এই ছোট্ট কৌশল দেবে অবিশ্বাস্য স্মৃতিশক্তি
[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :
রোমান দার্শনিক সিসোরোর বাণী, ‘দুনিয়ায় সবকিছুর ভান্ডার ও রক্ষক হলো আমাদের স্মৃতি।’ কিন্তু সেই স্মৃতিশক্তিও মাঝেমধ্যে বেইমানি করে বসে! এক কাজে মনোযোগী হতে গিয়ে ভুলে যান আরেক কাজ। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আশি-নব্বই দশকে জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে এ প্রবণতা আরও বেশি। ঘরের চাবি থেকে শুরু করে চুলের চিরুনি খোঁজ থাকে না।
তবে মানুষের স্মৃতিশক্তি যেকোনো বয়সেই দুর্বল হতে পারে। আবার এই মানুষই স্মৃতিশক্তি প্রখর করতে এমন কৌশল বের করেছে, যা ভীষণ বুদ্ধিদীপ্ত এবং সহজ। সাইমন রেইনার্ডের কথাই ধরুন, জার্মান এই ‘মেমোরি অ্যাথলেট’ প্রাচীন রোমান ও গ্রিকদের স্মৃতিশক্তি প্রখর করার কৌশল ব্যবহার করে দুইবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন! অথচ রেইনার্ড এমন এক সহজ কৌশল অবলম্বন করে সফলতার মুখ দেখেছেন, যা পাল্টে দিতে পারে আপনার স্মৃতির জোর।
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অনেকে মুখস্থবিদ্যার ওপর জোর দেন। এটা দীর্ঘস্থায়ী কোনো পদ্ধতি নয়। বড়জোর আধা ঘণ্টা মাথায় থাকবে। কিন্তু ‘মেথড অব লকি’—প্রচুর তথ্য সুবিন্যস্তভাবে সাজিয়ে রাখার বেশ আনন্দদায়ক কৌশল। প্রাচীনকালে গ্রিক ও রোমানরা ‘রিটারিকল ট্রিটিজ’–এ (জবাবের আশা না করে মানুষ প্রভাবিত করার প্রশ্ন বা আলোচনা) কৌশলটির চর্চা করতেন, যার বিবরণ রয়েছে সিসেরোর ‘দ্য ওরাটোরে’ বইয়ে।
‘মেথড অব লকি’ পদ্ধতি অনেকের কাছেই ‘মেমোরি প্যালেস’ বা ‘মেমোরি জার্নি’ হিসেবে স্বীকৃত। এ কৌশলের বেশ কিছু ধাপ রয়েছে। প্রথমে একটি জায়গা নির্বাচন করুন, যেখানে নিয়মিত যাওয়া-আসা রয়েছে। সেটা যেকোনো কিছু হতে পারে। প্রতিদিন অফিসে যাওয়ার রুট কিংবা শহর থেকে দেশের বাড়ি যাওয়ার পথ।
দ্বিতীয়ত, যে বিষয়, বস্তু, মুখ কিংবা ব্যাপারগুলো ভুলে যান, তাঁর একটা তালিকা তৈরি করুন। এগুলো আপনি মনে রাখতে চান। এবার তালিকায় যা যা আছে, তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো অবয়ব বা ছবি কল্পনায় বেছে নিন। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কেননা, যা যা মনে রাখতে চান, সেসব বিষয় বা জিনিসের সঙ্গে কল্পনার ছবিগুলো অবশ্যই সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। একেকটি মনে রাখার বিষয়ে একেকটি কল্পনার ছবি। এবার সেই জায়গাটার কথা মনে করুন। কল্পনায় দেখুন যে আপনি ওই পথ দিয়ে হাঁটছেন। হাঁটার সময় পরিচিত যত জায়গা আছে, সেসব জায়গায় কল্পনার সেই ছবিগুলো রাখুন (মানে, ওই জায়গাগুলো কল্পনা করলেই যেন আপনার মনে সেই ছবি ভেসে ওঠে)। কৌশলটা কিছুদিন চর্চা করলে দেখবেন, আসলে সেই ছবির সঙ্গে যা স্মরণে রাখতে চেয়েছিলেন, সেটাই ভেসে উঠছে মনের মধ্যে।
এভাবে যখন যেটা স্মরণ করার দরকার পড়বে, তখনই কল্পনায় সেই রাস্তা দিয়ে হাঁটবেন। সেই বিষয়টিকে কোন ছবির মোড়কে কোথায় রেখেছিলেন ভাবুন, শুরুতে হয়তো একটু সমস্যা হবে, কিন্তু একবার অভ্যাস হয়ে গেলে কৌশলটির মার নেই।
রেইনার্ড কার্ড মনে রাখার ক্ষেত্রে কৌশলটি ব্যবহার করেছিলেন। দুটি করে কার্ড দিয়ে কল্পনায় তিনি একটি করে ছবি বানিয়েছেন। তারপর সেই ছবিগুলো তাঁর যাত্রাপথে বাস স্টেশন থেকে বাগান কিংবা পার্কের নানা চেনা জায়গায় স্থাপন করেছেন। এভাবে রেইনার্ড ৫২টি কার্ড মনে করেছেন মাত্র ২০.৪৩ সেকেন্ডে!
তাহলে, আর দেরি কেন? স্মৃতির খুঁটির জোর বাড়ানোর চেষ্টা আজ থেকেই শুরু হোক।