কোনো রাস্তাতেই নেই ট্রাফিক সিগনাল, তবুও হয় না যানজট
বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই আছে ট্রাফিক সিগনালের ব্যবস্থা। রাস্তায় যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে ট্র্যাফিক সিগনালের সাহায্য নেওয়া হয়। ট্রাফিক সিগনালের সঠিক সংকেতের ফলে যানজটের সমস্যা এড়ানো যায়। আবার কোনো কারণে ট্রাফিক লাইট নষ্ট হয়ে গেলে যানজট বা দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।
তবে জানলে অবাক হবেন, এমন একটি দেশ আছে যেখানে নেই কোনো ট্রাফিক সিগনালের ব্যবস্থা। তবুও সেখানকার রাস্তায় নেই যানজট। আর সেই দেশ হলো ভুটান। সেখানকার ট্র্যাফিক নিয়ম যেমন কঠোর, তেমনই সচেতন সেখানকার নাগরিকরা।
সে দেশের ট্রাফিক পুলিশরাই গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করেন। তাই ট্র্যাফিক পুলিশের নির্দেশ বা জেবরা ক্রসিং এলে গাড়ি নিজ থেকেই থামিয়ে দেবেন গাড়ির চালক।
ভুটান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় হিমালয়ের কোলে অবস্থিত একটি সুন্দর দেশ। রাষ্ট্রপুঞ্জের সমীক্ষা অনুযায়ী, ভুটান বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ। দূষণ হোক মহামারি ভুটান কাউকেই তার কাছে ঘেঁষতে দেয় না।
ভুটানে শিল্প ও যানবাহনের সংখ্যা খুবই কম, যে কারণে কার্বন নির্গমণের পরিমাণও এখানে খুব কম। ভুটানে যত কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয় তার চেয়ে বেশি অক্সিজেন এখানে নির্গত হয়।
ভুটানের রাস্তায় ট্রাফিক সিগনাল না বসানোর অবশ্য কয়েকটি কারণ আছে। প্রথমত পরিবেশ সুরক্ষার কারণে এখানে যানবাহনের সংখ্যা সীমিত রাখা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এখানে রাস্তার নেটওয়ার্ক এমনভাবে প্রসারণ করা হয়েছে যে যাত্রী বা গাড়ির চালককে কোনো মোড়ে থামতে হবে না।
ভুটানে মানুষ ও পশুপাখির মধ্যে আছে অগাধ ভালোবাসা। সেখানকার রাস্তায় পশুদের নিশ্চিন্তে হেঁটে বেড়াতে দেখবেন। গরু, মহিষ, ছাগলের পাল এদেশের রাস্তায় অবাধে বিচরণ করে। আর এই কারণেও যানবাহনের গতি কম রাখতে হয়।
প্রতিটি মোড়ে ও প্রধান সড়কে ট্র্যাফিক পুলিশ থাকে। তারাই ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করে। জেবরা ক্রসিং এলে গাড়ি আপনা থেকেই থামিয়ে দেবেন গাড়ির চালক। জেবরা ক্রসিং দিয়ে নিশ্চিন্তে রাস্তা পারাপার করবেন পথচারী।
গাড়ি ওভারটেকের কোনো বাসনাও নেই কারো মনে। চলন্ত গাড়িকে হাত দেখিয়ে রাস্তা পারাপারের বদ অভ্যাসও নেই ভুটানবাসীর। সেখানকার মানুষরা এতোটাই নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলেন যে, ট্রাফিক জ্যামেও পড়তে হয় না তাদের।