাকতে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় বনবিভাগে বন পরিদর্শক হিসেবে কাজ করেন লিউ। সারা মাস কাজ করে মাত্র ১০৭ ডলার রোজগার করেন তিনি। খাবার আর জল সংগ্রহের জন্য তাকে অনেক দূরে যেতে হয়। কিন্তু কীভাবে এত কষ্ট করে বেঁচে রয়েছেন তিনি? তার কি ওই গ্রাম ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না?
এমন প্রশ্নে লিউ জানালেন, কষ্টকর ওই পরিবেশে তার থাকতে কোনো অসুবিধা হয় না। তিনিও মাঝে মাঝে চান গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে। কিন্তু এত বছর গ্রামে থাকার পর গ্রামের প্রতি তার একটা মায়া তৈরি হয়েছেঅ তাই ভাবলেও গ্রাম ছেড়ে তার আর যাওয়া হয় না।