পাক অধিকৃত কর্তারপুর সাহিব নিয়ে মোদি যা বললেন, শুনে চমকে উঠবেন
কলকাতা টাইমস :
এখন নরেন্দ্র মোদির বক্তৃতা মানেই ধর্মীয় বাণি৷ তা সে ভোট প্রচারেই হোক বা অন্য কোন সভায় হোক৷ শনিবার তো আবার মোদি শিখদের অন্যতম ধর্মীয় স্থান কর্তারপুর সাহিবে পেঁৗছান৷ তা সেখানে ধর্মের প্রসঙ্গ আসবে না, এমনটা কি হয়? যদিও এখন ধর্মীয় শব্দে নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় একটু বুঝে-সুঝেই কথা বলতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীকে৷
এদিন পাঞ্জাবে গিয়ে তিনি শিখদের অন্যতম ধর্মীয় স্থান কর্তারপুর সাহিব নিয়ে আবেগ উসকে দিয়েছেন৷ কর্তারপুর নিয়ে বলতে গিয়ে আবার ছুঁয়েছেন বাংলাদেশ-পাকিস্তান যুদ্ধও৷ নাম করে নিশানা করেছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত ইন্দিরা গান্ধিকে৷ শুনিয়েছেন, ওই সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকলে কর্তারপুর সাহিব নিয়ে কী পদক্ষেপ করতেন৷ কর্তারপুর সাহিব পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে অবস্থিত৷ গুরু নানক ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে সেখানে গিয়ে জীবনের শেষ আঠারো বছর কাটিয়েছিলেন৷ দেশভাগের পর তা পাকিস্তানের অংশ হয়ে যাওয়ায় ভারতীয় শিখদের সেখানে তীর্থ করতে যাওয়ার সুযোগ ছিল না৷ তারা সীমান্তের এপারে দাঁডি়য়ে সেটি দর্শন করতেন৷ দুই দেশের মধ্যস্থতায় কয়েক বছর হল কর্তারপুর করিডর তৈরি হয়েছে৷ পাকিস্তান সরকার কর্তারপুর সাহিব দর্শনে ভিসার নিয়মও শিথিল করেছে৷
এবার লোকসভা নির্বাচনে পাঞ্জাবে প্রথমবার প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন কর্তারপুর সাহিব সীমান্তের এপারে দাঁডি়য়ে দূরবীন দিয়ে দেখতে হত আমাদের৷ অথচ, ১৯৭১ সালেই ওই এলাকা আমরা দখল করে নিতে পারতাম৷প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে ১৯৭১-এর ভারত-পাক যুদ্ধের প্রসঙ্গ তোলেন৷ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে ভারতও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছিল৷ কিন্ত্ত মাত্র ১৩দিনের মাথায় ঢাকায় পাক বাহিনী আত্মসমর্পণ করে৷ যদিও পাকিস্তানের পশ্চিমপ্রান্ত লাগোয়া ভারতের পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, রাজস্থান, গুজরাতেও যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল৷ কর্তারপুর সাহিব৷ পাকিস্তানের শিখ ধর্মস্থান এখন ভারতীয়দের জন্যও উন্মুক্ত৷
পাক বাহিনী আত্মসমর্পণের পর সে দেশের ৯০ হাজার জওয়ানকে ভারত মুক্তি দিয়েছিল৷ পাঞ্জাবের পাতিয়ালায় প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পাকিস্তানের ৯০ হাজার সেনাকে মুক্তি দিলাম, অথচ অদূরে কর্তারপুর সাহিব নিয়ে ভাবলাম না৷ মোদি বলেন, আমি তখন প্রধানমন্ত্রী থাকলে ঢিল ছোড়া দূরের পবিত্র শিখ ধর্মস্থান এলাকা ভারতের অধীনে নিয়ে নিতাম৷
অন্যদিকে, মোদির আগাম কর্মসূচি হিসেবে রবিবার থেকে আগামী সাতদিন তিনি বারাণসীবাসি হতে চলেছেন৷ শনিবার ষষ্ঠ দফার ভোট মিটলে বাকি থাকবে মাত্র এক দফা৷ শেষ দফায় ৮ রাজ্যের ৫৭ আসনে ভোটগ্রহণ৷ এর মধ্যে রয়েছে বারাণসীও৷ শেষ লড়াইয়ের আগে তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের লোকসভা কেন্দ্রেই থাকতে চলেছেন৷
বিজেপি সূত্রের খবর, ২৬ মে অর্থাৎ রবিবার থেকেই মোদি বারাণসীতে থাকতে শুরু করবেন৷ ১ জুন অর্থাৎ শেষ দফার ভোট পর্যন্ত কাশীধামেই থাকবেন মোদি৷ তিনি ওই কেন্দ্রের ভোটার না হলেও ভোটের প্রার্থী হিসাবে নিজের কেন্দ্রে থাকতে পারেন৷ এই সাতদিনের মধ্যে পাঁচ দিন প্রচার করার সুযোগ পাবেন মোদি৷ এই পাঁচদিনে বারাণসীতে একগুচ্ছ কর্মসূচি থাকছে প্রধানমন্ত্রীর৷ জনসভা, রোড শো, মহিলাদের জন্য আলাদা জনসভা করার কথা মোদির৷ সংখ্যালঘু ভোটারদের সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলতে পারেন প্রধানমন্ত্রী৷