অবাক হবেন জেনে, শুধু ফুটবল নয়, একটা সময় পপকর্ন খাওয়াও ছিল নিষিদ্ধ!
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
১৩১৪ সালের ১৩ এপ্রিল। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় এডওয়ার্ড ফুটবল খেলাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেন। ফুটবল অসম্ভব শব্দদূষণ এবং নানারকম ঝামেলার সৃষ্টি করে। এটাই ছিল এই নিষেধাজ্ঞার পেছনের কারণ। ১৩৬৩ সালে তৃতীয় এডওয়ার্ড ব্যাপারটিকে আরও বড় আকার দেন। শুধু ফুটবল নয়, আর্চারি বাদে সমস্ত খেলাকে নিষিদ্ধ করে দেন তিনি। সমাজের উঁচু পর্যায়ের মানুষেরা এই খেলা খেলতে পারেন না, এই কারণে ফুটবল নিষিদ্ধ হয়ে যায় সেখানে অনেক দিনের জন্য।
কী? শুনে কোনো অবিশ্বাস্য গল্প মনে হচ্ছে? বর্তমান সময়ে এমন অনেক কিছু আমরা ব্যবহার করছি, যেগুলো আগে এভাবেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ফুটবলের মতো এমন অতীতে নিষিদ্ধ হওয়া জিনিসগুলোকে নিয়েই আজকে আমাদের এই আয়োজন।
বড়দিন-
বড়দিন বা ক্রিসমাসের মতো একটি ব্যাপার কখনো নিষিদ্ধ হতে পারে? কিন্তু সেটাই হয়েছিল ১৬৫৯ সালে। পিউরিটানসদের কাছে বড়দিনের মানেটাই অন্যরকম। এটি এমন জাঁকজমকভাবে পালন যাতে না করা হয় এজন্যই ক্রিসমাসকে পাগান হলিডে তকমা দিয়ে নিষিদ্ধ করেন তারা। ১৬৪৪ সালে ইংল্যান্ডে বন্ধ করা হয় এই উদযাপন। ১৬৬০ সাল পর্যন্ত সেখানে এই নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল।
দাবা-
ইতিহাসের নানা সময়ে নানা দেশে দাবা খেলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ফ্রান্স, পার্সিয়া, জাপান এবং মিশর। আফগানিস্তানে কিছুদিন আগেও নিষিদ্ধ এই খেলাটি বর্তমানে নিষিদ্ধ আছে সৌদি আরবে। ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দে পারস্যে মুসলিম শাসক এলে দাবা খেলা নিষিদ্ধ হয়ে যায়। সে সময় এর কারণ হিসেবে দেখানো হয় দাবা খেলাকে কেন্দ্র করে জুয়া খেলাকে। তালিবানদের কাছে দাবা খেলা ধর্মের প্রতি মানুষকে উদাসীন করে দেওয়ার রাস্তা ছিল। আর সৌদি আরব দাবাকে নিষিদ্ধ করেছে শুধুই সময় নষ্ট করার মাধ্যম বলে।
পপকর্ন-
মুভি দেখতে গেলে যে পপকর্ন ছাড়া আমাদের একেবারেই চলে না, সেই পপকর্ন একটা সময় মুভি থিয়েটারে নিষিদ্ধ ছিল। সে সময় থিয়েটারে গিয়ে সাইলেন্ট মুভি দেখা ছিল অভিজাত শ্রেণির কাজ। আর তাই সেখানে ব্যবহার করা হতো দামি কার্পেট। সেই কার্পেটে কেউ পপকর্ন ফেলবে সেটা মোটেই চাইতেন না মালিকপক্ষ। আর তাই, পপকর্ন জিনিসটিকেই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময় গ্রেট ডিপ্রেশনের সময় মুভি সবার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং মানুষ পপকর্ন নিয়ে মুভি দেখতে শুরু করে।
মহিলাদের ট্রাউজার পরা-
১৮০০ সালে প্যারিস পুলিশ বাহিনী ঘোষণা করে যে, যদি কোনো মহিলা পুরুষের পোশাক পরিধান করে, সেক্ষেত্রে তাকে আগে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। ১৮৯২ সালে এই নিয়ম বদলে দেওয়া হয়। বদলে ঘোড়া চালানোর সময় আইন শিথিল করার কথা বলা হয়। ১৯০৯ সালে আরেকটি সংশোধনীতে জানানো হয় যে, যদি মহিলারা বাইসাইকেল চালান তাহলে প্যান্ট পরিধান করতে পারেন। একটা সময় এই আইন একেবারেই উঠিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়। তবে সেই কাজটি তখন করার কোনো ইচ্ছে ছিল না সরকারের।
মজার ব্যাপার হলো, মহিলা পুলিশ পর্যন্ত প্যারিসে শার্ট-প্যান্ট পরেই কাজ করতে শুরু করেন। তবে আইন ছিল আইনের জায়গাতেই। ২০১৩ সালে অবশেষে এই আইন একেবারের মতো বাতিল করা হয়।
মহিলাদের ক্রেডিট কার্ড –
খোদ আমেরিকাতেই এই নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল একটা সময়। মহিলারা নিজেদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারতেন না। বিশেষ করে কোন মহিলা অফিশিয়াল কোনো কাজে নিজের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারতেন না। কোনো কাজে ক্রেডিট কার্ড দরকার পরলে এর বাইরে পুরুষ আত্মীয়ের অনুমতিসহ ক্রেডিট কার্ড পেতেন মহিলারা ।
তবে ওই যে, অফিশিয়াল কাজের বাইরে ব্যবহার করতেন তারা এই কার্ড। ১৯৭৪ সালে এই বৈষম্য দূর করা হয় এবং মহিলাদেরকেও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়া হয়।