আইসিস দের হাতে বন্দী থাকা যৌনদাসী নাদিয়া মুরাদ এখন ঘর বাধার স্বপ্নে বিভোর
কলকাতা টাইমসঃ
ইরাকের কুর্দ জনগোষ্ঠীর ইয়াজিদি ধর্মের মেয়ে নাদিয়া মুরাদ। ২০১৪ সালে ইরাক যখন প্রায় ইসলামিক স্টেটের দখলে তখন ১৯ বছরের নাদিয়া আইসিসের হাতে ধরা পড়েন৷ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সুদূর সিরিয়ায়৷ সেখান থেকে পালিয়ে আসার গল্প থেকে জীবন শুরু তার৷ সেই জীবনে নতুন পালক যোগ হতে চলেছে এখন৷ বিয়ে করছেন নাদিয়া মুরাদ৷
আইএসদের যৌনদাসী নাদিয়া এখন নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখেন৷ তবু অতীতের দুঃস্বপ্ন তাড়া করে বেড়ায় তাকে৷ যার হাত ধরে এক নতুন জীবনের সন্ধান পেয়েছেন নাদিয়া, তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীর সাবেক দোভাষী আবিদ শামদিন৷ আবিদ আর নাদিয়া এখন ঘর বাঁধার স্বপ্নে মশগুল৷ আবিদের হাত ধরেই সিরিয়ার রক্তাক্ত দিনগুলো পিছনে ফেলে পালাতে পেরেছিলেন নাদিয়া৷ ট্যুইট করে নিজের বাগদানের ছবি পোস্ট করেছেন তিনি৷ আবিদের পরিবারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই সময়ে তাদের পাশে থাকার জন্য৷ নাদিয়ার লড়াইয়ে সবসময় সঙ্গে রয়েছেন আবিদ৷ আবিদ নিজেও লিখেছেন সেই রক্তঝরা ভয়ঙ্কর মুহূর্তগুলোর কথা৷ তিনি লেখেন আমরা খুব কঠিন সময়ে একে অপরের হাত ধরেছিলাম৷ সেই সময়টাই আমাদের মিলিয়ে দিয়েছে৷
নাদিয়া এখন জাতিসংঘের গুডউইল অ্যাম্বাসাডর৷ সেখানে বার বার তিনি বলেছেন নিজের যন্ত্রণার কথা৷ কীভাবে আরও ৭০০০ মহিলার সঙ্গে তাকে নরকবাস করতে হয়েছিল আইসিসের যৌনদাসী হয়ে৷ এখন তিনি এরকমই মহিলাদের জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছেন, তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, আশ্রয় দিয়েছেন৷ সর্বোপরি নতুন জীবন দিয়েছেন৷ জাতিসংঘে তিনি বলেছেন কীভাবে তাকে যৌনদাসী বানিয়ে রেখেছিল৷ তার ওপর চলে দিন রাত নির্মম অত্যাচার৷ নাদিয়া জানিয়েছিলেন, একদিন আইএস জঙ্গিরা তাদের গ্রামে হানা দেয়। শুরু হয় জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরণ। প্রতিবাদ করলেই গুলি। মৃত্যু। আর নারীদের উপরে নির্যাতন। গ্রামের আরও মেয়েদের সঙ্গে নাদিয়াও একটি স্কুলে আশ্রয় নেন।
সেখান থেকে তাদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় সিরিয়ায়৷ তার চোখের সামনে মেরে ফেলা হয় তার পুরো পরিবারকে৷ এর পরে শুরু হয় তার বন্দিজীবন। শুরু হয় গণধর্ষণ। তিন মাসেরও বেশি সময় বন্দি ছিলেন নাদিয়া। এই সময়ে তিনি বার বার পালাতে চেয়েছেন৷ কিন্তু ধরা পরার পরে আরও বেড়ে গেছে অত্যাচার৷ আবিদের হাত ধরে সেখান থেকেই পালিয়ে আসা নাদিয়ার৷ শুরু এক সুস্থ জীবনের পথ চলা৷