ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বেতন ২১ কোটি এই সিইও’র

কলকাতা টাইমস :
খেটে খাওয়া আর দশটা মানুষের মতই তার চেহারা। অথচ এই মানুষটি একাই একটি ব্র্যান্ড। যেন তেন ব্র্যান্ড নয় ১০০ কোটি মানুষ তাকে চেনে, জানে এবং পন্যের গায়ে তার চেহারার ছবি ছাপা আছে দেখে ভরসা পায়, এমন ব্র্যান্ড। ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম মসলা বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান এমডিএইচ মসলার প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ধর্মপাল গুলাটির বয়স এখন ৯৪। চরম দারিদ্র পেরিয়ে, বহু লড়াই লড়ে, হাজারো চড়াই উৎরাই পেরিয়ে আজ তার কোম্পানির দাম ১৫০০ কোটি টাকা । তিনি এর সিইও হিসেবে বেতন নেন ২১ কোটি যা ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বেতন নেবার রেকর্ড।
এ গল্পের শরু পাকিস্তানের শিয়ালকোটে। কেননা সেখানেই জন্মে ছিলেন ধর্মপাল গুলাটি। যখন তার বয়স ১০ বছর তখন স্কুল ছেড়ে দেন তিনি। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন তার সেখানেই সমাপ্ত হয়। তার বাবার ছিলো মসলার ব্যবসা। বাবা তাকে একরকম জোর করেই সেখানে বসিয়ে দেন। পরে বাবার ব্যবসা ছেড়ে নামলনে সাবান বেচার ব্যবসায়। ১৯৩০ সাল অল্প দিনেই ধর্মপাল ভালো টাকা আয় করে ফেললেন। এরপর বেশ কয়েকটা ব্যবসায় নামলেন একসাথে। প্রতিটাতেই সফল হলেন তিনি।
কিন্তু কপাল পুড়লো ধর্মপালের একেবারে হুট করেই। সময়টা ছিল ১৯৪৭ সাল। একদিন তিনি জানলেন দেশ ভাগ হয়ে গেছে। ভারত আর পাকিস্তান নামে দুটো আলাদা আলাদা দেশ হয়ে গেছে। সব কিছু পেছনে ফেলে শত শত হীন্দু আর শিখ পরিবারের সাথে তিনি ভারতে চলে আসেন। তিন সপ্তাহ পরে ১৯৪৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ভারতের অমৃতসারে পৌঁছান ধর্মপাল, কপর্দকশূন্য এক রিফিউজি হয়ে।
পাকিস্তান ছাড়ার আগে তার বাবা ১৫০০ রুপি সাথে করে এনেছিলেন। সেটা দিয়ে একটা টাঙ্গা, মানে ঘোড়ার গাড়ি কেনেন ধর্মপাল। মাত্র দুই পয়সার বিনিময়ে লোকজনকে এক জায়গা থাকে আরেক জায়গায় পৌছে দিতেন। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী থেকে শুরু হলো গাড়োয়ানের জীবন। দুর্বিষহ সে দিনগুলোতে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে কেটেছিল ধর্মপালের। পরে ঘোড়ার গাড়িটা বিক্রি করে যা টাকা পেলেন তাই দিয়ে শুরু করলেন বাবার সেই পুরোনো ব্যবসা। শুরু করলেন তার নিজের মসলার দোকান।
এটাই এক সময় তার ভাগ্য ফিরিয়ে দেয়। বিক্রি শুরু করার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ভারতের গৃহিনী মাঝে দুর্দান্ত জনপ্রিয়তা পায় এমডিএইচ মসলা। এর পর আর কখনই পিছন ফিরে তাকাননি ধর্মপাল গুলাটি।