চাকরি খুঁজছেন? ফেসবুক, টুইটার, লিংকডইন যখন হেল্পার
চাকরি খোঁজার জন্য অনেকেই নানাভাবে চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে অনলাইনের ভূমিকা কী হতে পারে, তা নিয়ে অনেকেরই নানা ধরনের শঙ্কা কাজ করে। এ কারণে বহু মানুষ অনলাইন থেকে তার কার্যক্রম সম্পূর্ণ মুছে ফেলার চেষ্টা করেন। যদিও বিষয়টি মোটেই তেমন হওয়া উচিত নয়। এক্ষেত্রে কয়েকটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করলে অনলাইন থেকে চাকরির জন্য সহায়তা পাওয়া সম্ভব। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে বিজনেস নিউজ ডেইলি।
১. লিংকডইন
লিংকডইন এমন একটি সোশ্যাল মিডিয়া, যেখানে প্রফেশনাল ব্যক্তিরা যেমন বিচরণ করেন তেমন ম্যানেজারেরাও বিচরণ করেন। আর তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যে চাকরিতে গুরুত্বপূর্ণ, সেসব চাকরির জন্য সবার আগেই লিংকডইনের প্রোফাইলে নজর দেওয়া প্রয়োজন। ক্যারিয়ার গ্লাইডার জানিয়েছে, ৭৯ শতাংশ নিয়োগকর্তা লিংকডইনের সহায়তা নেন। এছাড়া যারা লিংকডইন ব্যবহার করেন তাদের ৯০ শতাংশ যোগাযোগ ও যাচাই করার জন্য লিংকডইন প্রোফাইল ব্যবহার করেন।
উচ্চপর্যায়ের চাকরির জন্য নিয়োগকারীরা প্রায়ই লিংকডইন প্রোফাইল যাচাই করেন। এক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে আকৃষ্ট করার জন্য অবশ্যই লিংকডইন প্রোফাইল আপডেট রাখতে হবে।
এ বিষয়ে ‘হয়্যার আইঅ্যাম ফ্রম অ্যাপারেল’-এর অ্যান্ড্রিউ ভ্যান্ডারলিন্ড বলেন, ‘লিংকডইনের মাধ্যমে একজন আবেদনকারীর চাকরির ইতিহাস দেখা সম্ভব। এছাড়া এর মাধ্যমে তার নিজস্ব কমিউনিটিতে তিনি কতখানি কর্মঠ, তা দেখা যায়।’
২. টুইটার
মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার প্রায়ই নিয়োগকর্তাদের যাচাই করতে দেখা যায়। এতে নিয়োগকর্তারা দেখেন আবেদনকারী কোন ব্র্যান্ডের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত কিংবা আগ্রহী। এছাড়া তার বিভিন্ন টুইট দেখে রাজনৈতিক মতাদর্শ ও কাজের বিষয়ে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করেন নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে কোপল্যান্ড কোচিং-এর ক্যারিয়ার কোচ অ্যাঞ্জেলা কোপল্যান্ড বলেন, ‘টুইটার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও উচ্চপর্যায়ের কর্মীদের মিলনমেলা। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, এখানে কতজন সি-লেভেলের এক্সিকিউটিভ রয়েছেন, যারা তাদের নিজস্ব টুইটার চালান এবং আপনার সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি আপনার ভবিষ্যতের জন্য মানুষের বক্তব্য শোনা ও সে অনুযায়ী ক্যারিয়ার গঠনের জন্য আদর্শ স্থান।’
আপনি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরির জন্য চেষ্টা করছেন সে প্রতিষ্ঠানের ও উচ্চপর্যায়ের কর্মীদের টুইট পর্যবেক্ষণ করলেই অনেক সময় জানা সম্ভব হবে ঠিক কোন ধরনের কাজ প্রয়োজন হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির। এক্ষেত্রে সব বিষয় জেনে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারে চাকরিপ্রার্থীরা।
৩. ফেসবুক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের অত্যন্ত প্রিয় হয়ে উঠেছে। যে কোনো চাকরিপ্রার্থী এখানে নিজের অ্যাকাউন্ট খুলে নিজের জীবন বৃত্তান্ত সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পারেন। ক্যারিয়ার গ্লাইডারের তথ্য অনুযায়ী ৮৩ শতাংশ চাকারিপ্রার্থী বর্তমানে এ জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে যুক্ত রয়েছেন। এ কারণে নিয়োগকর্তা কাউকে চাকরি দেওয়ার আগে অনলাইনে যাচাই করতে গিয়ে প্রায়ই চাকরিপ্রার্থীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট চেক করে দেখেন। এক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীর উচিত নিজের ফেসবুক প্রোফাইল ঝকঝকে পরিষ্কার করে রাখা। নিজের ইমেজ সঠিকভাবে তৈরি করতে পারলে তা চাকরি পেতে সহায়ক হবে।
এ বিষয়ে কোপল্যান্ড বলেন, ‘আপনি যার সঙ্গে ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন তার বিষয়ে জানতে এটি একটি দারুণ সুযোগ। এছাড়া আপনি হায়ারিং ম্যানেজারের সঙ্গে কমন বন্ধুদের তালিকাও সেখানে পেতে পারেন।’
তবে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে যদি অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো অংশ থাকে তাহলে তা দ্রুত ঠিক করতে পরামর্শ দিচ্ছেন কোপল্যান্ড। কারণ অনলাইনে যে কোনো অযাচিত কর্মকাণ্ডই আপনার চাকরি না হওয়ার কারণ হতে পারে।