জুসারে এগুলি দিলে আর রক্ষে নেই …
কলকাতা টাইমস :
ফলের হোক বা সবজির, জুস সবসময়ই উপাদেয় এবং স্বাস্থ্যকর একটি পানীয়। তবে সব ফল বা সবজির জুস তৈরি করা উচিত নয়। জুসার মেশিন কিংবা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনিরাপদ, এমন কিছু ফল এবং সবজির জুস নিয়ে এ প্রতিবেদন।
আস্ত আপেল : আপনি আপেলের জুস বানিয়ে খেতেই পারেন। তবে জুস তৈরির আগে অবশ্যই আপেলের বীজগুলো বের করে নেবেন। ভার্বানোভা বলেন, ‘আপেলের বীজে অ্যামিগডালিন নামক একপ্রকার রাসায়নিক উপাদান থাকে যা পেটে গিয়ে হজম হলে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে।’ আপেলের বীজ থেকে সাবধান থাকুন।
নারকেল : জুস বা স্মুথিতে নারকেলের দুধ বা নারকেলের পানি মিশিয়ে আপনি সেটার স্বাদ বাড়িয়ে নিতেই পারেন। কিন্তু এটির ক্ষেত্রে কোড়ানো নারকেল জুসারে দিতে যাবেন না। কেননা জুস তৈরি হওয়ার মতো উপাদান এতে নেই। দোকান থেকে নারকেল দুধ বা নারকেলের পানি কিনে ব্যবহার করতে পারেন।
ব্রোকলি : অবিশ্বাস্য বলে মনে হলেও অনেকেই বাড়িতে ব্রোকলির জুস তৈরি করার চেষ্টা করে থাকেন। কেননা ব্রোকলি তুলনামূলকভাবে প্রচুর ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এবং এটার পুষ্টি অনেকেই সবুজ জুস হিসেবে সরাসরি গ্রহণ করতে চান। তবে ব্রোকলি জুস হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। কুলিনারি নিউট্রিশনিস্ট নেডা ভার্বানোভা বলেন, ‘ব্রোকলি জুস হিসেবে গ্রহণ করলে হজমে সমস্যা, পেট ফাঁপা, অম্বল অথবা খিঁচুনির মতো সমস্যা হতে পারে।
ব্রোকোলি জুস হিসেবে ভালো নয়। তাছাড়া আগে থেকে পেটের কোনো সমস্যা থাকলে ব্রোকলির জুস থেকে দূরে থাকুন।’ একই কারণে এ জাতীয় অন্যান্য সবজি যেমন ফুলকপি এবং বাঁধাকপি জুস হিসেবে উপযোগী নয়।
অ্যাভোকাডো : অ্যাভোকাডোর মধ্যে নরম ক্রিমের মতো উপাদান থাকে। পিওর সিনার্জির এডুকেশন ডিরেক্টর চান্টে ওয়াইগান্ড বলেন, ‘অ্যাভোকাডোতে রসের পরিমাণ অনেক কম থাকে। তাই ফলটি জুসারে না দিয়ে ব্লেন্ডারে দিতে পারেন।’
পাতাকপি অথবা শাক : গাঢ় সবুজ শাক যেমন পুঁইশাক, পালংশাক এবং বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি থাকে। কিন্তু এগুলো জুসারে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন, বিশেষ করে যদি আপনি কিডনি পাথর প্রবণ হোন। ওয়াইগান্ড বলেন, ‘গাঢ় সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে অক্সালেট নামক উপাদান থাকে, যার ফলে কিছু মানুষের কিডনীতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।’
নাশপাতি : নাশপাতির জুস সকলের উপেক্ষা করা উচিত নয়। কিন্তু আপনি যদি ফ্রুক্টোজ সংবেদনশীল হয়ে থাকেন, তাহলে এটির জুস উপেক্ষা করতে পারেন। ভার্বানোভা বলেন, ‘নাশপাতিতে সরবিটল নামক প্রকার চিনি থাকে যা হজম না হওয়ায় দ্রুত মল ত্যাগের চাপ বাড়াতে পারে। এ কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেকে নাশপাতির জুস খেয়ে থাকেন।’
আনারস : আনারসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এবং ফাইবার থাকে, আস্ত ফল হিসেবে গ্রহণ করলে আনারসের এসকল গুণাগুণ পাওয়া যায়। কিন্তু জুস তৈরি করে ফেললে আনারসে একমাত্র চিনি ছাড়া কিছুই থাকে না, যা রক্তে চিনি এবং ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
লেবুজাতীয় ফলের খোসা : কমলা, লেবু, জাম্বুরা, মাল্টার জুস তৈরির সময় অবশ্যই খোসা ছাড়িয়ে নিন। কেননা এসব ফলের খোসায় হজমজনীত সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাছাড়া এসব ফলের খোসায় জুস তৈরির মতো কোনো উপাদান থাকেনা।
কলা :কলা স্মুথি হওয়ায় এটি দিয়ে জুস তৈরির চেষ্টা করলে আপনার সময়টা নষ্ট হবে। কলার স্বাদ যদি আপনার খুব পছন্দের হয়ে থাকে তাহলে অন্য ফলের জুসের সঙ্গে কলা ব্লেন্ডারে দিন এবং স্মুথি হিসেবে উপভোগ করুন।
বরফ : জুস তৈরির মেশিনে অর্থাৎ জুসারে বরফ দিলে আপনার মেশিনটি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বরফ জুসারের চেয়ে ব্লেন্ডারে দেওয়া নিরাপদ।