দামামা বাজার আগেই বলে দেবে লাগতে চলেছে যুদ্ধ
আপাতদৃষ্টিতে শান্ত পরিস্থিতিও যুদ্ধের পূর্বাভাস দিতে পারে। বিভিন্ন দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে অনেকেই তা অনুমান করতে পারেননি। আবার কোথাও বা নিয়মিত যুদ্ধের দামামা বাজার পরেও যুদ্ধ লাগেনি। এক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন কখন যুদ্ধ আসন্ন। এ লেখায় তুলে ধরা হলো তেমন কিছু লক্ষণ।
১. হীরা ও খনিজসম্পদের উচ্চমূল্য
যুদ্ধের সময় বিভিন্ন যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করতে উচ্চমানের ড্রিল, গ্রাইন্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি তৈরিতে হীরা ও এ ধরনের কয়েকটি খনিজ সম্পদের প্রয়োজন হয়। কোনো দেশ যদি গোপনে যুদ্ধ করার প্রস্তুতি নেয় তখন তারা বাজার থেকে প্রচুর হীরা কিনে থাকে। এতে বাজারে হীরার দাম বেড়ে যায়। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আগে জার্মানি যখন প্রচুর যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করছিল তখন নিজেদের প্রয়োজনেই তারা বাজার থেকে প্রচুর হীরা ক্রয় করে। এতে সে সময় হীরার দাম অনেক বেড়ে যায়।
২. সামরিক পোশাক ও অন্যান্য সরঞ্জাম হারানো
কোনো দেশের সামরিক বাহিনীর পোশাক, আইডি কার্ড, ব্যাজ ও অন্যান্য সরঞ্জাম যদি হারিয়ে যায় তাহলে তা মোটেই হালকাভাবে নেওয়ার উপায় নেই। কারণ শত্রুসেনারা এসব সামগ্রী চুরি করে তা পরে আক্রমণের কাজে ব্যবহার করতে পারে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের আগে নেদারল্যান্ডসের সেনাবাহিনীর কিছু পোশাক ও সরঞ্জাম হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে দেখা যায় জার্মান প্যারাট্রুপার সেনারা সেগুলো পরে নেদারল্যান্ডসে আক্রমণ করেছে।
3. রহস্যজনক বিক্ষোভ
হঠাৎ অদ্ভুত দাবি নিয়ে যদি কিছু মানুষ বিক্ষোভ করে তাহলে তাতে বিদেশি কোনো শক্তির ইন্ধন রয়েছে বলে ধারণা করা যেতে পারে। এটি অনেক সময় বিদেশি শক্তির আক্রমণের প্রেক্ষাপট তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়। রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের আগে নিজস্ব অনুচরদের দিয়ে ইউক্রেনে এ ধরনের বিক্ষোভের ব্যবস্থা করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
৪. পর্যটন বৃদ্ধি
হঠাৎ করে কোনো স্থানে পর্যটক বৃদ্ধি পেলে তা সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কোনো স্থানে আক্রমণ করার আগে বিদেশি শক্তি তাদের অনুচর ও সেনাদের সে স্থানে পর্যটনের নামে ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে পারে। পরবর্তীতে যেন সেখানে যুদ্ধ পরিচালনায় কোনো সমস্যা না হয় সেজন্যই এ ব্যবস্থা করা হয়। তাই পর্যটন অর্থনীতির জন্য ভালো হলেও তা যে সব সময় কল্যাণ বয়ে আনে এমন ধারণা ভুল। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জাপান পার্ল হারবারে আক্রমণের আগে বহু গোয়েন্দাকে পর্যটকের বেশে সেখানে পাঠিয়েছিল, যারা পরবর্তীতে জাপানি নেভিকে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করেছিল।
৫. স্থানীয় যুদ্ধাস্ত্রের দাম
যুদ্ধ করার উপযোগী অস্ত্রগুলো যখন বাজারে দাম ও চাহিদা বৃদ্ধি পায় তখন সহজেই বোঝা যায়, এগুলো কোনো সেনাবাহিনীর হাতে যাচ্ছে, যা অচিরেই যুদ্ধে ব্যবহৃত হবে। একইভাবে যখন যুদ্ধ করার নানা উপকরণের দাম বৃদ্ধি পায় তখন বুঝতে হয় কেউ এগুলো বেশি করে সংগ্রহ করছে যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে।
৬. কম্পিউটার কার্যক্রম
আধুনিক যুদ্ধের অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠেছে তথ্যপ্রযুক্তি। এ কারণে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই শুরু হয়ে যায় তথ্যপ্রযুক্তির যুদ্ধ। এর মাধ্যমে শত্রুপক্ষের কম্পিউটারে হানা দিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া অনলাইনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার তথ্য সংগ্রহ করে হামলার নকশা করা হয়। তাই হঠাৎ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার বিস্তারিত যদি কেউ সংগ্রহ করতে শুরু করে, তাহলে সতর্ক হয়ে যেতে হয়।