মুখ খোলার মাসুলেই গায়েব জ্যাক মা?
কলকাতা টাইমস :
তাদের মধ্যে বেশউইভাগ মানুষই ফায়ার আসেনি। তারা সকলেই চীন সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। সেই লিস্টে নব সংযোজন ছিলেন চীনা শিল্পপতি ও ই-কমার্স সংস্থা আলিবাবা-র কর্ণধার জ্যাক মা। গত দুমাস ধরে নিখোঁজ তিনিও। একাধিক বিষয় নিয়ে টুইট করতেন তিনি। কিন্তু সেই সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই প্রায় দু’মাস ‘উধাও’। শেষ টুইট গত বছরের অক্টোবরে। তিনি কোথায়, জানাতে পারছে না দেশ-বিদেশের তাবড় সংবাদমাধ্যমও।
বিষয়টি প্রথম নজরে আসে, যখন একটি টিভি শোয়ের বিচারক পদ থেকে মা’কে সরিয়ে অন্য আর এক বিচারককে আনা হয়। অনুষ্ঠানটি চূড়ান্ত পর্বের কোনও প্রচারেও দেখা যাচ্ছিল না মা’কে।
এর কিছু দিন আগেই চীন সরকার ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক পরিষেবার সমালোচনা করে খবরের শিরোনামে এসেছিলেন জ্যাক মা। দু’মাস আগে শাংহাইয়ের ওই অনুষ্ঠানে শি জিন পিং সরকারের নিন্দা করায় তার উপরে খোদ চীনা প্রেসিডেন্ট রুষ্ট ছিলেন বলেন দাবি বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের। আসলে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রভাবশালী নেতা জ্যাক মার সঙ্গে জিন পিংয়ের দ্বন্দ্ব কারও অজানা নয়। জিন পিং-কে পার্টির সর্বোচ্চ নেতা বলে দেখানো হলেও দলেরই একাংশের মধ্যে তার বিরুদ্ধে ওঠা ক্ষোভ লুকিয়ে রাখা যাচ্ছিল না বেশ কিছু দিন ধরেই। জ্যাক মা’ এর নিখোঁজ রহস্য সেই জল্পনাই আরও উস্কে দিয়েছে।চীনের সবচেয়ে বিত্তশালী তো বটেই, গোটা বিশ্বের ২৫ জন ধনীর মধ্যে তিনি অন্যতম। মোট সম্পত্তির পরিমাণ পাঁচ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। কিন্তু চীনা সরকারের সমালোচনা করতে পিছপা হতেন না তিন সন্তানের বাবা জ্যাক মা। শাংহাইয়ের ঘটনার পরে মা’র আর এক সংস্থা অ্যান্ট-কে আর্থিক নজরদারি সংস্থার কোপে পড়তে হয় বলেও খবর। এবং তার ঠিক পরেই চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তালিকা থেকে সরে যায় তার নাম। চীন-আমেরিকা দ্বন্দ্বের পরিস্থিতিতেও নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে কমপক্ষে দু’হাজার ভেন্টিলেটর দান করে স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন মা। বেইজিং সেটাও ভালো চোখে দেখেনি ।
১০ অক্টোবর শেষ টুইট করেছিলেন জ্যাক মা। আলিবাবার এক মুখপাত্রের দাবি, সময়ের অভাবে টিভি শোয়ের বিচারক পদ থেকে সরে এসেছিলেন মা। কিন্তু তার পরে কেন মা’কে দেখা যাচ্ছে না, সে প্রশ্নের কোনও উত্তর মেলেনি মা’ এর সংস্থা বা পরিবারের কাছ থেকে। তবে কি বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলার মাসুল দিতে হচ্ছে জ্যাক মা’কে? শি জিন পিং প্রশাসন এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে।