২ কোটির মালিক মোশাররফ লন্ডন ও দুবাইয়ে কিনলেন ৪০ কোটির ফ্ল্যাট ?
কলকাতা টাইমস :
অবসর নেয়ার সময় পেয়েছিলেন ২ কোটি। অথচ তিনি ব্রিটেন ও আরব আমিরাতে কিনলেন ৪০ কোটির ফ্যাট ।ব্রিটেনের সরকারি ভূমি রেজিস্ট্রি দলিলগুলোতে দেখা যায়, পাকিস্তানের প্রাক্তন স্বৈরশাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ ২০০৯ সালের ১৩ মে লন্ডনের হাইড পার্ক ক্রিসেন্ট এলাকায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। টাকায় যার মূল্য ছিল প্রায় ২০ কোটি । প্রায় একই সময়ে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে সুউচ্চ ‘সাউথ রিজ টাওয়ার’-এ একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন, যার মূল্য তখন ছিল ২০ কোটিও বেশি।
পাকিস্তানের ‘দ্য নিউজ’ পত্রিকায় আহমদ নূরানী এক নিবন্ধে এ তথ্য প্রকাশ করেন ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল। নিবন্ধটিতে লেখক প্রশ্ন তোলেন, সেনাপ্রধান পদ থেকে অবসর নেওয়ার সময় তো মোশাররফ বেনিফিট পেয়েছিলেন মাত্র দুই কোটি । তাহলে ৪০ কোটি খরচ করে বিদেশে দু-দুটি ফ্ল্যাট কেনা তাঁর পক্ষে কিভাবে সম্ভব হলো?
ক্ষমতায় থাকতে মোশাররফ অল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এপিএমএল) নামে দল গঠন করেছিলেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্রও দাখিল করেন। সে সময় নির্বাচন কমিশনে সম্পদের বিবরণীতে মোশাররফ জানান, ২০০২ সালে তিনি আর্মি সার্ভিস বিক্রি করায় তাঁকে বাহাওয়ালপুরে ৫০ একর জমি দেওয়া হয়। এই জমি ও অন্যান্য স্থাবর সম্পত্তির কোনোটিই তিনি ২০০৯ সালে পাকিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সময় বিক্রি করেননি।
‘তাহলে ৪০ কোটি মোশাররফ কোথায় পেলেন?’- প্রশ্ন করে দ্য নিউজ। জবাবে এপিএমএল দলের প্রধান সমন্বয়ক আহমেদ রেজা কাসুরি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফোরাম এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দিয়ে যারা প্রচুর রোজগার করেন, তাঁদের অন্যতম মোশাররফ।’ কিন্তু দ্য নিউজ বলছে, ইন্টারন্যাশনাল লেকচার বাবদ মোশাররফের আয় শুরু হয় ২০১০ সালে।
২০০৯ সালের জুলাইয়ে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্ট রায় দেন- ‘মোশাররফ ক্ষমতা জবরদখলকারী; তিনি সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন।’ অনেকের ধারণা, এই রায়ের কারণেই নির্বাচন কমিশন তাঁকে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করে ২০১৩ সালে। প্রকৃত কারণ হলো, ব্যাংকে যে বিপুল পরিমাণ টাকা এবং স্থাবর সম্পত্তি, সেগুলোর জন্য মোশাররফ কোনো ট্যাক্স না দেওয়ায় তাঁকে ‘নির্বাচনের অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়।