‘পন্না প্রমুখ’ই হোক দলের অন্দরে, চান খাড়গে
কলকাতা টাইমস :
শতাব্দী প্রাচীন দলকে জাগাতে মরিয়া কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তাই দলীয় সংগঠনকে পদ্মশিবিরের মতো সাজাতে চান খাড়গে । তবে দলের পরিবর্তন চাইলেও তা কতখানি কার্যকর করতে পারবেন তাই নিয়ে প্রশ্ন খোদ কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটিতেই।
হায়দরাবাদে রবিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের পরে সোমবার বসেছিল বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটি। সেখানে সব রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, মুখ্যমন্ত্রী, পরিষদীয় দলনেতারা যোগ দেন। বৈঠকের শেষে খাড়গের কড়া নির্দেশ, কংগ্রেস নেতাদের নিজের নিজের এলাকায় ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে হবে। সাংগঠনিক সম্পাদককে এ নিয়ে বৈঠক ডাকারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
খাড়গের এই উদ্যোগকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘পন্না প্রমুখ’ ব্যবস্থার সঙ্গে মিলিয়ে দেখছেন অনেকে। শাহ কারণ বিজেপি সভাপতি হওয়ার পরে গোটা দেশে বিজেপির সংগঠনে ‘পন্না প্রমুখ’ অর্থাৎ ভোটার তালিকার এক একটি পৃষ্ঠায় থাকা ভোটাদাতাদের দায়িত্ব এক এক জন বিজেপি নেতার উপরে দিয়েছিলেন । কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছেন, তাঁদেরও একই ভাবে ভোটার তালিকা নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে। অনেক বিজেপি শাসিত রাজ্য, এমনকি কেরলেও দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস সমর্থকদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ চলে যাচ্ছে।
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল গান্ধি বলেছেন, বিজেপি বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করে আসল সমস্যা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করবে। সেই ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না। খাড়গের পরামর্শ, প্রচার কৌশলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মেকি ভাবমূর্তি তৈরি করা হয়েছে, তা ভাঙতে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সি ভোটারদের কাছে পৌঁছতে হবে। তৈরি করতে হবে তরুণ বক্তাদের বাহিনীও। মোদি সরকারকে নিশানা করতে হবে তথ্যের ভিত্তিতে।
লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র ছ’মাস বাকি মনে করিয়ে দিয়ে প্রদেশ সভাপতিদের কাছে এক গুচ্ছ প্রশ্ন রাখেন খাড়গে । তিনি বলেন, সম্ভাব্য প্রার্থীদের চিহ্নিত করার কাজ কি শুরু হয়েছে? ব্লক ও জেলা স্তরে কি গঠন করা হয়েছে কংগ্রেস কমিটি? কমিটি কি নিয়মিত মাঠে নামছে? খাড়গে বলেছেন, আগামী দু’তিন মাসে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। লোকসভা নির্বাচনের ছ’মাস বাকি। গত তিন মাসে তিনি ও রাহুল ২০টি রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে রণনীতি তৈরি করেছেন। এ বার প্রতিটি প্রদেশ নেতৃত্বকে নির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে হবে।
খাড়গের এই চাবুক হাতে সংগঠন চালানোর চেষ্টা দেখে প্রশ্ন উঠেছে, ক্যাডার ভিত্তিক দল বিজেপিতে যা সম্ভব, তা কি কংগ্রেসে করা যাবে? তাৎপর্যপূর্ণ হল, রাহুল নিজেই গত কাল ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বলেছেন, কংগ্রেস কোনও সংগঠন ভিত্তিক দল নয়। আন্দোলন নির্ভর দল, যার একটি সংগঠনও রয়েছে। ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র ফলে সেই কংগ্রেস আবার সেই আন্দোলনে ফিরেছে বলেই মানুষের সাড়া মিলেছে। সংগঠনও চাঙ্গা হয়েছে। এই আন্দোলনে থাকতে গেলে কংগ্রেসের মতাদর্শ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকবে।