হত্যা নয়, তুতেনখামেনকে মারণ যন্ত্রনা দেন মা-বাবাই
কলকাতা টাইমস :
কোনো সবাই সত্যি জানে—এমন অনেক কথা পরে যাচাই করে দেখা গেছে সেগুলো মিথ্যা। তেমনই এক ভুল ধারণার শিকার ছিলেন মিসরের বালক রাজা তুতেনখামেন।
প্রায় ১০০ বছর ধরে নানা জল্পনা-কল্পনা। শেষে ২০১৪ সালে এসে গবেষকরা নিশ্চিত হয়েছেন, বালক রাজা তুত রোগে ভুগেই মারা গেছেন।
১৯২২ সালে ব্রিটিশ প্রত্নতাত্ত্বিক হাওয়ার্ড কার্টার মমিটি খুঁজে পেয়েছিলেন। মারা যাওয়ার সময় তুতের বয়স মাত্রই ১৮ ছিল (খ্রিস্টপূর্ব ১৩২৪ অব্দ)। কার্টার এত অল্প বয়সে রাজার মৃত্যুর কারণ জানতে চেয়েছিলেন। তিনি শবদেহ পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেও ফল কিছু পেলেন না। ৪০ বছর পর ১৯৬৮ সালে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মমিটি এক্স-রে করেন। তাঁরা মাথায় জমাট রক্তের (ব্লাড ক্লট) সন্ধান পান। ধারণা করেন তুতের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল।
গবেষকরা এবার কেন তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল—এ বিষয়ক কারণ খুঁজতে লাগলেন। তুতের বাবা আখেনাতেন মিসরে একেশ্বরবাদী ধর্মের প্রসার ঘটিয়েছিলেন, যা ছিল মিসরীয় ঐতিহ্যের বিপরীত। তাই তাঁর শত্রু থাকা স্বাভাবিক। বাবার শত্রু আঘাত হেনেছিল পুত্রের ওপর। তুত সিংহাসনে বসেছিলেন খুব অল্প বয়সে। তাই তাঁকে পর্যুদস্ত করা কঠিন ছিল না। কেউ কেউ অবশ্য ধারণা করলেন তুত হয়তো ঘোড়ার গাড়ি থেকে পড়ে গিয়ে থাকবেন।
কিন্তু প্রখ্যাত মিসরবিদদের বেশির ভাগই হত্যা প্রসঙ্গে যেতে চাইছিলেন না। একজন যেমন জাহি হাওয়াস। ২০০৫ সালে জানালেন, ম্যালারিয়ায় ভুগে মারা গেছেন তুত। কিন্তু আরো গবেষকরা বললেন, ম্যালেরিয়ায় মারা যাওয়ার বয়স পেরিয়ে এসেছিলেন তুত। তবে হাওয়াসের কথা ভাবনার নতুন পথ খুলে দিল (অন্তত হত্যা ভাবনা থেকে সরে আসার পথ খুলল।)
২০১০ সালের দিকে জার্মান গবেষকরা যেমন বললেন, তুতের রক্তে লোহিত কণিকার মারাত্মক ঘাটতি ছিল। আর তিনি তা পেয়ে থাকতে পারেন তাঁর মা-বাবার কাছ থেকে, যেহেতু মিসরে অন্তর্বিবাহ (ভাই-বোন) সংঘটিত হতো। শেষে ২০১৪ সালে এসে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গবেষকরা একমত হন, রোগে ভুগেই মারা গেছেন তুত। আর রোগ তিনি পেয়েছিলেন জন্মসূত্রেই।