যে বাজারে বিক্রি হয় ব্যর্থ প্রেমিক-প্রেমিকাদের উপহার!
অনেকের সম্পর্কই ভেঙে যায় পরিণতি পাওয়ার আগেই। তারপর? প্রেমিক-প্রেমিকারা নিজেদের এইসব উপহার, চিঠি, ফুলের শুকনো পাপড়ি- কী করেন এসব দিয়ে? খুব সহজ উত্তর। কেউ কেউ সেগুলো ফেলে দেন, কেউ পুড়িয়ে ফেলেন, কেউ আবার রেখে দেন সযত্নে। কিছুদিন পরপর সেগুলো দেখা আর লুকিয়ে কান্না করা- এই তো?
ভিয়েতনামের ডিং থ্যাং অবশ্য ব্যাপারটিকে এতো সহজভাবে নেননি। ফলে, জন্ম হয়েছে ‘ওল্ড ফ্লেমস মার্কেট’ বা ‘ব্যর্থ প্রেমের বাজার’।
কী নেই এই বাজারে? ভালোবেসে পাওয়া জামা, জুতো, ঘড়ি, ব্রেসলেট, টুপি, চিঠি- সব পাবেন আপনি এখানে। ডিং থ্যাংও ভালোবেসেছিলেন। সেই ভালোবাসা পূর্ণতা পায়নি। তবে, প্রেম পূর্ণতা না পেলেই যে সেখান থেকে পাওয়া উপহারগুলো ব্যবহার করা বন্ধ করে দিতে হবে, নষ্ট করে ফেলতে হবে- এমনটা ভাবেন না তিনি।
তার মতে, এতে করে কেবল একজন মানুষ কষ্ট পান না। সেইসাথে একটা দরকারি জিনিসও বিনা কারণে নষ্ট হয়। অনেক সময় এই উপহারগুলোর কারণে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই সমস্যা থেকে বাঁচতেই এমন এক বাজারের উদ্যোগ নেন তিনি।
তবে প্রথমে ব্যর্থ প্রেমের বাজার প্রথম দিকে খুব একটা সাড়া ফেলতে পারেনি মানুষের ভেতরে। ২০১৭ সালে ভিয়েতনামের হ্যানয় শহরে প্রথম গড়ে ওঠে বাজারটি। অবশ্য, প্রথমে মানুষ কম আসলেও পরবর্তীতে বেশ ভালো কাজ করে দেখিয়েছে বাজারটি।
এখানে বিক্রি হওয়া যেকোনো পণ্যের লাভের ৩০ শতাংশ থ্যাংকে দিয়ে দেন বিক্রেতারা। মূলত, এতে ডিং থ্যাংয়ের খুব যে একটা লাভ হয় তা না। ক্রেতাদের জায়গা করে দিতেই এমনটা করতে হয় তাকে।
বর্তমানে অবশ্য এতোটাই বেশি সাড়া ফেলেছে বাজারটি যে, এর স্বল্পস্থানে এতো বেশি ক্রেতাকে জায়গা করে দেওয়া ডিং থ্যাংয়ের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তবে বড় স্থানের জন্য অনেক বেশি খরচ করাটাও সম্ভব নয়। ফলে বেশ একটা উভয়সংকটের মধ্যে রয়েছেন তিনি।
ডিং থ্যাংয়ের এই বাজারের জন্য রয়েছে ফেসবুক পেইজও। সেখানে প্রথমে প্রেমিক-প্রেমিকারা তাদের উপহার প্রদর্শন করেন। সেগুলো দেখে ঠিকঠাক মনে হলে বাজারে আসার অনুমতি দেন থ্যাং। সাধারণত, যেকোন প্রেমিক বা প্রেমিকাই এই বাজারে পণ্য বিক্রি করতে এলেও, থ্যাং সবচাইতে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন সদ্য বিচ্ছেদ হয়েছে এমন মানুষকে। তার মতে, বিচ্ছেদের প্রথমদিকেই মানুষ বেশি দুর্বল থাকেন।