শুধুই জ্বর, নাকি মারাত্মক কোনো রোগের লক্ষণ?
কলকাতা টাইমস :
গা গরম হলে আমরা তাকে জ্বর বলি। কিন্তু এটি যে শুধুই জ্বর নাকি বড় কোনো রোগের লক্ষণ তা নিয়ে অনেকেই মাথা ঘামান না। যদিও গা গরম হওয়া মানে শুধুই জ্বর নয়। এটি হতে পারে কোনো মারাত্মক রোগের লক্ষণ। এছাড়া জ্বর হতে পারে ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া কিংবা জাপানি এনসিফ্যালেটিস রোগের লক্ষণ। সময়মতো চিকিৎসা না করলে তাই সে ধরনের জ্বরের প্রভাব শুধু গা গরম হওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এ রোগগুলোর প্রভাব হতে পারে মারাত্মক। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
ধরা পড়ে না বহু রোগ
জ্বরের জন্য আমরা যদি শুধু জ্বরেরই চিকিৎসা করি তাহলে তা প্রায়ই মোটেই কার্যকর হবে না। কারণ এ জ্বরের কারণ হয়ে থাকে ভিন্ন কোনো শারীরিক সমস্যা, যার একটি প্রভাব হলো জ্বর। এ উপমহাদেশে যেসব রোগে মানুষ আক্রান্ত হয় সেগুলোর মধ্যে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগ প্রায়ই ধরা পড়ে না। স্বাভাবিক জ্বর হিসেবেই এ ধরনের বহু রোগের চিকিৎসা করা হয়।
ডায়াগনোসিসের অভাব
মশাবাহিত বহু রোগেরই লক্ষণে মিল রয়েছে। এ কারণে শুধু লক্ষণ দেখে রোগগুলো নির্ণয় করা যায় না। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় সঠিকভাবে রক্ত পরিক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করার। যদিও বহু রোগী সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ের জন্য ডায়াগনোসিসে আগ্রহী হন না। এতে রোগটি নির্ণয় করতে না পারায় তা সঠিকভাবে চিকিৎসাও করা সম্ভব হয় না।
চিকুনগুনিয়া
এ রোগের লক্ষণ হলো জ্বরের সঙ্গে মারাত্মক ব্যথা ও অস্থিসন্ধি ফুলে যাওয়া। এছাড়া এটি হাত, পা, গোড়ালি ও কবজির মারাত্মক ব্যথার জন্য দায়ী। এছাড়া মাথাব্যথা, মাংসপেশির দুর্বলতা ও হাঁটতে অক্ষমতা দেখা যায়। এ রোগে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত রোগী অসুস্থ থাকতে পারে।
ভারতে সম্প্রতি চিকুনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। আর শীঘ্রই এ রোগটি বাংলাদেশে বিস্তার করার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতের দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে এ রোগে প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সম্প্রতি কর্ণাটক রাজ্যেই এ রোগের এক-তৃতীয়াংশ রোগী পাওয়া গেছে। তবে ভারতের ২৩টি রাজ্যে এ রোগে প্রায় ৩০ হাজার রোগী আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
সিজনাল ইনফুয়েঞ্জা ও সোয়াইন ফ্লু
নতুন ফ্লু ভাইরাসে সংক্রমণ হয়ে থাকে। এটি হলে হালকা জ্বরের সঙ্গে কাশি, সর্দি ও দেহে বথা হয়ে থাকে। পাঁচ দিন থেকে এক সপ্তাহ পর্যন্ত এ রোগের প্রকোপ থাকে। এ রোগে সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের তেমন ক্ষতি হয় না তবে এ রোগের সঙ্গে যদি হৃদরোগ, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস কিংবা ফুসফুসের রোগ থাকে তাহলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
ম্যালেরিয়া
এ রোগটি শক্তিশালী পরজীবী জীবাণুর কারণে হয়ে থাকে। এ রোগে উচ্চমাত্রায় জ্বর, বমি বমি ভাব ও মাথাব্যথা হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রোগী এক সপ্তাহে সুস্থ হয়ে যায়। তবে তবে বিভিন্ন ধরনের ম্যালেরিয়া রয়েছে। এর কোনো কোনোটি রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটায়। তাই ম্যালেরিয়া রোগের সন্দেহ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। রোগটি কোন ধরনের ম্যালেরিয়া এ বিষয়টি নির্ণয় করতে পারলে রোগের চিকিৎসায় সুবিধা হয়।