বিচ্ছেদ ঠেকাতে দম্পতিকে নিজের পকেটের পয়সায় বিলাসবহুল হোটেল-যাপনে পাঠালেন বিচারক
নিজেদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এরই জেরে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা করে বসেন স্ত্রী। শুধু এখানেই শেষ নয়, শ্বশুর, দেবর ও স্বামীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টারও অভিযোগ আনেন তিনি। অবশেষে তাদের ডিভোর্স ঠেকাতে এক অভিনব পদক্ষেপ নিলেন বিচারক। পরামর্শ দিলেন স্বামী-স্ত্রীকে একসঙ্গে কোনো বিলাসবহুল হোটেলে রাত কাটানোর। বীরভূম জেলা আদালতএর বিচারক পার্থ সারাটি সেন এই রায় দেন। এমনকি হোটেল ভাড়ার টাকা নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দিয়েছেন সেই বিচারক।
কিছুদিন আগে, দাম্পত্য জীবনের সমস্যা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্বামী গৌতম ও স্ত্রী অহনা। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি চলছিল বীরভূম জেলা আদালতে। শুনানির সময়ে আইনজীবী বলেন, এটা পারিবারিক ঝামেলা। দম্পতিকে পরিবারের থেকে আলাদা করে একা সময় কাটানোর সুযোগ দেওয়া উচিত।
এরপর আইনজীবীর জেরা শুনে বিচারকের মনে হয়, সমস্যা বা মনোমালিন্য রয়েছে অহনা ও গৌতমের মধ্যে। স্বামী-স্ত্রী একান্তে থাকলে কথা বলে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। এরপর শুনানি শেষে দু’জনকে একত্রে পরিবারের থেকে আলাদা কোনো হোটেলে তিনদিন থাকার নির্দেশ দেন। রায় শুনে হতভম্ব হয়ে যান গৌতম ও অহনা দু’জনেই।
এসময় পেশায় ইলেক্ট্রনিক্স মিস্তিরি গৌতম তখন জানান, তিনি খুবই সামান্য আয় করেন। তাতে হোটেলে থাকার বন্দোবস্ত করা সম্ভব নয়। এ কথা শুনে বিচারক নিজেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাদের হোটেলে থাকার খরচ বহন করার দায়িত্ব নেন এবং আগামী তিনদিন ওই দম্পতিকে হোটেলে থেকে নিজেদের সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেন।
কিছুক্ষণ আগে আদালত কক্ষে দাঁড়িয়ে যারা জানিয়ে দিয়েছিলেন কোনোভাবেই তাদের একসঙ্গে থাকা সম্ভব নয়, সেই অহনা-গৌতমই বিচারকের এমন অভিনব প্রস্তাব গ্রহণ করেন। একই সঙ্গে বিচারকের সামনে জানান, নিজেদের সমস্যা মেটানোর উদ্যোগ তারা নেবেন। সূত্রের খবর, বুধবারের মধ্যেই অনেকটা সদর্থক হয়ে উঠেছে বিচারকের এই অভিনব উদ্যোগ। মনোমালিন্য অবসানের ইঙ্গিত দিচ্ছেন যুযুধান ওই দম্পতি।