নাসা দিচ্ছে পৃথিবীর দারোয়ানীর চাকরি ! মাইনে শুনে অজ্ঞান হয়ে যাবেন না তো ?

কলকাতা টাইমস :
চাই পৃথিবীর পরিত্রাতা! লোক খুঁজছে নাসা। দক্ষ, মেধাবী কর্মী। পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য। এমন এক জন যিনি ভিনগ্রহীদের হাওয়া-বাতাস থেকে রক্ষা করতে পারবেন আমাদের এই নীলাভ গ্রহটিকে। চাঁদ, মঙ্গল বা ব্রহ্মাণ্ডের অন্যত্র মানবসভ্যতার দ্বিতীয় উপনিবেশ গড়ে উঠলে তা যাতে বিষিয়ে না দেয় সেই মহাজাগতিক বস্তু বা মহাকাশকে, নাসা এমন এক জনকে খুঁজছে, যিনি নজর রাখতে পারবেন তার ওপরেও। নাসা ওই পোস্ট বা পদটির নাম দিয়েছে প্ল্যানেটারি প্রোটেকশন অফিসার। পৃথিবীর পরিত্রাতা!
তাঁকে কত মাইনে দেওয়া হবে, জানেন? ৬ অঙ্কের সংখ্যা। ১ লক্ষ ৮৭ হাজার মার্কিন ডলার বা ১ লক্ষ ৪১ হাজার পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় কত, জানেন? ১ কোটি ১৯ লক্ষ ১০ হাজার ৯৬৫ টাকা! ভাবতে পারছেন? ফুল টাইম চাকরি। প্রাথমিক ভাবে তিন বছরের জন্য। তবে কাজ ভাল করলে এক্সটেনশন পেতে অসুবিধা হবে না আরও দুই বছরের জন্য। সোজা কথায়, ঠিক ভাবে কাজ করতে পারলে মাসে সওয়া কোটি টাকা রোজগার করা যাবে, টানা ৫ বছর!
কী কী যোগ্যতা লাগবে নাসার ওই পদে চাকরি পাওয়ার জন্য?
নাসার তরফে জানানো হয়েছে, চাকরি প্রার্থীকে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে যে কোনও সময় দৌড়োদৌড়ির জন্য তৈরি থাকতে হবে। তৈরি থাকতে হবে দিনে হাজার হাজার ই-মেল পাওয়ার জন্য। কোনও অসামরিক সরকারি প্রশাসনের শীর্ষ পদে অন্তত এক বছর কাজ করার অভিজ্ঞাতা থাকতে হবে চাকরি প্রার্থীর। তা ছাড়া পদার্থবিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি তো তাঁর থাকতেই হবে। গ্রহের সুরক্ষা, নিরাপত্তা নিয়েও পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকতে হবে চাকরি প্রার্থীর। অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতি সামলানোর জন্য প্রার্থীর কূটনৈতিক দক্ষতাও কাম্য।
আজ থেকে ৫০ বছর আগে ১৯৬৭ সালে আউটার স্পেস ট্রিটি (ওএসটি)-তে সই করেছিল আমেরিকা। তখনই রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে বলা হয়, ওই চুক্তিতে যারা সই করছে, সেই দেশগুলিকে মহাকাশের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে। দেশগুলি মহাকাশকে দূষিত করবে না, এই অঙ্গীকার করতে হবে। আর তা সুনিশ্চিত করতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলিকে প্ল্যানেটারি প্রোটেকশন অফিসার নিয়োগ করতে হবে। এই ধরনের ফুল টাইম চাকরির আর একটি পদই রয়েছে গোটা বিশ্বে। সেটা ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি বা ইএসএ বা এসার।
নাসার প্ল্যানেটারি প্রোটেকশন অফিসার (পিপিও) ক্যাথরিন কোনলের কথায়, যে মহাকাশযানগুলিকে পাঠানো হয়েছে, হচ্ছে বা আগামী দিনে পাঠানো হবে, সেগুলি থেকে মহাকাশে দূষণের সম্ভাবনা থাকে ১৬ হাজার ঘটনার মধ্যে একটি। সেটাও যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করাটাই আমাদের কাজ। খুব কঠিনও নয়। আবার খুব যে একটা সহজ কাজ, তাও বলা যাবে না। ২০১৪ সাল থেকে ক্যাথরিনই ছিলেন নাসার পিপিও।
কয়েক দশকের মধ্যেই কৃত্রিম ভাবে তরল জলে ভরিয়ে দেওয়া হবে লাল গ্রহ মঙ্গলকে। তা করতে গিয়ে যাতে মঙ্গলকে কোনও দূষণের শিকার না হতে হয়, সেটার ওপর নজর রাখতে হবে এ বার নাসার নতুন পিপিওকে। খুব শীঘ্রই বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপায় মহাকাশযান পাঠাবে নাসা। ফলে, দূষণের সম্ভাবনা থাকবে বৃহস্পতির ওই চাঁদেও। সেটাও যাতে না হয়, তার ওপর লক্ষ্য রাখতে হবে নাসার নতুন পিপিওকে। তবে ওই চাকরি পেতে গেলে প্রার্থীকে হতেই হবে মার্কিন নাগরিক। তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য অন্য কোনও দেশের নাগরিকদের ওই চাকরির সুযোগ দিতে পারবে না বলে নাসার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।