আত্মহত্যা করতে চেয়েছেন হাসির রাজা শেখর কারণ জানলে চোখে জল আসবে
কলকাতা টাইমস :
পর্দায় তিনি হাসির রাজা। কিন্তু বাক্তিগত জীবনে কতটা কষ্ট, আর্থিক টানাপোড়েন নিয়ে জীবন চালিয়েছেন জানলে চোখে জল আসবে।
সম্পর্কের গভীরতার প্রমাণ পাওয়া যায় কঠিন সময়ে। টেলিভিশনের জনপ্রিয় মুখ শেখর সুমন এবং তার স্ত্রী অলকা সুমনও তাদের সম্পর্কের গভীরতার প্রমাণ পেয়েছিলেন ওই কঠিন সময়ে।
শেখর সুমনের সঙ্গে অলকার পরিচয় কলেজ জীবনে. দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এক কমন ফ্রেন্ড তাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন. অলকাকে সুমনের প্রথম থেকেই পছন্দ ছিল। কলেজের প্রথম দিনই অলকাকে দেখেই পছন্দ হয়েছিল তার।
১৯৮২ সালে কলেজে তাদের পরিচয়। শেখরের সঙ্গে বন্ধুত্ব যত গভীর হয়েছে, অলকার তত পছন্দ হয়েছে শেখরকে। সব থেকে ভালো লেগেছিল শেখরের রসবোধ।
১৯৮৩ সালে তাদের বিয়ে হয়. কিন্তু জীবন অত সহজ নয়, বিয়ের পরই তা দুজনে টের পেতে শুরু করেন। কলেজ পাশ করে অলকা তখন ফ্যাশন ডিজাইনার হয়েছেন. সবে সবে কাজ শুরু করেছেন. মোটামুটি উপার্জন করতেন।
কিন্তু শেখর তখনো লড়ে যাচ্ছেন। টেলিভিশনে কাজ পাননি। নয়াদিল্লির একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে টুকটাক অভিনয় করছেন। মাসে মাত্র ৬০০ টাকা স্টাইপেন্ড পেতেন।
কঠিন সময় শুরু হল তখন থেকেই। এই প্রথম শেখর-অলকা বুঝতে পারলেন কতটা কঠিন জীবন। অলকাই তখন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন।
সংসারে আর্থিক টানাপড়েন তো ছিলই, এর মধ্যে আবার আরও এক কঠিন পরিস্থিতি তাদের সামনে এসে উপস্থিত হয়। তাদের ১১ বছরের ছেলে আয়ূশের কঠিন রোগ ধরা পড়ে।
যথাসাধ্য চিকিৎসা করিয়েও তাকে বাঁচাতে পারেননি শেখর-অলকা। মাত্র ১১ বছর বয়সে ছেলে মৃত্যু ভীষণভাবে নাড়িয়ে দিয়েছিল তাদের। দীর্ঘদিন তারা একে অপরের থেকে কান্না লুকিয়ে থাকতেন।
এমনকি এমন একটা সময় এসেছিল, যখন তারা দুজনেই জীবন শেষ করার কথা ভেবে ফেলেছিলেন। কিন্তু পরিবারের কথা ভেবে সে পথে যাননি কেউই, বরং পরিবারের জন্য আস্তে আস্তে নিজেদের মন শক্ত করেছেন।
তাদের সম্পর্কের গভীরতা এই কঠিন সময়েই উপলব্ধি করেছিল দুজনে। আরও ভালো বন্ধু হয়ে উঠেছিলেন। এরও অনেক বছর পর শেখর ‘দেখ ভাই দেখ’ নামে একটি কমেডি সিরিয়ালে অভিনয়ের সুযোগ পান। এটাই ছিল তার কেরিয়ারের ব্রেক।
তারপর ক্রমশ সিঁড়ি বেয়ে উপরেই উঠেছে শেখর সুমনের কেরিয়ার। স্ত্রী অলকা তখন সংসারে নিজের কেরিয়ারকে সরিয়ে সংসারে মন দেন। ছোট ছেলে অধ্যয়ণের প্রতি পুরো সময়টাই দেন তিনি। ১৯৮৩ থেকে ২০১৯, টানা ৩৬ বছর একসঙ্গে কেটে গিয়েছে, আজও সেই কলেজ জীবনের মতোই রোম্যান্টিক তারা।