November 22, 2024     Select Language
Editor Choice Bengali KT Popular রোজনামচা

‘শখ করে কেউ রাস্তায় ভিক্ষা করে না, তাই ভিক্ষা কখনো ফৌজদারি অপরাধ হতে পারেনা’ -দিল্লি হাইকোর্ট

[kodex_post_like_buttons]

কলকাতা টাইমসঃ

দিল্লি হাইকোর্ট এক রায়ে বলেছে, ভিক্ষাবৃত্তি অপরাধ নয়। গরিব ও নিরাশ্রয় মানুষদের ভয় দেখানো বা তাঁদের আটক রাখার বিরুদ্ধে যাঁরা সরব হয়েছিলেন, এটা তাঁদের জয় বলেই মনে করা হচ্ছে।

শখ করে কেউ রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে বেড়ায় না। সহায়-সম্বলহীন অতি গরিবরা ভিক্ষা করতে বাধ্য হয় পেটের দায়ে। আসল কারণ দারিদ্র্য। বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তল এবং বিচারপতি হরি শংকর ২৩ পাতার রায়ে বলেছেন, ভিক্ষাবৃত্তিকে ফৌজদারি অপরাধের তকমা দেওয়া অন্যায়। কেন তাঁরা ভিক্ষা করতে বাধ্য হয়, তার আসল কারণ দূর না করে সবথেকে গরিব মানুষগুলোকে হাজতে আটকে রাখলে বা হয়রানি করলে, সেটা হবে তাঁদের মৌলিক মানবাধিকার এবং সাংবিধানিক অধিকার লংঘন করা।

যদি ভিক্ষাবৃত্তি নির্মূল করতে হয়, তাহলে তা কৃত্রিমভাবে করা যায় না। কেন তাঁরা রুজি-রোজগার, শিক্ষা বা সামাজিক নিরাপত্তা থেকে বঞ্চিত, সেটা দেখতে হবে। তার দায়িত্ব বর্তায় সরকারর উপর। জেলে বা হোমে আটকে রাখাটা সমাধান নয়। যাঁদের আটক রাখা হয়েছে অবিলম্বে তাঁদের মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তবে আদালত একথাও বলে, সংগঠিতভাবে যেসব শিশু পাচারকারী বাচ্চাদের দিয়ে ভিক্ষা করায় এবং দিনের শেষে সেইসব টাকা-পয়সা আত্মসাত করে, তাঁদের অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য। এমনকি, মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে ড্রাগ খাইয়ে শিশুদের অঙ্গ বিকৃতি পর্যন্ত করা হয়। এইসব সমাজবিরোধীদের জেলে পোরা আগে দরকার।

বহু আগে থেকেই মুম্বাই ভিক্ষাবৃত্তি নিবারক আইন (১৯৫৯) বলে একটি আইন রয়েছে। এই আইনে তথাকথিত ভিখারিদের তিন থেকে দশ বছর পর্যন্ত ভবঘুরে আবাসে আটক রাখা যায়। ভারতের ২০টি রাজ্য এবং দুটি কেন্দ্র শাসিত রাজ্য এই আইনই মেনে চলছে। তার মধ্যে আছে রাজধানী দিল্লিও। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ৪৬ হাজার ৭২৪ জন নিরাশ্রয় পরিবার থাকে দিল্লিতে। মানবাধিকার সংগঠনগুলির হিসেব অনুযায়ী সংখ্যাটা তিন গুণ বেশি। হোমে জায়গা না থাকায় হাজার হাজার নিরাশ্রয় পরিবার থাকে ফুটপাতে, ফ্লাইওভারের নীচে কিংবা গাছতলায়। ফলে পুলিশের হাতে নির্যাতনের সহজ শিকার হয় তারা।

ভিক্ষাবৃত্তির রীতি কম-বেশি সব দেশেই আছে। হিন্দু, খ্রিষ্টান, জৈন, বৌদ্ধ সব ধর্মেই আছে।ভিক্ষাবৃত্তিভারতে বহুকাল ধরে চলে আসছে। যা বর্তমানে সামাজিক কাঠামোর অঙ্গ হয়ে গেছে। ধর্মস্থানে ভিক্ষাদান পূণ্যের কাজ বলে মনে করা হয়। হিন্দুধর্মে বলা হয়, ভিক্ষা, ইসলামে বলা হয় জাকাত, খৃশ্চান ধর্মে চ্যারিটি। ঈশ্বরের নামে দান গ্রহণ ভিক্ষার মধ্যে পড়ে না, এমনটাই অনেক সাধু সন্ন্যাসী বিশ্বাস করেন। স্বয়ং গৌতম বুদ্ধ ভিক্ষা নিয়েই ক্ষুধা নিবৃত্তি করতেন, এমনটাই বলা হয়।

 

Related Posts

Leave a Reply