খালিস্তানি প্রশয়ে ৪ দেশের ওপর ক্ষুব্ধ ভারত
কলকাতা টাইমস :
গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রিটেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় খালিস্তানিরা অবাধে ভারত-বিরোধী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে। বিদেশের মাটিতে, খালিস্তানিদের ভারত বিরোধী তৎপরতা দিন দিন বাড়ছে। বিগত কয়েক মাস যাবৎ তা ক্রমে হিংসাত্মক ঘটনার রূপ নিয়েছে।
প্রতি ক্ষেত্রেই ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় থেকে আগাম ওই চার দেশকে বলা হয়েছিল, খালিস্তানিদের স্বাধীনতা মিছিলের যেন অনুমতি না দেওয়া হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই চার দেশ সেই অনুমতি দিয়েছে খালিস্তানিদের। আর এতেই ক্ষুব্ধ ভারত।
কিন্তু ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর হওয়া সত্ত্বেও দেশগুলি খলিস্তানিদের আন্দোলনে বাধা দেয়নি। দেশগুলির বক্তব্য, তাদের সংবিধানে বাক্ স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত। প্রতিবাদ আন্দোলন তারই অংশ। হিংসাত্মক আন্দোলন না হলে কোনও প্রতিবাদেই আপত্তি করা হয় না।
যদিও গত শনিবার সানফ্রান্সিসকোয় খালিস্তানিদের ভারতীয় দূতাবাসের সামনে জমায়েতকে কেন্দ্র করে হুলুস্থুল বেঁধে যায়। খালিস্তান বিরোধী জনতা পাল্টা জড়ো হয় দূতাবাসের সামনে। মাস কয়েক আগেই খলিস্তানিরা দূতাবাসে ভাঙচুর চালিয়েছিল।
লন্ডনে ভারতীয় দূতাবাসের ভিতরে ঢুকে ভারতের জাতীয় পতাকার অসম্মান করার চেষ্টা করে উগ্র খালিস্তানপন্থীরা। দূতাবাসের কর্মীরা অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষা করে আগেভাগে সেটি সরিয়ে দিয়ে।
খালিস্তানিরা দূতাবাসে ঢুকে তাদের পতাকা টাঙিয়ে দেয়। ওই ঘটনায় লন্ডন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারত সরকার। বিদেশে দূতাবাসের নিরাপত্তার ভার সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের। লন্ডনের ঘটনায় ভারত সরকার এতটাই বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ যে তারা আলাদা করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-কে তদন্তের ভার দিয়েছে।
সাম্প্রতিক মিছিল ও প্রতিবাদ সভাগুলিতে খালিস্তানিদের একাধিক সংগঠন একই ছবি ও বক্তব্য-সহ পোস্টার ছাপিয়ে ওই চার দেশের একাধিক শহরে ছয়লাপ করে দিয়েছে। তাতে খালিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধান কমান্ডার হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের দায়ী করা হয়েছে। যা দূতাবাস কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি টরেন্টোর রাস্তার ডিভাইডারে দেখা যায় পুতুলের সাহায্যে ইন্দিরা গান্ধীর শিখ নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে খুনের ঘটনার পুননির্মাণের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রতক্ষ্যদর্শীরা উল্লাস করছে। ভারত সরকারের আপত্তিতে কানাডার স্থানীয় প্রশাসন সেগুলি সরিয়ে দেয়। বিভিন্ন সূত্রের খবর, কানাডায় নির্বাচন আসন্ন। শিখ ভোটারদের মন পেতে সরকার এবং বিরোধী কোনও পক্ষই গলা চড়িয়ে খালিস্তানিদের কার্যকলাপের জোরালো নিন্দা করছে না।