৩৬৫ কে পশ্চিমবঙ্গে হাতিয়ার করতে মরিয়া বিজেপি রাষ্ট্রপতির কাছে
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটকে সামনে রেখে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি বিধায়কের রহস্যজনক মৃত্যুর আঁচ পৌঁছাল দিল্লিতে। পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও অরবিন্দ মেননের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেছে।
জানা গেছে, প্রতিনিধিদলে ছিলেন সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়, স্বপন দাশগুপ্ত এবং রাজু বিস্তা। বিজেপির অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা যে ভেঙে পড়েছে, বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায় ‘খুন’ হওয়ার ঘটনা তারই প্রমাণ। এজন্য পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার দাবিও তুলেছে বিজেপি।
একই সঙ্গে রাষ্ট্রপতির কাছে এ ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়েছে বিজেপি। পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করে বিজেপির প্রতিনিধি দল। বৈঠক শেষে কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, খুন করে তা আত্মহত্যা বলে চালানো হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের কোনো তদন্ত সংস্থার ওপর আমাদের ভরসা নেই। সে কারণে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে।
সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের মতে, পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির কোনো স্বরই নেই। পুরো ছড়ি ঘোরাচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গের ঘটনা সম্পর্কে সঠিক তথ্য না-জেনে মিথ্যা চিত্রনাট্য তৈরি করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতিকে ‘প্রকৃত ও বিস্তারিত তথ্য’ জানাতে রাষ্ট্রপতি ভবন যেতে পারেন ডেরেকরা। বিজেপি প্রতিনিধিদল যেভাবে রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দিয়ে রাজ্য সরকারকে অপসারণের দাবি জানিয়েছে, তা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি দিলীপ ঘোষ নির্বাচিত সরকারকে সরানোর ব্যাপারে বলেন, সেটা রাষ্ট্রপতি ঠিক করবেন। আমরা এখনো নৈতিক দিক দিয়ে ৩৫৬ চাই না। অগণতান্ত্রিকভাবে সরকার ফেলতে চাই না।
আর বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, রাজ্য নেতৃত্ব দাবি করলেও, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কোনোভাবেই রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা ভাবা হচ্ছে না। উপরন্তু রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হলে মমতা ব্যানার্জির পক্ষে সহানুভূতির ঝড় উঠবে। ভোটের বাক্সে তার ফায়দা পাবে তৃণমূল।
অন্যদিকে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির দাবিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করতে চায় রাজ্য বিজেপি। এ নিয়ে পূজার পরে মাঠে নামার পরিকল্পনা করছিল তারা। বিধায়কের রহস্যজনক মৃত্যু তাতে ইন্ধন যুগিয়েছে। এখন থেকে পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বিরোধীদের হত্যা ও কেন রাষ্ট্রপতি শাসনের প্রয়োজন তা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে সরব হবে বিজেপি নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেন হস্তক্ষেপ করে, সে জন্যও নিয়মিত কেন্দ্রের দ্বারস্থ হবে বিজেপি।