কাশ্মীর কার ? এই ইস্যুতেই প্রাণ হারিয়েছে ৬০ হাজার মানুষ !
কলকাতা টাইমসঃ
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে গত ৭০ বছরে ৬০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কাশ্মীর কার? শুধু এই বিষয়কে কেন্দ্র করে তিন তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে ভারত এবং পাকিস্তান। হিমালয়ের পাদদেশেকে কেন্দ্র করে এখনো দুই দেশ মুখোমুখি হচ্ছে প্রায় প্রতিদিন। ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে দুই দেশ ভাগ হলেও কাশ্মীর রয়ে যায় স্বতন্ত্র ভূখণ্ড হিসেবে। ব্রিটিশদের পক্ষ থেকে বলা হয়, গণভোটের মাধ্যমে সাধারণ কাশ্মীরিরাই নির্ধারণ করবে নিজেদের ভবিষ্যৎ।
সেই সময় কাশ্মীরের শাসক ছিলেন মহারাজা হরি সিং। গণভোটের দাবি উপেক্ষা করে তিনি ভারতের সঙ্গে যোগ দিতে চাইলে কাশ্মীরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা এর বিরোধিতা করেন। তা উপেক্ষা করে ভারতের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন হরি সিং। পাকিস্তান এর তীব্র বিরোধিতা করলে, ১৯৪৭ সালে প্রথমবারের মতো ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের যুদ্ধ বাঁধে। প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা যুদ্ধে নিহত হয় উভয় দেশের প্রায় দশ হাজার সেনা। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় গণভোট আয়োজনের শর্তে শেষ হয় যুদ্ধ। কিন্তু সেনা প্রত্যাহার না হওয়ায় গণভোট আর অনুষ্ঠিত হয়নি।
১৯৪৮ সালে নিয়ন্ত্রণ রেখার মাধ্যমে কার্যত দুই ভাগ হয়ে যায় কাশ্মীর। এর ৪০ শতাংশের দখল পায় পাকিস্তান। আর প্রায় ৬০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ নেয় ভারত। পরে একে প্রদেশ হিসেবে ঘোষণা করে নয়াদিল্লী। যা তখন একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্য। ১৯৬২ সালে ভারতের সঙ্গে চীনের যুদ্ধ বাঁধে। সেই সময় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কিছু অংশ দখল করে নেয় চীন। অন্যদিকে ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান কাশ্মীরের কারাকোরাম অঞ্চলটি চীনের হাতে ছেড়ে দেয়। এর মাধ্যমে তিনভাগে ভাগ হয়ে যায় ভূ-স্বর্গ।
কাশ্মীর ইস্যুতে ১৯৬৫ সালে দ্বিতীয়বারের মতো যুদ্ধে জড়ায় ভারত এবং পাকিস্তান। নিহত হয় ভারতের ৩ হাজার এবং পাকিস্তানের প্রায় ৪ হাজার সেনা ক্ষয়ক্ষতিও হয় ব্যাপক। ১৯৮৪ সালে কাশ্মীরের সিয়াচেন এলাকার দখল নেয় ভারত। এরপর ১৯৯৯ সালে ভারত-পাকিস্তান লিপ্ত হয় তৃতীয় যুদ্ধে। যা কার্গিল যুদ্ধ নামে পরিচিত। এতে হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া না গেলেও ধারণা করা হয়, যুদ্ধে ভারতের ৫ হাজার এবং পাকিস্তানের ৪ হাজার সেনা নিহত হয়। আমেরিকা এবং রাশিয়ার মধ্যস্থতার আগে প্রায় তিন মাস ধরে চলা কার্গিল যুদ্ধই ছিল সবচেয়ে বিধ্বংসী।
ভারত এবং পাকিস্তান সৃষ্টির আগে থেকেই বিভিন্ন শাসকদের কাছে নিপীড়িত হয়ে আসছিল সাধারণ কাশ্মীরিরা। ১৯৩১ সালে কাশ্মীরের তৎকালীন মহারাজার বিরুদ্ধে আন্দোলনে ২২ জন নিহত হন। মূলত এরপর থেকেই সাধারণ কাশ্মীরিরা নিজেদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হতে শুরু করে।