সাবধান! মাইক্রো ব্যাটারি থেকে শিশুকে রাখুন শতহস্ত দূর
দেখতে কয়েনের মতো ছোট চকচকে আর আকারে লজেন্সের মতোই ছোট। শিশুরা হাতের কাছে সেটা পেলেই চট করে মুখে ঢুকিয়ে দেয়। এমনটা হলে কিন্তু তার ফল ভয়ঙ্কর হতে পারে! হ্যাঁ, বলছি মাইক্রো ব্যাটারির কথা!
ইলেকট্রিক খেলনা
ইলেকট্রিক খেলনাগুলোতে কী সুন্দর আলো জ্বলে, কত্তো রকমের শব্দ করে, যা বাচ্চাদের খুবই প্রিয়। তবে আগে ইলেক্ট্রিক খেলনায় বড় সাইজের ব্যাটারি ব্যবহার করা হতো। তবে আজকাল থাকে পাতলা বোতামের মতো খুবই ছোট মাইক্রো ব্যাটারি। তাই ফেডারেল ইন্সটিটিউট ফর রিস্ক অ্যাসেসমেন্ট-এর এ বিষয়ে সতর্কবাণী– ইলেকট্রিক পার্টস গিলে ফেললে এবং তা শ্বাসনালীতে ঢুকে গেলে শিশুর স্বাস্থ্যের গুরুতর ক্ষতি হতে পারে।
আশঙ্কা বাড়ছে
ব্যাটারির কারণে দুর্ঘটনা বেড়েছে অ্যামেরিকায়। দুর্ঘটনার হার আগের তুলনায় দ্বিগুণ বলে জানান কলম্বাস নেশনওয়াইড শিশু হাসপাতালের গবেষকরা। তবে এই আশঙ্কা কিন্তু জার্মানিতেও রয়েছে। কারণ, শিশুদের খেলনায় মাইক্রো ব্যাটারির ব্যবহার দিনদিন বাড়ছে এবং জার্মানিতেও ডাক্তারদের এসব সমস্যার মোকাবেলা হতে হচ্ছে। এ তথ্য জানান, জার্মানির শিশু-কিশোরদের রোগ বিষয়ক অ্যাসোসিয়েশনের ড. হ্যারমান ইয়োসেফ কাল।
ব্যাটারি গিলে ফেললে যা হতে পারে
এরকম ব্যাটারি যদি শিশুর খাদ্যনালী বা পেটে চলে যায় তাহলে মারাত্মক সমস্যা করতে পারে। ভেতরে পুড়ে গিয়ে কোষের ক্ষতি কিংবা রক্তক্ষরণও হতে পারে। গলায় আটকে গেলে ক্রনিক ইনফেকশন থেকে ফুসফুস ইনফেকশনও হতে পারে।
শঙ্কার কারণ শিশুদের জানার আগ্রহ
শিশুরা হাতের কাছে যা পায় সেটাই মুখে দেয়, না হয় ভেঙেচুরে দেখতে চায় ভেতরে কী আছে। ওষুধ বা ছুরির মতো ধারালো জিনিস যেন শিশুর হাতের কাছে না থাকে, সে ব্যাপারে বড়রা সবসময়ই সতর্ক থাকেন। তবে ব্যাটারিও কিন্তু এসবের চেয়ে কম বিপজ্জনক নয়!
সন্দেহ হলে …
যদি মা-বাবার মনে হয় শিশুসন্তান ব্যাটারি গিলে ফেলেছে, তাহলে সাথে সাথেই হাসপতালে চলে যেতে হবে। কারণ, সেই সময় কিন্তু প্রতিটি মিনিটি মহামূল্যবান। অনেক সময় বড়রা খেয়াল না করার কারণে তাঁদের সামনেও শিশুরা এ কাজটি করে থাকে। এরকম সন্দেহ হলে বা শিশু অস্বাভাবিক আচরণ করলে দেরি না করে হাসপাতালে চলে যাওয়াই উত্তম বলে মনে করেন ডা. কাল।
প্রথমেই এক্সরে
হাসপাতালে নেয়ার পর এক্সরে-তে ব্যাটারি দেখা গেলে এন্ডোস্কপির মাধ্যমে ব্যাটারি বের করে ফেলা সম্ভব।
সতর্কতা
ছোট শিশুরা হাতের সামনে যা পায় সেটাই মুখে দেয়। কাজেই এক্ষেত্রে সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই। তাছাড়া শিশুর খেলনা কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে ছোট ব্যাটারি নয়, বড় ব্যাটারি ব্যবহারের ব্যবস্থা যেন থাকে। আর তা না হলে যেন অন্তত ব্যাটারি খোলার জন্য স্ক্রুড্রাইভার ব্যবহার করতে হয়, যাতে শিশু নিজে সেটা খুলতে না পারে।