অবাক করবে এখানে প্রতি ঘণ্টায় একটি করে নকল বিয়ে
কলকাতা টাইমস :
আপনি শুনলে অবাকই হবেন ব্রিটেনে প্রতি ঘণ্টায় একটি করে বিয়ে হয়, তবে সেটা আসল নয় নকল বিয়ে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৭,৬০৬টি বিয়ের তথ্য পেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছেন মাত্র ৯০ জন। গত বছর নকল বিয়ে করা প্রতি ৮৫ জনে মাত্র একজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
লেবার পার্টি অভিযোগ করেছে, ভেঙে পড়া অভিবাসনব্যবস্থা চালিয়ে যাচ্ছে বলে ক্ষমতাসীন জোট সরকার। গত বছর দেশটির সব থেকে প্রবীণ রেজিস্ট্রার হুঁশিয়ারি দিয়েছে, শহুরে এলাকায় আইনি প্রক্রিয়ার সম্পন্ন হওয়া ৫টি বিয়ের অন্তত একটি সন্দেহজনক।
স্থানীয় রেজিস্ট্রেশন সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মার্ক রিমানের মতে, প্রতিবছর ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ১ লাখ ৭৩ হাজার আইনি বিয়ের ১৫ হাজার নকল বিয়ে হতে পারে।
অভিবাসন আইন এড়ানোর জন্য নকল বিয়েকে ব্যবহার করা হয় বলে অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মার্ক উল্লেখ করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, আশঙ্কার সঙ্গে বাস্তবতার সংগতি রয়েছে। ২০১৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ১৮২৪টি সন্দেহজনক বিয়ের তথ্য আসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। বছরের বাকি দুই মাসের হিসাব যোগ করলে মোট নকল বিয়ের সংখ্যা দাঁড়াবে ২১৮৯টি, যা ২০০৬ সালের তুলনায় ৮ গুণ বেশি।
ক্ষমতাসীন জোট সরকার নকল বিয়ের রিপোর্ট দাখিল করতে একটি স্কিম চালু করে। ২০১২ সালের শেষ তিন মাসে জমা হয় ৯৮৪টি নকল বিয়ের তথ্য। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তথ্যের সংখ্যা ৫৭৮২টি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা হওয়া নকল বিয়ের মোট তথ্যের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬০৬-এ। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় একটি নকল বিয়ে। ২০১২ থেকে ২০১৩’র মধ্যে নকল বিয়ের সংখ্যা অর্ধেকেরও বেশি বেড়েছে।
থিংক ট্যাংক প্রতিষ্ঠান সিভিটাসের প্রধান নির্বাহী ডেভিড গ্রিন বলেন, নকল বিয়ে দীর্ঘদিনের একটি সমস্যা। এ সত্ত্বেও নির্বাসনের সংখ্যা এত কম হওয়াটা বিস্মিত হওয়ার মতো।
তিনি বলেন, যদি মানুষের কাছে এমন ধারণা পৌঁছায়, ইংল্যান্ডে নকল বিয়ে করে রেহাই পাওয়া যায় তাহলে নকল বিয়ের ঘটনা আরো বেশি ঘটবে। প্রকাশিত পরিসংখ্যান যে সঙ্কেত দিয়েছে তাতে নকল বিয়ে করে ধরা পড়লেও তেমন কিছুই হবে না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে ধাপ্পা দিতে যারা নকল বিয়ের দিকে ঝুঁকছে তাদের বিরুদ্ধে সরকার এরই মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু করেছে।
সংসদে অভিবাসন মন্ত্রী জেমস ব্রোকেন শায়ার বলেন, বিয়েব্যবস্থা অপব্যবহার বন্ধ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ সরকার। গ্রেপ্তার আর নির্বাসন সবক্ষেতে এ ইঙ্গিত দেয় না যে, কোন বিয়ে নকল ছিল। ইমিগ্রেশন ম্যারেজ ফ্রড ইউকের ডেলিন এলৌয়েন বলেন, টাকার বিনিময়ে বিয়ে যেমন বাড়ছে তেমনি অন্য দেশের নাগরিকদের প্রতারণার প্রেমের ফাঁদেও পড়ছেন ব্রিটিশ নাগরিকরা।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ মেয়েরা তিউনিশিয়া, মরোক্কো, গাম্বিয়ার মতো দেশগুলোর পুরুষদের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধছেন। বসবাসের অনুমতি পাওয়া মাত্রই আলাদা হয়ে যাচ্ছেন তারা।