অ্যান্টিবায়োটিক লাগবে না, এভাবেই সেরে যাবে ব্রঙ্কাইটিস
কলকাতা টাইমস :
ব্রঙ্কাইটিস কী? সহজ কথায় ব্রঙ্কাইনাল টিউবের দেওয়ালে প্রদাহ হওয়াকেই চিকিৎসা পরিভাষায় ব্রঙ্কাইটিস বলা হয়ে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত হলে কাশি, থকথকে কফ ওঠাসহ আরও নানা ধরনের লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে। ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হলে যত শিগগিরই সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা উচিৎ। আর যদি অ্যাকিউট ব্রঙ্কাইটিস হয়, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। একটু সাবধানে থাকলে অল্প দিনেই রোগ সারতে শুরু করে। এক্ষেত্রে রোগের প্রকোপ অনুযায়ী কাশি, ক্লান্তি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট, বুকে অস্বস্তি এবং কফ ওঠার মতো লক্ষণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে থাকে।
ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার পর ধূমপান ছেড়ে দিতে হবে। নাহলে কিন্তু বিপদ। একাধিক ঘটনা থেকে দেখা গেছে এই রোগে ভোগাকালীন কেউ যদি ধূমপান করতে থাকে তাহলে আরো জটিল আকার নেয়। শুধু তাই নয় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা থাকলেও এই রোগ সহজে সারতে চায় না। এই বিষয়গুলির দিকে খেয়াল রাখাটাও খুব জরুরি। ব্রঙ্কাইটিস রোগকে দূর করতে প্রথমেই যে কাজটা করতে হয়, তা হল কফ ওঠাকে সারিয়ে তুলতে হয়। আর একবার বুকে কফ জমা বন্ধ হয়ে গেলে ধীরে ধীরে রোগও সারতে শুরু করে দেয়। এখন এমন কিছু পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচন করা হল, যা কফের সমস্যাকে সারিয়ে তুলতে দারুন কাজে আসে।
- এক কাপ গরম দুধে এক চামচ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে দিনে তিনবার পান করুন। হলুদের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান বুকে কফ জমা এবং প্রদাহ কমিয়ে দেবে। সাবধানতা: আপনি যদি আলসার, অ্যাসিডিটি, গলব্লাডার স্টোন অথবা জন্ডিসে ভোগেন তাহলে একেবারেই এই পানি খাবেন না।
- গরম জল পরিপূর্ণ বাথটবে ঢেলে এক গ্লাস লবন মেশান। যতক্ষণ লবন জলে ভালো করে মিশে না যাছে, ততক্ষণ অপেক্ষা করুন। তারপর সেই জলে কম করে ৩০ মিনিট শুয়ে থাকুন। সপ্তাহে দুবার এমন করলে দেখবেন রোগ অনেকটাই কমে যাবে।
- সকালের নাস্তার আগে এক চামচ পেঁয়াজের রস প্রতিদিন পান করুন। দেখবেন অল্প দিনেই বুকে কফ জমা কমে যাচ্ছে। আসলে পিঁয়াজে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা বুকে মিউকাস জমার পথকে আটকে দিতে পারে। তাই তো ব্রঙ্কাইটিস সারাতে ভরসা রাখা যেতেই পারে এই পদ্ধতিটির উপর।
- গরম জলে পরিমাণ মতো ইউকেলিপটাস তেল মেশান। এবার মাথাটা ঢেকে সেই পানির ভাপ নিন। এই স্টিম থেরাপিটা নিলে রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কারণ এই তেলটি হল অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রণালীকে খুলে দিয়ে শ্বাস কষ্ট কমিয়ে ফেলতে এটির কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে।
- রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধে তিনটি রসুনের কোয়া ফেলে পান করুন। রসুন হল এক ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক, সেই সঙ্গে এতে রয়েছে অ্যান্টিভাইরাল প্রপাটিজ। তাই ব্রঙ্কাইটিস সারাতে এই ঘরোয়া বিধানটি দারুণ কাজে আসে।
- এক কাপ গরম জলে এক চামচ মধু এবং দু’চামচ লেবুর রস মিশিয়ে রোজ সকালে পান করুন। দেখবেন বুকের অস্বস্তি এবং প্রদাহ, দুইই কমে যাবে।
- পরিমাণ মতো আদা বাটার সঙ্গে দু টুকরা দারুচিনি মিশিয়ে এক গ্লাস গরমে পানিতে দিয়ে একটা মিশ্রন তৈরি করুন। সপ্তাহে ৩-৪ দিন সকালে এই পানীয়টি খেলে দেখবেন আপনি অনেকটাই সুস্থ বোধ করবেন। আদা ব্রঙ্কাইনাল টিউবের দেওয়ালে যে প্রদাহ সৃষ্টি হয় তা কমাতে সাহায্য করে।