সূর্য ডুবলেই জঙ্গলে আলোর ঝলকানি!

কলকাতা টাইমস :
এক রহস্যেঘেরা জঙ্গল। ঝুপ করে অন্ধকার নামতেই ঝটপট আলো জ্বলে। হাজার হাজার গাছগাছালি পর পর নানা রঙের আলোয় জ্বলে ওঠে। সবুজ-নীল-হলুদ-গোলাপি মিলে সে এক স্বপ্নের অনুভব। ভারতের পশ্চিমঘাটের অন্যতম গভীর জঙ্গল ভীমশঙ্করে সূর্যাস্তের পর ঠিক এভাবেই আলোয় আলোয় ভরে ওঠে।
দিনে নানা রকমের সবুজ, আর রাতে জঙ্গলের পুরোটাই রঙিন। দেখে মনে হবে সারি সারি টুনি লাইট গাছের ডালে, পাতায় জড়ানো। কারণটা জানলে মনে হবে পুরো বিষয়টিই ম্যাজিক বটে। ভীমশঙ্কর জঙ্গলের গাছের ডালে, পাতায় সেঁটে থাকে এক ধরনের ফাঙ্গাস। যার নাম মায়সিনা। এই বিশেষ ধরনের ফাঙ্গাস জীবন্ত থাকলেই তার কোষ থেকে নানা রঙের আলো বেরোয়। দিনের বেলায় আলো সেভাবে দেখা যায় না। রাত হতেই ফাঙ্গাসের আলো তীব্র হয়। গোটা জঙ্গলকে অদ্ভুতভাবে আলোকিত করে।
মায়সিনা আসলে বায়োলিউমিনেসেন্ট প্রজাতির ফাঙ্গাস। সাধারণত এ ধরনের ফাঙ্গাসের কোষে ফসফরাস থাকে। যার ফলে ফাঙ্গাস থেকে অনায়াসে নীল, সবুজ আলো বেরোয়। ৫০০ থেকে ৬০০ ন্যানোমিটার তীব্রতায় জ্বল জ্বল করে ফাঙ্গাস। আর এই বিশেষ মায়সিনা ফাঙ্গাসেই ঘেরা ভীমশঙ্কর জঙ্গল। জঙ্গলের আনাচে-কানাচে থাকা মায়সিনারা অন্ধকারে তেজি হয়ে ওঠে, যা পর্যটকদের কাছে মস্ত বড় আকর্ষণ।
অবশ্য সব ঋতুতে মায়সিনা সমানভাবে সক্রিয় নয়। ভেজা মাটি বা গাছেই ফাঙ্গাসের আলোর ছটা বাড়তে শুরু করে। তাই বর্ষাকালে পশ্চিমঘাটের সিক্ত গাছে, ভেজা মাটিতে মায়সিনা যেন নতুন করে জীবন পায়। সূর্য ডুবতেই বৃষ্টিভেজা রঙিন মায়সিনারা ভীমশঙ্কর জঙ্গলকে আলোয় মুড়ে রাখে।