মাত্র ১০ সেকেন্ড দরকার মন কাড়তে !
জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিঁড়ির ধাপ দ্রুতবেগে টপকে যাচ্ছেন আপনি। তবে মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই সঠিক স্থানে থামতে হবে আপনাকে। ভালো লাগুক আর না-ই লাগুক এমন পরিস্থিতি জীবনের যেকোনো মুহূর্তে সামনে আসতে পারে।
কিন্তু ওই ১০ সেকেন্ডের মধ্যে অবশ্যই যথাস্থানে পৌঁছতে হবে আপনাকে। এ দায়িত্ব কিন্তু আপনার কাঁধেই বর্তাবে।
যেকোন কাজ আদায়ের জন্য যেকোন মানুষকে চোখের পলকে প্ররোচিত করা বা পটিয়ে ফেলা এতো সহজ কাজ নয়। আবার অসম্ভবও নয়। যেকোন মানুষকে যেকোন কাজের জন্য মাত্র ১০ সেকেন্ডের মধ্যে রাজি করিয়ে ফেলার এমন কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন এক বিশেষজ্ঞ। পরামর্শগুলো হলো-
১. আপনার বৈশিষ্ট : মানুষ তাদেরই খোঁজে যারা সৎ, বিশ্বাসযোগ্য এবং নির্ভরযোগ্য। এমন একজনকে খোঁজে যাকে দেখলেই ভালো লাগে। রিজ্যুমি দেখে কিন্তু আপনার প্রেমে পড়বে না প্রতিষ্ঠান। বরং বাহ্যিক উপস্থিতি, আচরণ, কাজ এবং কথা-বার্তায় আপনাকে পছন্দ করবেন সবাই। এসব ভালো লাগার নিশানা দেখে আপনার মুখ খোলার আগেই বেছে নিতে পারেন প্রতিষ্ঠান।
আচরণ, কথা-বার্তা এবং নার্ভ সিস্টেমের মধ্যে সমন্বয় না করতে পারলে ব্যর্থ হবেন আপনি। এসবের সমন্বয়েই সর্বোচ্চ আন্তরিকতার মাধ্যমে যেকোন মানুষকে আয়ত্তে আনতে পারেন মাত্র ১০ সেকেন্ডেই।
২. রিল্যাক্স : আপনি উত্তেজিত এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকা অবস্থায় কীভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেন। এমন পরিস্থিতিতে গভীরভাবে নিঃশ্বাস নিন বুক ভরে। তারপর ধীরে ধীরে ছাড়ুন। ঠিক দশ সেকেন্ড পর আবারও এমনভাবে নিঃশ্বাস নিন। মুহূর্তে ধীর স্থির হয়ে যেতে পারেন আপনি। এর মাধ্যমে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসে। এ অবস্থায় অনেক কঠিন কাজও খুব সহজে করে ফেলতে পারবেন। এমনকী মাত্র ১০ সেকেন্ডে যেকোন মানুষকে বশ করতে পারবেন।
৩. আনন্দ প্রকাশ : নিজের মনেই নানা শব্দে মনের আনন্দ প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু অন্য মানুষ এসব শব্দ শুনে আপনাকে নির্বোধ বলে মনে করতে পারে। ভালো শ্রোতা হোন। কেউ কিছু বলার সময় কথা বলবেন না।
কেউ বলা শেষ করার পরও দুই সেকেন্ড চুপ থাকুন। তাদের শেষ নাও হয়ে থাকতে পারে। এরপর বলা শুরু করুন। বক্তা বুঝতে পারে কেউ তার কথা শুনছে না। আর খারাপ শ্রোতাদের প্রতি তাদের মনোভাব না হয়েই থাকে।
৪. মনোভাবের পরিষ্কার প্রকাশ : সব ক্ষেত্রে অন্যকে আয়ত্তে আনারও প্রয়োজন হয় না। এ পদ্ধতিতে নিজের বক্তব্যকে একত্রীভূত করে প্রকাশ করা প্রয়োজন। যাবতীয় বক্তব্য পরিষ্কারভাবে প্রকাশ করার মাধ্যমে অন্যের কাছ থেকে সম্মতিসূচক জবাব পেতে বেশি বেগ পেতে হবে না।
তবে এমন বক্তব্য প্রকাশের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখবেন। যেমন- সমস্যা যতো দ্রুত সম্ভব সমাধানের তাগাদা থাকতে হবে।আপনার দেয়া সমাধান অদ্বিতীয় এবং এর বিকল্প নেই। আপনার সমাধান বিক্রির জন্য নয়। বক্তব্যের পর একজনের কাছ থেকে হলেও হ্যাঁ; শব্দটি আদায় করতে হবে। প্রশ্নাতীতভাবে আপনার সমাধান প্রমাণিত বলে গণ্য হতে হবে।
৫. ইচ্ছাপূরণ : অনেকে বলেন, অন্যের মত আদায়ের জন্য আপনাকে তাদের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় মানুষ সাধারণত স্বার্থহীনভাবেই সবকিছু চিন্তা করেন। আপনার বক্তব্যের মাঝে কেউ তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় মাথায় আনার আগেই ইতিবাচক মতামত বাগিয়ে নিতে হবে আপনাকে।
তবুও তাদের এসব চাহিদা মাথায় রেখে বক্তব্য সাজাতে পারেন, যেখানে জরুরি ভিত্তিতে তাদের চাহিদা পূরণের আভাস থাকতে পারে। আর এর ফলে আপনার প্রতি তাদের জবাব হ্যাঁ-সূচকই হবে। তাদের চাহিদায় থাকতে পারে-স্বীকৃতি, বিনোদন, নিবৃত্তি, ধর্ম, পারিশ্রমিক, ফলাফল, প্রতিশোধ এবং প্রেম।
৬. আপত্তি : প্রত্যেক মানুষেরই অভিযোগ-অনুযোগ থাকতে পারে। বিশাল ক্ষমতায় অবস্থান করে বিশাল দায়িত্বশীলতা। অধিকাংশ মানুষের প্ররোচিত করার ক্ষমতা থাকে না। এ গুণ অর্জন করতে হলে অনেক চর্চা ও পরিশ্রম দরকার।
তবে এটা শুধু বশ করার বিষয় নয়, এটি যোগাযোগের বিষয়। স্রেফ দুটো মানুষের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ যাদের মধ্যে দৈহিক ও মানসিক দূরত্ব রয়েছে। এটা অর্থের কোনো বিষয় নয়, স্রেফ দুটো মানুষের মনের মিলের বিষয় মাত্র।