November 12, 2024     Select Language
৭কাহন Editor Choice Bengali KT Popular

জানেন বাংলা নববর্ষ চালু করেন সম্রাট আকবর

[kodex_post_like_buttons]
কলকাতা টাইমস :

খাজনা পরিশোধের গরমিলে পড়ে যেত বাংলার কৃষক। তাই প্রাচীন বর্ষপঞ্জিতে সংস্কার নির্দেশ দেন সম্রাট আকবর। প্রথমে এ সনের নাম ছিল ফসলি সন, পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিতি পায়। বাঙালির সার্বজনীন লোক উৎসব পয়লা বৈশাখ। এক সময় মেলা, হালখাতা আর পুণ্যাহ উৎসব ছিল পয়লা বৈশাখের প্রাণ। বৈশাখী মেলায় থাকত গ্রামের কামার-কুমার আর তাঁতিদের হস্তশিল্পের আয়োজন। থাকত হাতে তৈরি মাটির খেলনা, মণ্ডা-মিঠাই, চরকি, বেলুন, ভেঁপু, বাঁশি আর ভাজাপোড়া খাবার-দাবার। মেলার প্রধান আকর্ষণ ঘোড়দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই প্রতিযোগিতা ছিল জনপ্রিয়। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে নৌকাবাইচ, বহুরূপীর সাজ, হাডুডু খেলার আয়োজনও থাকত। সময়ের পালাবদলে নগরজীবনে পয়লা বৈশাখ উৎসব আয়োজনে অনেক পরিবর্তন এসেছে। আশির দশকে নতুন আঙ্গিকে, নতুন উচ্ছ্বাসে বৈশাখী উৎসব জমে ওঠে। লিখেছেন- তানভীর আহমেদ

মুঘল সাম্রাজ্য ছিল বিশাল। সম্রাট আকবরের শাসনামলে বাংলা সনের যাত্রা শুরু হয়। সম্রাট আকবর ক্ষমতায় আসেন ইংরেজি ১৫৫৬ সালে। সে সময় হিজরি ক্যালেন্ডার ধরে রাজকার্য পরিচালনা হতো। চন্দ্রবর্ষ ব্যবহারে কিছু জটিলতা দেখা যায়। কারণ সৌরবর্ষের তুলনায় ১০-১১ দিন কম থাকায় চন্দ্রবর্ষ কখনোই পরের বছর একই দিনে আসে না। জমির খাজনা পরিশোধ করতে গিয়ে কৃষকদের তাই জটিলতার মধ্যে পড়তে হতো। এ ছাড়া ঋতু অনুযায়ী ফসলে চাষ হতো। যে কারণে ফসল না তুলতেই খাজনার সময় এসে গেলে কৃষক পড়ত বিপাকে। ভারতবর্ষ বিশাল হওয়ায়, সেখানে নানা ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় আচার পালনেও বর্ষপঞ্জির জটিলতায় পড়ত। জমির খাজনা মেটাতে তাই সম্রাট আকবর ফসলি সন তৈরির দিকে নজর দেন। মুঘল বাদশাহদের মধ্যে তার রাজসভায় ছিল সবচেয়ে গুণী-পণ্ডিতদের আনাগোনা।

সম্রাট আকবরের (১৫৫৬-১৬০৯) নির্দেশে এবং বিজ্ঞ রাজ জ্যোতিষী ও পণ্ডিত আমির ফতেহ উল্লাহ সিরাজী বাংলা সন তৈরিতে গবেষণা শুরু করেন। হিজরি সনের জটিলতা এরিয়ে সৌর সন ধরে তিনি ‘ফসলি সন’ তৈরি করেন। এতে করে সৌর বর্ষের সঙ্গে হিজরি সনের যে ব্যবধান ছিল তা আর রইল না। সৌর সন ধরেই এলো ‘ফসলি সন’। ঋতুভিত্তিক সৌর সন থেকে আসা ফসলি সনে জমির খাজনা আদায়ের জটিলতা অনেকটাই কেটে যায়। তখনকার প্রচলিত হিজরি সনকে ‘ফসলি সন’ হিসেবে চালু করার মাধ্যমে বর্তমান বাংলা সন বঙ্গাব্দের জন্ম হয়। বাংলা সনের জন্মলাভের পর পরবর্তীতে এ পঞ্জিকার হিসাবে তখনকার বার্ষিক কর, ভূমি কর, কৃষি কর, জল কর ইত্যাদি আদায় শুরু হয়। তথ্য অস্পষ্টতার জন্য অনেকে মনে করেন, সম্রাট আকবরের হাতেই বাংলা সনের গণনা শুরু।

কিন্তু প্রকৃত বিষয় হলো সম্রাটের হাতে হিজরি সনকে রূপান্তরের মাধ্যমে বাংলা সনের প্রবর্তন ঘটে। দিনে দিনে এই বাংলা বছর গণনায়ও এসেছে নানা পরিবর্তন। শুরুতে বাংলা নববর্ষের প্রথম মাস ছিল অগ্রহায়ণ। বিভিন্ন সময়ে বঙ্গাব্দের দিন ও তারিখ নির্ধারণে জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। এসব জটিলতা নিরসনে প্রখ্যাত ভাষাতত্ত্ববিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বঙ্গাব্দের বেশ কিছু সংস্কার করেন। যেমন গণনার সুবিধার্থে বৈশাখ থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত দিনের সংখ্যা প্রতি মাসে ৩১ করা হয় এবং আশ্বিন থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত ৩০ দিন গণনার বিধান  করা হয়।

Related Posts

Leave a Reply